পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
স্টাফ রিপোর্টার : দেশে এক সময় প্রায় ১৪০০ সিনেমা হল ছিল। এখন এ সংখ্যা কমতে কমতে প্রায় আড়াইশ’তে নেমেছে। এর মূল কারণ হিসেবে হল মালিকরা বলছেন, মানসম্মত ও দর্শক গ্রহণযোগ্য সিনেমা নির্মিত না হওয়া এবং যে সব সিনেমা নির্মিত হচ্ছে, সেগুলো চালিয়ে দর্শকদের আগ্রহ সৃষ্টি করতে না পারা। এতে তারা দিন দিন লোকসানের মুখোমুখি হচ্ছেন। একটি সিনেমা চালিয়ে হলের কর্মচারীসহ যে সব আনুষঙ্গিক খরচ হয়, তা উঠে আসে না। ফলে তারা সিনেমা হল বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। এর পরিবর্তে মাল্টিস্টোরিড ভবন তৈরি করে মার্কেট নির্মাণ করলে লাভ বেশি। সারা দেশে বন্ধ হওয়া সিনেমা হলগুলোর জায়গায় এখন শপিং কমপ্লেক্স গড়ে তোলা হয়েছে। হল মালিকরা বলছেন, এখনও যে কয়টি সিনেমা হল টিকে আছে, সেগুলোও টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না। সিনেমা শিল্পের উন্নয়ন ও দর্শক গ্রহণযোগ্য সিনেমা নির্মিত না হলে সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যাবে। প্রতিনিয়তই লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে একের পর এক বন্ধ হয়ে গেছে সিনেমা হলগুলো। বিগত কয়েক বছরে শুধু দিনাজপুরেই বন্ধ হয়ে গেছে ১৬টি সিনেমা হল। এ জেলায় ১৯টি সিনেমা হল ছিল। বাকি তিনটি হলও যে কোন সময় বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। লোকসান দিতে দিতে হল-মালিকরা কুলিয়ে উঠতে না পেরে হলগুলো বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে বেকার হয়ে গেছে এ সব সিনেমা হলের সাথে জড়িত শ্রমিক-কর্মচারীরা। সিনেমা হল বন্ধ হওয়ার পর অনেক কর্মচারী-শ্রমিকদের রিকশা-ভ্যান, অটো রিকশা চালাচ্ছে। সিনেমা হলগুলো বন্ধ হয়ে গড়ে উঠেছে মার্কেট, শপিং মল, পাইকারী ব্যবসায়ীদের গোডাউন। দিনাজপুর সদরের বোস্তান সিনেমা হল ভেঙে গড়ে উঠেছে চাল বাজার মার্কেট, লিলি সিনেমা হল ভেঙে গড়ে উঠেছে বাটা বাজার ও হাসনা প্লাজা মার্কেট, ফকিরপাড়া জুয়েল সিনেমা হল ভেঙে গড়ে উঠেছে আবাসিক বাড়ি, বিজিবি অডিটোরিয়াম কমিউনিটি সেন্টার হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। সদ্য বন্ধ হয়ে গেছে চৌরঙ্গী সিনেমা হল। একমাত্র চালু রয়েছে শহরের মর্ডান সিনেমা হল। তবে এই সিনেমা হলটিও বন্ধের পথে বলে জানিয়েছেন সিনেমা হলের মালিক। বীরগঞ্জ উপজেলায় ২টি সিনেমা হলের মধ্যে একটি বন্ধ ও উল্লাস নামে একটি সিনেমা হল চালু রয়েছে। কাহারোল উপজেলার একটি মাত্র সিনেমা হল ঊষা। তাও এখন বন্ধ রয়েছে। বোচাগঞ্জ উপজেলায় একমাত্র সিনেমা হল আশা বন্ধ রয়েছে। খানসামা উপজেলায় চামেলি নামের সিনেমা হলটি বন্ধ হয়ে গেছে। বিরামপুরে কেটি সিনেমা হলও বন্ধ। ফুলবাড়ী উপজেলার ৩টির মধ্যে উর্বশী খোলা রয়েছে। হাকিমপুর উপজেলায় একমাত্র সিনেমা হল হিরামতি এখন ব্যবসায়ীদের গোডাউন ঘর ও পার্বতীপুর উপজেলায় আশা টকিজ এবং মধুমতি সিনেমা হল রয়েছে বন্ধ। দিনাজপুরের সিনেমা হল মালিকরা জানান, নিম্নমানের সিনেমা, সিনেমায় অশ্লীলতা, ডিশ লাইন সিনেমা প্রদর্শন এবং বিভিন্ন চ্যানেলে নিয়মিত সিনেমা প্রচার, ভারতীয় চ্যানেলের আগ্রাসন, ভিডিও পাইরেসির কারণে সিনেমা হলগুলো দর্শক হারিয়েছে। তারা জানান, এভাবে যদি সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যায় তাহলে এই শিল্পের সাথে জড়িত শিল্পী কলা-কুশলী, মালিক ও ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের কালচার, ইতিহাস-ইতিহ্য। সরকার হারাবে মোটা অংকের রাজস্ব। মর্ডান সিনেমা হলের মালিক পারভেজ বলেন, পাইরেসি সিনেমা হলগুলোর এই ভগ্নদশার অন্যতম কারণ। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, একজন হল-মালিক লাখ টাকা খরচ করে সিনেমা কিনে আনেন। তিনি যখন দেখেন সদ্য মুক্তি পাওয়া সিনেমা হলের পাশের চায়ের দোকানে বসে লোকজন দেখছেন। তখন দর্শক কেন সিনেমাটি দেখবে? তিনি বলেন, সিনেমা হলে যাওয়ার আগেই বেশিরভাগ চায়ের দোকানেই সেসব সিনেমা দেখা যায়। বর্তমানে মানুষ মোবাইল ফোন, ট্যাব, ল্যাপটপে সিনেমা দেখতে পারে। অর্থাৎ সিনেমা মানুষের হাতের মুঠোয় চলে এসেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।