Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার মাত্রা প্রচারের তুলনায় অনেক কম -পরিবেশ ও বন মন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ১ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শরণখোলা উপজেলা সংবাদদাতা : পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এমপি বলেছেন, সুন্দরবন হচ্ছে বিশ্ববিখ্যাত সম্পদ, যা রক্ষা করা সরকার ও স্থানীয় জনগণের সম্মিলিত দায়িত্ব। এখানে সংঘটিত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার খবর প্রচার মাধ্যমে যা এসেছে প্রকৃত অবস্থা সে তুলনায় যৎসামান্য। তারপরও এ ধরণের ঘটনা ঘটা মোটেই উচিৎ ছিল না এবং যারা এরসাথে জড়িত ভবিষ্যতে এমন কাছ থেকে তাদেরকে নিবৃত রাখতে প্রচেষ্টা নিতে হবে। কতিপয় লোকের জন্য সুন্দরবন ধ্বংস হতে দেয়া যাবে না। তিনি আজ রবিবার দুপুরে অগ্নিকাণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত সুন্দরবন এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে এ কথা বলেন। বন মন্ত্রী আজ রবিবার সকালে ঢাকা থেকে বাগেরহাট জেলা শরণখোলা উপজেলা সদরে আসেন এবং গত কয়েক দিনে পূর্ব সুন্দরবনে চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর ষ্টেশনভুক্ত বনাঞ্চলে সংঘটিত অগ্নিকাণ্ড পীড়িত এলাকা ঘুরে দেখেন। এ সময় তাঁর সাথে বাগেরহাট-৪ সংসদীয় এলাকার সংসদ সদস্য ও সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. মোজাম্মেল হোসেন, বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. ইউনুছ আলী, খুলনা সার্কেলের বন সংরক্ষক জহির উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ ছিলেন। আনোয়ার হোসেন সুন্দরবন ঘুরে এসে শরণখোলা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে স্থানীয় প্রশাসন, বন বিভাগ, জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্যদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। এখানে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কামাল উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে উপরোক্ত ব্যক্তিবৃন্দ ছাড়াও বক্তব্য রাখেন বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও উপ পরিচালক (স্থানীয় সরকার বিভাগ) শফিকুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. অতুল মণ্ডল, সহকারী পুলিশ সুপার এনামুল হক, জাতীয় পার্টি- জেপি’র কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান শরীফ শফিকুল হামিদ চন্দন ও রায়েন্দা ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিলন। পরিবেশ ও বন মন্ত্রী এ সময় আরও বলেন, সুন্দরবনের আগুন নিয়ে প্রচার-প্রচারণা যেভাবে হয়েছে তাতে মনে হয়েছে পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার হয়তো ব্যর্থ হয়েছে। আমাদের মত যারা ঢাকায় থাকেন তাদের কাছে এ ধারণাই বদ্ধমূল থাকতো যদি না আমি আজ সুন্দরবনে সরাসরি এসে অগ্নিপীড়িত এলাকা স্বচক্ষে না দেখতাম। আসলে দূরে বসে প্রচার-প্রচারণায় প্রভাবিত না হয়ে যা সঠিক ঘটেছে তা বিশ্বাস করার আগে যাচাই করে দেখতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে প্রচণ্ড তাপ প্রবাহ চলছে। সুন্দরবনের মত জায়গায় কোন কারণে যদি একবার আগুন লাগে তা নিয়ন্ত্রণে আনা খুবই দুঃসাধ্য। কিন্তু এ অবস্থাকে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়ার দাবানলের মত ভয় পাওয়ার কারণ নেই। তারপরও ফায়ার ব্রিগেড, স্থানীয় প্রশাসন, বনজীবি, জনগণ যেভাবে এ আগুন নিভাতে প্রাণান্তকর চেষ্টা করেছেন, বন বিভাগকে সহযোগিতা করেছেন সে জন্য আমি সরকার ও মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও অশেষ ধন্যবাদ জানাই। বিশেষত ফায়ার ব্রিগেডের কর্মীদের অবদান অত্যন্ত প্রশংসার যোগ্য। তিনি বলেন, সুন্দরবন না থাকলে দক্ষিণাঞ্চল বাসী সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ঘূর্ণিঝড় ঠেকাতে সুন্দরবন খুবই অপরিহার্য। এর যাতে কোন ক্ষতি না হয় তার জন্য আমাদের সকলকে নজর রাখতে হবে। সুন্দরবনকে কেন্দ্র করে অনেক লোকের জীবন-জীবিকা আবর্তিত হয়। বহু মানুষ জীবনের উপর নির্ভর করে বাঁচে। তাই সরকার বিদেশের সহযোগিতায় নানা প্রকল্প গ্রহণ করে এ সুন্দরবনের উপর থেকে মানুষের নির্ভরশীলতা হ্রাস করার চেষ্টা করছে। জলবায়ু পরিবর্তন ফান্ড থেকে বিদেশীরা কোটি কোটি ডলার দিচ্ছে সুন্দরবনকে সুরক্ষার জন্য। এসব ফান্ড থেকে সুন্দরবনের ভোলা নদী খননসহ বিভিন্ন প্রকল্প নেয়ার কথা আমরা ভাবছি। মানুষ আগের চেয়ে অনেক সচেতন হয়েছে। মানুষকে পরিশ্রম করতে হবে। গাছ চুরির দিন শেষ, কতিপয় লোকের জন্য সুন্দরবন ধ্বংস হতে দেয়া যাবে না। ছয় কোটি গাছ লাগাই এবং ৩০ বর্গ কিলোমিটার উদ্ধার করে সরকারের কাছে হস্তান্তর করি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ