Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভিযোগের শেষ নেই জেলার সোহেল রানার বিরুদ্ধে

চট্টগ্রাম ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ৩০ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার (বরখাস্ত) সোহেল রানা বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। বন্দিদের জিম্মি করে টাকা আদায়ের পাশাপাশি ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কর্মকর্তাদের মারধর করারও অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। এসব অপকর্মের জন্য মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকুরি পাওয়া এই কারা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তবে তিনি প্রতিবারই ক্ষমতাধরদের মাধ্যমে পার পেয়ে গেছেন। বিনিময়ে অবৈধ উপার্জনের বিরাট একটি অংশ এসব ক্ষমতাবানদের হাতে তুলে দিয়েছেন।

টাকা ও ফেনসিডিলসহ গ্রেফতার হওয়ার পর তার নানা অনিয়ম-দুর্নীতির কাহিনী বের হতে শুরু করেছে। মুখ খুলতে শুরু করেছেন তার হাতে নির্যাতিত কারারক্ষী থেকে শুরু করে কারা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও। শুক্রবার ভৈরব রেলওয়ে থানা-পুলিশ ৪৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা, ১২ বোতল ফেনসিডিল, স্ত্রী, শ্যালক ও নিজের নামে করা আড়াই কোটি টাকার এফডিআরের কাগজপত্র এবং এক কোটি ৩০ লাখ টাকার চেকসহ তাকে গ্রেফতার করে। তিনি ৫ দিনের ছুটিতে ‘বিজয় এক্সপ্রেস’ ট্রেনে চট্টগ্রাম থেকে ময়মনসিংহের বাড়ি যাচ্ছিলেন। তাকে ইতোমধ্যে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

এদিকে ধরা পড়ার পর চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে তার সহযোগীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বন্দিদের জিম্মি করে টাকা আদায়ে জড়িতদের রাখা হয়েছে নজরদারিতে। সাধারণ বন্দিদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। সোহেল রানা বিশ্বাসের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার পাশাপাশি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি গতকাল (সোমবার) পর্যন্ত চট্টগ্রাম না এলেও প্রাথমিক তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। কারা অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় ডিআইজি সগির মিয়ার নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের কমিটিকে আগামী ১২ নভেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বনিক দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, কমিটির সদস্যরা এখনো চট্টগ্রাম আসেননি। তবে প্রাথমিক তদন্ত শুরু হয়েছে। সোহেল রানা বিশ্বাসের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলারও তদন্ত চলছে বলে জানান তিনি।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্র জানায়, সোহেল রানা রাজনৈতিক নেতাদের মাধ্যমে তদবির করে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আসার পর বন্দিদের জিম্মি করে অর্থ আদায় শুরু করেন। থাকা-খাওয়া, সাক্ষাৎ, হাসপাতালে ভর্তিসহ সবকিছুতেই তাকে টাকা দিতে হতো। এ টাকার ভাগ যেত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পর্যন্ত। তাদের মাসোহারা দিয়ে বেপরোয়া আচরণ করতেন জেলার। গ্রেফতারের পর তার কাছ থেকে পাওয়া ৪৪ লাখ টাকা তিনি কর্তাদের উৎকোচ দিতে নিয়ে যাচ্ছিলেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে ধারণক্ষমতা এক হাজার ৮৫০ জনের হলেও প্রায় পাঁচ গুণের বেশি বন্দি রয়েছে। গত কয়েক মাস ধরে বন্দির সংখ্যা বাড়ছে। এ বন্দিদের নিয়ে রীতিমতো বাণিজ্য শুরু করেন জেলার। প্রাপ্ত সুবিধা না দিলে বন্দিদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিতেন সোহেল রানা এবং তার পছন্দের কর্মকর্তারা। তদন্ত শুরু হওয়ায় তারা এখন শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অভিযোগ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ