Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শিশু ৪১ নারী ৭৩ শতাংশ জিঙ্ক স্বল্পতায় ভুগছে

‘ইমপ্রুভিইং নিউট্রিশন থ্রু বায়োফরটিফাইড ক্রপ’ শীর্ষক সেমিনার

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

পাঁচ বছরের নিচে এমন বয়সী ৪১ শতাংশ শিশু এখনও জিঙ্ক স্বল্পতায় ভুগছে। আবার বিভিন্ন বয়সী ৭৩ শতাংশ নারীর রয়েছে জিঙ্ক স্বল্পতা। পাঁচ বছর বয়সী তিনজন শিশুর মধ্যে একজন খর্বাকৃতির। সার্বিকভাবে উচ্চমাত্রার অপুষ্টির ঝুকিতে এখন বাংলাদেশ। পুষ্টি নিরাপত্তাকে স্বাস্থ্যগত ইস্যু হিসেবে বিবেচনা না করে কৃষি উৎপাদন আর্থ-সামাজিক বৈশিষ্ট্যের ওপর নির্ভর করতে হবে। কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন করা সম্ভব। পুষ্টি নিরাপত্তায় বায়োফরটিফাইড শস্য হতে পারে অন্যতম বিকল্প।
গতকাল রাজধানীর বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা কাউন্সিলের (বিএআরসি) সম্মেলন কক্ষে হারভেস্টপ্লাস আয়োজিত ‘ইমপ্রুভিইং নিউট্রিশন থ্রু বায়োফরটিফাইড ক্রপ’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা। বিএআরসি’র নির্বাহি চেয়ারম্যান ড. মো. কবির ইকরামুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব (গবেষনা) ড. মো. আবদুর রউফ। সাবেক কৃষি সচিব আনোয়ার ফারুকের সঞ্চালনায় কর্মশালায় কৃষি গবেষনা ফাউন্ডেশনের (কেজিএফ) নির্বাহি পরিচালক ড. ওয়ায়েস কবীর, আন্তর্জাতিক ধান গবেষনা প্রতিষ্ঠানের (ইরি) কান্ট্রি ডিরেক্টর হোমনাথ ভান্ডারি, সাবেক কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. জয়নুল আবেদিন, বাংলাদেশ ধান গবেষনা প্রতিষ্ঠানের (ব্রি) গবেষনা পরিচালক ড. তমাল লতা আদিত্য উপস্থিত ছিলেন।
মূল প্রবন্ধে হারভেষ্ট প্লাসের গ্লোবাল গবেষণা পরিচালক ওলফ পিফেইফার বলেন, বিশ্বের ৩০ টি দেশে ১৯০ টি বায়োফরটিফাইড শস্যের জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। এর মধ্যে ধান, গম, ভুট্টা, মসুর, বিনস, কাসাভা, কমলা, সারগম অন্যতম। বাংলাদেশের উচ্চ মাত্রার অপুষ্টি বিদ্যমান থাকায় বিনিয়োগের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত। সারা বিশ্বে এখন ৮৫ লাখ পরিবার বায়োফরটিফাইড ক্রপ উৎপাদন করছে। আর ৪ কোটি মানুষ সরাসরি এ ধরনের শস্য গ্রহনের মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছে।
হারভেস্ট প্লাস বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার ড. মো. খায়রুল বাশার বলেন, বিভিন্ন গবেষনা প্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগে এ পর্যন্ত ১৬ টি বায়োফরটিফাইড ক্রপ জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। এর মধ্যে জিঙ্ক সমৃদ্ধ ধানের জাত ৮ টি, জিঙ্ক ও আয়রন সমৃদ্ধ মসুরের জাত ৩ টি, জিঙ্ক সমৃদ্ধ গমের জাত একটি এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ মিষ্টি আলুর জাত ৪ টি। প্রক্রিয়াগত ত্রু টির কারনে মিনিকেট নামের ধানের যে চালটি পাওয়া যাচ্ছে তাতে জিঙ্ক কম আছে।
তিনি বলেন, হারভেস্ট প্লাস প্রোগাম বাংলাদেশে জিঙ্কের ঘাটতি পূরণে ব্রি ও ইরির সহায়তায় আবিষ্কার করে জিঙ্ক ধান। প্রয়োজনীয় শক্তির ৮৪ শতাংশই আসছে ভাত থেকে। মোট জমির ৭০ শতাংশ জমিতে ধান চাষ হয়। সারা বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশেই প্রথম জিংক সমৃদ্ধ ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে। জিংক সমৃদ্ধ ধানে জিঙ্কের পরিমান বেশি থাকে। জিঙ্ক সহ অন্যান্য অপুষ্টির ঘাটতি পুরণে বিশ্বে ২০০২ সাল হতে কাজ করে যাচ্ছে হারভেস্টপ্লাস প্রোগ্র্রাম। হারভেস্ট প্লাস প্রোগ্রামটি ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ট্রপিক্যাল এগ্রিকালচার ও ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রির্সাচ ইনিস্টিটিউটের যৌথ প্রয়াসে পরিচালিত। যেটি ইন্টারন্যাশনাল কনসালটেটিভ গ্রুপ ফর এগ্রিকালচারাল রির্সাচ অন এগ্রিকালচারাল ফর নিউট্রিশন এন্ড হেলথ এর অংশ।
ড. মো. আবদুর রউফ বলেন, টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশের কৃষিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এজন্য উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর পাশাপাশি উচ্চ মূল্যের শস্য উৎপাদন, পরিবেশকে রক্ষা করে কৃষি উৎপাদনে নজর দেওয়া হয়েছে।
আনোয়ার ফারুক বলেন, দেশের পুষ্টি নিরাপত্তায় বায়োফরটিফাইড ক্রপের কোন বিকল্প নেই। তাই এটিকে উৎসাহিত করতে গেলে যেমন গবেষনায় বিনিয়োগ বাড়াতে হবে, তেমনি কৃষক পর্যায়ে আবাদের জন্য ৪ শতাংশ সুদে ঋণ দিতে হবে।
বাংলাদেশ কৃষি সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সাহানোয়ার সাইদ শাহীন বলেন, যেকোন শস্যের জাত জনপ্রিয় করতে কৃষকের স্বার্থকে সবার আগে গুরুত্ব দিতে হবে। বায়োফরটিফাইড ক্রপ দেশে বাণিজ্যিকভাবে আবাদের ক্ষেত্রে কতটুকু সফলতা এনে দিবে সে বিষয়ে গবেষনা জরুরী। পুষ্টি নিরাপত্তায় এসব শস্যের জাত প্রয়োজনীয় হলেও কৃষকের আর্থিক নিরাপত্তায় কতটুকু সহায়ক হবে সেটি বিবেচনায় নিয়ে সম্প্রসারণ করতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শিশু

৩ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ