Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বল এখন সরকারের কোর্টে

গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপের পর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০১ এএম

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা’সহ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ইস্যুতে ‘গণভবনে সংলাপ’ নিয়ে রাজনীতিতে এখন হাই ভোল্টেজ উত্তেজনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোট বনাম ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট উভয়েই কিছু দাবিতে নমনীয় হলেও ‘সঙ্কটের সুরাহা’ হয়নি। ক্ষমতাসীন দলের অনুগত বি. চৌধুরীর যুক্তফ্রন্ট ও এইচ এম এরশাদের সম্মিলিত জাতীয় জোট তফসিল ঘোষণার তাগাদা দিলেও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বাম গণতান্ত্রিক জোট ‘সংলাপে সঙ্কটের সুরাহা না হওয়া’ পর্যন্ত তফসিল ঘোষণা থেকে ইসিকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। এরই মধ্যে ইসি জানায়, আজ তফসিল ঘোষণা করা হবে। চরম উত্তেজনার মধ্যে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপ শেষে ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘সঙ্কট সমাধানে বল এখন সরকারের কোর্টে’। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে ডায়ালগ (সংলাপ) শেষ, তবে আলোচনা হতে পারে। সংবিধানের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই’। অন্যদিকে ঐক্যফ্রন্টের মুখপত্র বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এখনো আশা ছাড়েননি। বলেছেন, ‘সরকার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা রাখতে চাইলে এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাইলে ৭ দফা দাবি নিয়ে একটি সুচিন্তিত মতামত আসবে’। তবে ঢাকা থেকে রাজশাহী অভিমুখে লংমার্চের ঘোষণা দিয়ে হঠাৎ সন্ধ্যায় স্থগিত এবং এক ঘন্টা পর প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন স্থগিতের পিছনে কোনো ‘চমক’ রয়েছে কিনা সেটা দেখার জন্য জাতি অপেক্ষা করছে।
সবার দৃষ্টি গতকাল ছিল গণভবনের দিকে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ড. কামাল হোসেনের ঐক্যফ্রন্টের সংলাপে কী ফলাফল আসে তা শোনার জন্য মুখিয়ে ছিল জাতি। আন্তর্জাতিক মহলও সংলাপের রেজাল্ট শোনার জন্য ছিল উদগ্রীব। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সংলাপে ৪ দফা লিখিত প্রস্তাব দেয়। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন, সংসদ ভেঙে দেয়া ও পরবর্তী ৯০ দিনে নির্বাচন আয়োজন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং ১০ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ ও একজন প্রধান উপদেষ্টার সমন্বয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার গঠন। এই প্রস্তাব মানেনি ক্ষমতাসীন দল। দ্বিতীয় দফা সংলাপ শেষে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, সঙ্কট সমাধানে বল এখন সরকারের কোর্টে। ঐক্যফ্রন্ট সরকারকে প্রস্তাব দিয়েছে, আলোচনা হয়েছে। সামনে সীমিত পরিসরে আরও আলোচনার দাবি জানানো হয়েছে। এর আগে দিনের প্রথমার্ধে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী ও ১৪ দলের নেতাদের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা সংলাপ করেন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। তিন ঘণ্টা স্থায়ী ওই সংলাপে নেতৃত্ব দেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন।
ঐক্যফ্রন্টের প্রস্তাব : প্রধানমন্ত্রীর সাথে দ্বিতীয় সংলাপে নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা, নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেয়া, নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরিসহ বেশ কিছু প্রস্তাব দেয়া হয়। সংবিধানের ভেতরেই কিভাবে এসব সমস্যার সমাধান করা যায় সে বিষয়গুলোও ঐক্যফ্রন্ট প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরে।
নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেয়া : বিদ্যমান সাংবিধানিক বিধান ও প্রথার আলোকে ১২৩ (৩) (খ) অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী নভেম্বরের শেষে অথবা ডিসেম্বর মাসে প্রেসিডেন্টকে বর্তমান সংসদ ভেঙে দেয়ার পরামর্শ প্রদান করতে পারেন এবং সে অনুযায়ী সংসদ ভেঙে দেয়া সম্পূর্ণ সংবিধানসম্মত হবে। অনুচ্ছেদ ১২৩ (৩) (খ) অনুযায়ী সংসদ ভেঙে দেয়ার তারিখ থেকে পরবর্তী নব্বই দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করবে। সেক্ষেত্রে সংসদ ভেঙে দেয়ার তারিখ অনুযায়ী সংসদ নির্বাচন ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারির শেষে অথবা মার্চে অনুষ্ঠিত হতে পারে। বিভিন্ন দেশের সাংবিধানিক রীতি অনুসারে সংসদ ভেঙে দেয়া ও নির্বাচন অনুষ্ঠানের মধ্যে প্রায় ৪৫ দিন ব্যবধান থাকা বাঞ্ছনীয়।
নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন : নির্বাচন কমিশনের প্রধান হিসেবে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৮ (৬) অনুযায়ী প্রেসিডেন্টের কাছে পদত্যাগ করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে প্রেসিডেন্ট সিইসি পদে নতুন নিয়োগ দিতে পারেন। সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশনে নতুন সচিবও নিয়োগ করা প্রয়োজন।
লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড : বেগম খালেদা জিয়া ও অন্য রাজনৈতিক নেতাদের জামিনে মুক্তি, নির্বাচনকালীন সময়ে মামলা দায়ের না করা, জামিনের বিরোধিতা না করা, সভা-সমিতি, আলোচনা ও সংগঠনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, বাকস্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, চিঠিপত্র, টেলিফোন ও মোবাইলের কথাবার্তা ফাঁস রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া।
নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার : নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠনের জন্য ৬টি প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে ১. প্রেসিডেন্ট রাজনৈতিক দলসমূহের সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সহায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ করবেন। তবে শর্ত হচ্ছে- প্রেসিডেন্ট সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার যোগ্য এবং কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা এর অঙ্গসংগঠনের সদস্য কিংবা দল/অঙ্গসংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হবেন না এমন একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ করবেন। ২. একই রকম যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রেসিডেন্ট প্রধান উপদেষ্টার পরামর্শক্রমে ঐকমত্যের ভিত্তিতে ১০ জন উপদেষ্টা নিয়োগ করবেন। ৩. প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে এবং অপর ১০ জন উপদেষ্টা সমন্বয়ে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠিত হবে। ৪. নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টা সংবিধান প্রদত্ত প্রধানমন্ত্রীর পদমর্যাদা এবং পারিশ্রমিক ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন। উপদেষ্টারা মন্ত্রীর পদমর্যাদা এবং সংবিধান প্রদত্ত মন্ত্রীর পদমর্যাদা এবং পারিশ্রমিক ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন। ৫. প্রেসিডেন্টের উদ্দেশে নিজ হাতে লিখিত ও নিজের স্বাক্ষরযুক্ত পত্রের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বা যেকোনো উপদেষ্টা পদত্যাগ করতে পারবেন। ৬. নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার সংবিধানের ১২৩ (৩) (খ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জাতীয় সংসদ ভেঙে দেয়ার অনধিক ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করবে।
ড. কামাল হোসেন : সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেন বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সৃষ্ট সঙ্কট সমাধানে ‘বল এখন সরকারের কোর্টে’। আমরা সংলাপের মাধ্যমে দাবি-দাওয়া উত্থাপন করেছি। আমরা চেয়েছি শান্তিপূর্ণ উপায়ে দাবি আদায় করতে। আমাদের দাবি না মানলে এরপর দেশে যা হবে, যা ঘটবে তার দায়দায়িত্ব সরকারের। আমরা তো আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছি, করছি, করে যাবো। দেশে একটা স্থিতিশীল অবস্থা, একটা শান্তিপূর্ণ অবস্থার মধ্যে সবকিছু হোক এই চেষ্টা করছি। দায়িত্ব তো সরকারের। আজকের সংলাপে আমাদের ৭ দফা দাবি নিয়ে সীমিত পরিসরে আলোচনা অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করেছি। বলেছি, যে অল্প পরিসরে আরো আলোচনা করার ব্যাপারে ইচ্ছুক। সংলাপে সারাদেশে হাজার হাজার রাজনৈতিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে যেসব মিথ্যা ও গায়েবি মামলা করা হয়েছে সেগুলো প্রত্যাহার এবং ভবিষ্যতে আর কোনো গায়েবি ও হয়রানিমূলক মামলা দায়ের, ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের গ্রেফতার করা হবে না বলে প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন।
ওবায়দুল কাদের : গণভবন থেকে বের হয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, সংবিধানের বাইরে এবং সংবিধান পরিপন্থী কোনো দাবি মেনে নেয়ার সুযোগ নেই। তাদের কিছু দাবি মেনে নিলে এক-এগারোর মতো ঘটনা ঘটতে পারে। তবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। ডায়ালগ শেষ হলো। এখন নির্বাচনের প্রস্তুতির সঙ্গে আলোচনাও চলবে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সংলাপে চার দফা লিখিত প্রস্তাব দেয়। তা হলো- বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন, সংসদ ভেঙে দেয়া ও পরবর্তী ৯০ দিনে নির্বাচন আয়োজন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং ১০ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ ও একজন প্রধান উপদেষ্টার সমন্বয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার গঠন। আওয়ামী লীগ বলছে তাদের এই দাবিগুলো সংবিধান পরিপন্থী তাই তা মেনে নেয়ার সুযোগ নেই। প্রথম সংলাপে ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফার বেশিরভাগই সংবিধানসম্মত হওয়ায় তা মেনে নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মত হয়েছেন। শেখ হাসিনা বলেছেন, আমার ওপর ভরসা রাখুন। আওয়ামী লীগ জনগণের ভোট নিয়ে প্রতারণা করবে না। বিদেশি পর্যবেক্ষকরা যে কোনো কেন্দ্রে যাবে যেভাবে খুশি যাবে। বিএনপি খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়ে বলেছে। আমরা বলেছি, এই মামলা আমরা করিনি, মামলা বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় হয়েছে। তার জামিনের বিষয় আদালতের এখতিয়ার। তবে আদালত যদি জামিন দেয় সরকার তাতে বাধা দেবে না। পৃথিবীর কোথাও কি সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন হয়? আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, ভারত, কোথাও কি হয়? তাহলে আমাদের হবে কেন? এটি সংবিধান পরিপন্থী তাই এ দাবি মানার সুযোগ নেই। সরকারের মেয়াদ শেষ হবার পরবর্তী ৯০ দিনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা এবং তাতে ১০ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচনকালীন উপদেষ্টা পরিষদের প্রস্তাব দিয়েছে। এটা সংবিধানসম্মত নয়। সংবিধান মোতাবেক মেয়াদ শেষ হবার আগের ৯০ দিনের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা সংবিধানের বাইরে যাব না। সংসদ ভেঙে দেয়ার পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন দেয়ার প্রস্তাব নির্বাচন পিছিয়ে দেয়ার বাহানা। এই পিছিয়ে দেয়ার মধ্য দিয়ে ফাঁক-ফোকর হয়তো খুলে দেয়া হচ্ছে, যা দিয়ে তৃতীয় কোনো অপশক্তিকে সহায়তা করা। আমরা সেটাই মনে করছি। সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা নিয়ে তারা যে কথা বলেছেন, সেটা পৃথিবীর কোনো গণতান্ত্রিক দেশে নেই। তবে আমরা বলেছি, সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মোতায়েন থাকবে। তারা স্থানীয় প্রশাসনকে সহযোগিতা করবে। সংলাপে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে গত কয়েক দিনে যে আলোচনা হয়েছে তার সারসংক্ষেপ নিয়ে আমাদের অবস্থান, সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবো।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর : বেইলি রোডের সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সংলাপে ৭ দফার প্রথম দফা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, সংসদ ভেঙে দেয়া, নির্বাচনকালীন সরকার গঠন ও নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে অবশ্যই আলোচনা হয়েছে। আমরা জোর দিয়ে বলেছি যে, আইনগতভাবে তিনি মুক্তি পাওয়ার যোগ্য, জামিন পাওয়ার যোগ্য। প্যারোলে মুক্তির কোনো কথা হয়নি। কাল যদি তফসিল ঘোষণা করে আমরা নির্বাচন কমিশন অভিমুখে পদযাত্রা করব। আমরা তো আন্দোলনেই আছি। সংলাপের মাধ্যমে দাবি আদায় না হলে আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করা হবে। আমরা রাজশাহীতে জনসভা করব। আমরা সবসময় সংলাপকে আন্দোলনের অংশ হিসেবে নিয়েছি। পার্ট অব আওয়ার মুভমেন্ট। আমরা এখনো বিশ্বাস করি আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত। সরকার যদি সেই পথে না আসে, সরকার যদি আলোচনার মাধ্যমে একটা জায়গায় পৌঁছাতে না চায় এর দায়দায়িত্ব তাদের ওপরই বর্তাবে। আমরা এ বিষয়ে প্রস্তাব করেছি। তারা (সরকার) বলেছেন যে, আলোচনা হতে পারে। আমরা একটি নির্বাচনকালীন সরকার চাচ্ছি জনগণের দাবি হিসেবে। এটা সরকার যদি না মানে তাহলে আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা তা আদায় করব। ‘সংলাপের মূল্যায়ন’ সম্পর্কে ফখরুল বলেন, পাওয়ার ব্যাপারটা রিলেটিভ ব্যাপার। আমরা আমাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে সরকারের কাছে গেছি। তারা বলেছে যে, ভবিষ্যতে তারা আলোচনা করে দেখতে পারে, সুযোগ আছে। আমরা আমাদের দাবি নিয়ে জনগণের কাছে যাচ্ছি। জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে এই দাবি আদায় করব। জনগণের সাথে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। জনগণের দাবির প্রতি তাদের শ্রদ্ধা নেই। আজকে নির্বাচন পেছানোর কথা আমরা বলছি এ জন্য যে, নির্বাচনকে শুধুমাত্র একটা অর্থবহ করার জন্য।
মাহমুদুর রহমান মান্না : সংবাদ সম্মেলনে নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমরা বলেছিলাম যে, সংসদ ভেঙে দিতে হবে। সংসদ ভেঙে দেয়ার ৯০ দিন পরই তো নির্বাচন হবে। সংসদ ভেঙে দেয়াটা সংবিধানের অন্তর্গত এবং এখনই এটি সংবিধানে আছে। এটি সংবিধান বহির্ভূত নয়। একই সাথে দুইটি সংসদ থাকবে- এটা তো কোনো নিয়মই হতে পারে না। উনারা যদি বলেন এটা নেই তাহলে উনারা ভুল বলেছেন। এটি সংবিধানের মধ্যে আছে, সাংবিধানিকভাবেই আমরা প্রস্তাব করেছি। সেক্ষেত্রে সংসদ ভেঙে দেয়ার পরের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তাব করেছি। এর মানে নির্বাচন আমরা পেছাতে চাইছি এমনটা নয়।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে ৩ ঘণ্টার সংলাপে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের মধ্যে ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, কার্যকরী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, দলের উপদেষ্টা এস এম আকরাম, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোটের প্রতিনিধিদলে ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মতিয়া চৌধুরী, ওবায়দুল কাদের, অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, অ্যাড. ইউসুফ হোসেন হুমায়ন, শ ম রেজাউল করিম, হাসানুল হক ইনু ও রাশেদ খান মেনন। #



 

Show all comments
  • Boby ৮ নভেম্বর, ২০১৮, ৪:০৪ এএম says : 0
    আমরা এখনো বিশ্বাস করি আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত।
    Total Reply(0) Reply
  • chanchal ৮ নভেম্বর, ২০১৮, ৪:০৫ এএম says : 0
    Jonogon ke asob bole kono lav nai. tara akbar khepe gele bol tader court e chole jabe
    Total Reply(0) Reply
  • Tajul Islam ৮ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:১৮ পিএম says : 0
    bol jar court e houk na kano amra sadharon manus akta free and Fair election chai
    Total Reply(0) Reply
  • Md Nuruzzaman Moyna ৮ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:২৩ পিএম says : 0
    Somoy ghure jete somoy lage na
    Total Reply(0) Reply
  • মিলন ৮ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:২৩ পিএম says : 0
    দেশের বর্তমান অবস্থা দেখে তো সেটাই মনে হচ্ছে
    Total Reply(0) Reply
  • রুবেল ৮ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:২৪ পিএম says : 0
    কবে যে বল এই দেশের আপামর জনতার কোর্টে আসবে সেটাই দেখার জন্য অপেক্ষা করছি।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সংলাপ

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১০ জুন, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ