Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কাশ্মীরে উঠে গেল রামায়ণ ও গীতা রাখার ফরমান

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৪ অক্টোবর, ২০১৮, ৬:৫৪ পিএম

বিতর্কের মুখে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও গ্রন্থাগারে গীতা-রামায়ণ রাখার নির্দেশ প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হল জম্মু-কাশ্মীরের প্রশাসন। রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকের উপদেষ্টা বি বি ব্যাসের সভাপতিত্বে এক বৈঠকের পরে রাজ্যের শিক্ষা দফতর মঙ্গলবার ওই নির্দেশ জারি করেছিল। বলা হয়েছিল, জম্মু-কাশ্মীরের সব স্কুল-কলেজে ও সরকারি গ্রন্থাগারে ভাগবৎ গীতা ও রামায়ণের উর্দু ও কাশ্মীরি অনুবাদ রাখতে হবে।
এতে সমালোচনার ঝড় ওঠে বিভিন্ন মহলে। বিজেপি বাদে অন্যান্য রাজনৈতিক দল সরব হয় ওই ফরমানের বিরুদ্ধে। ন্যাশনাল কনফারেন্স সভাপতি তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা প্রশ্ন তোলেন, “শুধু কেন গীতা-রামায়ণ? স্কুল-কলেজে বা সরকারি পাঠাগারে ধর্মপুস্তক রাখা উচিত বা প্রয়োজনীয় কি না তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। তবে রাখতেই যদি হয়, তবে বেছে বেছে কেন তা করা হচ্ছে? কেন অন্যান্য ধর্মকে উপেক্ষা করা হচ্ছে?”
মানবাধিকার কর্মী রাজা মুজাফ্ফর বলেন, “কাশ্মীরি মুসলিম ছাত্রদের এখন গীতা-রামায়ণ পড়তে হবে। কিন্তু কোরানের কোনও উল্লেখ নেই। কেন এই ধর্মীয় বিভাজন? উপত্যকার সংখ্যাগরিষ্ঠ পড়ুয়া মুসলিম হলেও স্থানীয় সরকার অতীতে কখনও সংখ্যালঘুদের কোরান পড়া বাধ্যতামূলক করেনি বা চাপিয়ে দেয়নি। আমরা এই কুৎসিত চক্রান্ত রুখবই।”
সোশ্যাল মিডিয়াতেও দ্রুত ছড়াতে থাকে প্রতিবাদ। এর মধ্যেই বুধবার এক সরকারি মুখপাত্র জানান, মুখ্যসচিব বিভিআর সুব্রহ্মণ্যম শিক্ষা দফতরের ওই নির্দেশ কার্যকর হওয়ার আগেই বাতিল করে দিয়েছেন।
প্রশ্নের মুখে রাজ্যপালের নিরপেক্ষতাও। মেহবুবা মুফতির সরকার থেকে বিজেপি সরে দাঁড়ানোর পরে রাজ্যে এখন রাষ্ট্রপতির শাসন। অর্থাৎ রাজ্যপালের মাধ্যমে প্রশাসন চালাচ্ছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। রাজ্যপাল হিসেবে সত্যপালের নিয়োগের সময়েই তার বিজেপি-ঘনিষ্ঠতা নিয়ে কম চর্চা হয়নি। ফের শুরু হয়েছে তা। বিজেপি-আরএসএস এখন লোকসভা ভোটের মুখে হিন্দুত্ব ও রাম মন্দির নিয়ে হাওয়া তুলে মেরুকরণে নেমেছে। কাশ্মীরে ‘গীতা-রামায়ণ চাপিয়ে দেওয়া’র এই চেষ্টাকে তারই অঙ্গ বলে মনে করছে বিরোধীরা। নির্দেশটি প্রত্যাহার করা হলেও, গোটা ঘটনাটিকে জম্মু-কাশ্মীরে হিন্দুত্বের গভীরতা মাপার চেষ্টা বলেও মনে করছেন অনেকে। সূত্র: টিওআই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কাশ্মীর


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ