Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জনবল সঙ্কটে ওষুধ বিতরণ করেন মেকানিক

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) থেকে মোশাররফ হোসেন বুলু | প্রকাশের সময় : ৩০ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

জনবল সঙ্কটে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বহির্বিভাগে ফার্মাসিস্টের পরিবর্তে ওষুধ বিতরণ করেন জুনিয়র মেকানিক্স। প্রয়োজনীয় ডাক্তার না থাকায় কাক্সিক্ষত সেবা পাচ্ছে না রোগীরা। ছয় লক্ষাধিক জনগণ অধ্যুষিত এ উপজেলার গরিব নিরীহ রোগীরা হচ্ছেন ভোগান্তির শিকার। চিকিৎসক সঙ্কটে স্বাস্থ্যসেবা অনেকটাই ভেঙে পড়েছে। সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে বহির্বিভাগের রোগীরা। কারণ বহির্বিভাগে ফার্মাসিস্টের পরিবর্তে রোগীদের মাঝে ওষুধ বিতরণ করেন জুনিয়র মেকানিক্স আব্দুল মালেক। অথচ তিন বছরের ডিপ্লোমা ইন ফার্মেসি কোর্স সম্পন্ন করার পর ফার্মাসিস্ট পদে লোক নিয়োগ দেয়া হয়। ঝুঁকির কারণ হচ্ছে ওষুধ বিতরণে ভুল হলেই রোগীর অপচিকিৎসা দেয়া হবে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে ১৯ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও আছে মাত্র ছয়জন। জনসংখ্যা অনুযায়ী এক লাখ জনগণের জন্য চিকিৎসক একজন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। কিন্তু সেই অনুযায়ী জনবল নিয়োগ দেয়া হয়নি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে বর্তমানে আবাসিক মেডিক্যআল অফিসার, জুনিয়র কনসালটেন্ট গাইনি, জুনিয়র কনসালটেন্ট অ্যানেস্থেশিয়া, জুনিয়র কনসালটেন্ট মেডিসিন, ডেন্টাল সার্জন, সিনিয়র স্টাফ নার্স, উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার ও ফার্মাসিস্ট পদগুলো দীর্ঘদিন থেকে শূন্য রয়েছে। উপজেলার ১৫ ইউনিয়নে ১৫টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র থাকলেও সেখানেও অনেক পদ শূন্য রয়েছে। এ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে ছয়জন মেডিক্যাল অফিসার, আটজন সহকারী সার্জন, ১২ জন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার এবং ছয়জন ফার্মাসিস্টের পদ শূন্য রয়েছে। বামনডাঙ্গা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, এখানে মেডিক্যাল অফিসার ও উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার যোগদান করলেও চিকিৎসা দিচ্ছেন অফিস সহায়ক। অফিস সহায়ক আইনুল হক জানান, স্যারেরা কাজ করছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
প্রতিদিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অসংখ্য রোগীর আগমন ঘটলেও কাক্সিক্ষত সেবা না পেয়ে তারা বাইরের ক্লিনিকে চলে যাচ্ছেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বহির্বিভাগে ওষুধ বিতরণকারী জুনিয়র মেকানিক্স আব্দুল মালেক জানান, আমার কাজ এটা নয়। কিন্তু অফিস আমাকে এই কাজে নিয়োজিত করেছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. ইয়াকুব আলী মোড়ল জানান, প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় জুনিয়র মেকানিক্স দ্বারা ফার্মাসিস্টের কাজ করে নেয়া হচ্ছে। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল হলেও এখনো সে তুলনায় জনবল আসেনি। ফলে চিকিৎসা দেয়ার ইচ্ছা থাকলেও তা সম্ভব হচ্ছে না। তবে চাপের মধ্যে থেকেও ডাক্তাররা সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করছেন। এলাকাবাসীর দাবি, সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নজর দিয়ে সুন্দরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সব সমস্যার সমাধান করবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্বাস্থ্য


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ