Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বরিশাল বিমান বন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ এয়ারলাইন্স অপারেটরদের

প্রকাশের সময় : ২৯ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নাছিম উল আলম : দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র বিমানবন্দরটির নিরাপত্তার পাশাপাশি উন্নয়নের বিষয়টিও এখনো উপেক্ষিত। ১৯৯৫ সালের ৩ ডিসেম্বর প্রায় ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বরিশাল বিমানবন্দর চালু হবার পরে গত ২১বছরেও এখানে রানওয়ে লাইটিং-এর কাজটি হয়নি। ফলে সূর্য ডুবির অনেক আগেই বরিশাল বিমান বন্দরের কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে যায়। বিকেলের দিকে কোন ফ্লাইট বিলম্বিত হলে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। অনেক সময়ই পাইলটরা চরম ঝুঁকি নিয়ে এয়ারপোর্টের রানওয়ে থেকে ফ্লাইট টেক অফ করাতেও বাধ্য হন। এখনো বরিশাল বিমানবন্দরকে সীমানা প্রাচীর দিয়ে ঘেরার কাজ শেষ হয়নি। তবে কাজ চলছে। ফলে বিমান বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে সরকারি- বেসরকারি এয়ারলাইন্স অপারেটেরদের মধ্যে। গত কয়েক বছর ধরেই এ বিমান বন্দরের রানওয়ে লাইটিংসহ উনয়নমূলক কাজের কথা রাজনৈতিক নেতাদের মুখে শোনা গেলেও বাস্তবে তার কোন দেখা নেই। গতকাল পর্যন্ত বরিশাল বিমান বন্দর নিয়ে কোন ‘উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা-ডিপিপি’ তৈরির কথা বলতে পারেননি দায়িত্বশীল মহল। তবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও প্রধান প্রকৌশলী এ বিমানবন্দরটির সার্বিক অবস্থা সরেজমিনে দেখতে গতকাল বিকেলে বরিশালে পৌঁছেছেন। বিমানমন্ত্রীও আগামীকাল বরিশাল বিমানবন্দর পরিদর্শনের কথা রয়েছে।
অপরদিকে রাজনৈতিক নেতার কর্মীদের বিবেকহীন পদচারণায়ও এ বিমানবন্দরের নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে বিঘিœত হচ্ছে। প্রায়ই এরা বিমানবন্দরের ভিআইপি জোন থেকে এয়ারক্রাফটের দরজার কাছে পৌঁছে যাচ্ছে নেতৃবৃন্দকে স্বাগত ও বিদায় জানাতে। এসব বিষয়ে নিরাপত্তার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিলে ঐসব রাজনৈতিক কর্মীদের হুমকি-ধামকির কাছে আরো নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়ছেন বরিশাল বিমান বন্দরের নিরাপত্তা কর্মীরাও। সাধারণ যাত্রীদেরও উৎকন্ঠা বাড়ছে। একসময়ে শুণশান নিরব বরিশাল বিমান বন্দর দিয়ে এখন প্রতি সপ্তাহে সরকারিÑবেসরকারি ১১টি বিমান ওঠানামা করছে। কিন্তু কতিপয় রাজনৈতিক নেতা ও তাদের কর্মীবাহিনীর বেপরোয়া দাপটের কাছে অসহায়  বেসামরিক বিমান চলাচল কতৃপক্ষসহ বিভিন্ন এয়ারক্রাফটের ক্রু ও কেবিন ক্রুরা। দেড় শতাধিক একর জমির ওপর বরিশাল মহানগরী থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র এ বিমানবন্দর কর্মচঞ্চল হয়ে উঠলেও ‘অতি স্পর্ষকাতর’ এ স্থাপনাটিকে এখনো যথাযথ নিরাপত্তার চাঁদরে ঢাকা সম্ভব হয়নি। বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মী ছাড়াও আনসার এখানে কর্মরত থাকলেও বিশাল এলাকা নিয়ে এ বিমান বন্দরের নিরপত্তা নিশ্চিতকরণে সর্বাগ্রে সীমানা প্রাচীরসহ পর্যাপ্ত লাইটিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করাও জরুরি। বরিশাল বিমান বন্দরে বর্তমান ১শ’ ফুট প্রস্থ ছয় হাজার ফুট লম্বা রানওয়ে রয়েছে। এর বাইরে দু’প্রান্তে রয়েছে আরো ২শ’ ফুট করে ওভার রান। তবে বরিশাল বিমানবন্দরের কন্ট্রোল টাওয়ারে এখনো অত্যাধুনিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ সরঞ্জামসহ প্রয়াজনীয় অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন হয়নি। পাশাপাশি এখানের অগ্নিনির্বাপনসহ উদ্ধার কার্যক্রমও মান সম্পন্ন নয়।
পাশাপাশি বরিশাল বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবনটির সম্প্রসারণ প্রয়োজন বলে সাধারণ যাত্রীরা মনে করেন। এখানের কনকর্স হল থেকে বহির্গামী ও আগমনী লাউঞ্জ দুটি বর্তমান প্রেক্ষাপটে অনেক ছোট পরিসরে।
তবে বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ইতোপূর্বে বেশ কয়েকবারই বরিশাল বিমান বন্দরকে আধুনিক মান সম্পন্ন করে গড়ে তোলার কথা জানিয়েছেন। এ লক্ষ্যে প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরির কথাও জানিয়েছেন মন্ত্রী। বর্তমানে বরিশাল বিমান বন্দর থেকে বেসরকারি ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স সপ্তাহে ৪টি, নভোএয়ার ৪টি ও জাতীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ৩টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে। তবে নানা অজুহাতে বিমান-এর মঙ্গলবারের ফ্লাইট গত একমাস ধরে বন্ধ রাখা হয়েছে। এমনকি বেসরকারি দুটি এয়ারলাইন্স বরিশাল মহানগরী থেকে বিমান বন্দরে যাত্রীদের যাতায়তের ব্যবস্থা করলেও বিমান গত এক বছরেও তা করতে পারেনি। এমনকি খোদ বিমান মন্ত্রীর নির্দেশও এক্ষেত্রে কার্যকর হয়নি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বরিশাল বিমান বন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ এয়ারলাইন্স অপারেটরদের
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ