Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নতুন পুরনো মিলে খুলনায় বিএনপি-আ.লীগে মনোনয়ন

দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সর্বোচ্চ লবিং

আবু হেনা মুক্তি | প্রকাশের সময় : ১৯ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

সারাদেশে এখন নির্বাচনী হাওয়া। সে হাওয়ায় উত্তাপ হয়ে উঠছে খুলনার ৬টি আসন। দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীরা সর্বোচ্চ লবিং শুরু করেছে দলের মনোনয়ন পেতে। বর্তমান একাধিক সংসদ সদস্য এবারের মনোনয়ন দৌড়ে পিছিয়ে পড়তে পারেন নতুন প্রত্যাশীদের চাপে। খুলনার ৬টি আসনের মধ্যে তিনটি আসনেই আওয়ামী লীগের নতুন মুখ আসছে। খুলনা-৬ আসনে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান ও খুলনা-৪ আসনে জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার আব্দুস সালাম মুর্শেদী নতুন মুখ হিসেবে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন। এর মধ্যে খুলনা-২ (সদর ও সোনাডাঙ্গা) আসনে নতুন মুখ হিসেবে বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র শেখ সালাহউদ্দীন জুয়েল একমাত্র মনোনয়ন প্রত্যাশী। কেন্দ্রের নির্দেশে বর্তমান সংসদ সদস্য মুহাম্মদ মিজানুর রহমান মিজান মনোনয়নপত্র সংগ্রহ না করায় তার মনোনয়ন নিশ্চিত। আর খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য এসএম মোস্তফা রশিদী সুজার মৃত্যুর পরে উপনির্বাচনে আব্দুস সালাম মুর্শেদীকে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত করার পর তার এবারের নির্বাচনেও মনোনয়ন নিশ্চিত। এছাড়া খুলনা-৬ আসনে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানের মনোনয়ন নিশ্চিত করেছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। তিনিও এ আসনে নতুন মুখ।
অপরদিকে, খুলনার ৬ টি সংসদীয় আসনে বিএনপি’র মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে এবার অনেক তরুণ নেতা মনোনয়ন পেতে পারেন। ধানের শীষের জয় নিশ্চিত করতে বিভিন্ন আসনে নিষ্ক্রিয়, বয়োঃবৃদ্ধ, সাবেক সংসদ সদস্যের বদলে তরুণ পরিচ্ছন্ন ভাবমর্যাদার নতুন মুখ আশা করছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা। মামলা-হামলার শিকার, স্বচ্ছ ভাবমর্যাদা, জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে, এলাকায় সুপরিচিত, সৎ, দক্ষ সংগঠক, নিষ্ঠাবান ও শিক্ষিত তরুণদের দলীয় প্রতীক দেয়ার দাবিও জানিয়েছেন।
গত দু’বারের বিএনপি দলীয় প্রার্থী খুলনা জেলা বিএনপিসাধারণ সম্পাদক আমির এজাজ খান এবারও খুলনা-১ আসনে (দাকোপ ও বটিয়াঘাটা) দলের প্রার্থী নিশ্চিত বলে দলটির একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। খুলনা-২ আসনেও (সদর ও সোনাডাঙ্গা মেট্রো থানা) বিএনপি দলীয় প্রার্থী কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু। খুলনা-৩ আসনে (দৌলতপুর-খালিশপুর-খানজাহান আলী) বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্যদের আধিপত্যের সূর্য ডুবতে বসেছে। আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তৎপরতায় অনেকটা কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন তারা।
মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি ও এ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এক সময়ের শিল্পাঞ্চলের ডাকসাইটে নেতা কাজী সেকেন্দার আলী ডালিম। তিনি বয়সের ভারে অনেকটা ন্যুব্জ হয়ে কর্মী-সমর্থক হারাচ্ছেন। তার সঙ্গে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে রয়েছেন আরও তিন নেতা। তারা হলেন-মহানগর বিএনপির প্রথম যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি তারেক রহমানের ঘনিষ্ট রকিকুল ইসলাম বকুল এবং মহানগর বিএনপির কোষাধ্যক্ষ ও খালিশপুর থানা সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান মিঠু।
খুলনা-৪ আসনে এবার নতুন প্রার্থী কেন্দ্রীয় বিএনপির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ও ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি আজিজুল বারী হেলাল। শাহ কামাল তাজ ২০০৮ সালে এ আসনে নির্বাচন করে পরাজিত হন। পরাজয়ের পর বেশ কয়েক বছর এলাকায় সাংগঠনিক কাজে অংশ নিলেও গত কয়েক বছর খুলনায় তার কোনো তৎপরতা নেই। যে কারণে আসন্ন নির্বাচনে তাজকে ছাড় দিতে নারাজ আজিজুল বারী হেলালের সমর্থকরা। ডুমুরিয়া ও ফুলতলা এ দুটি উপজেলা নিয়ে গঠিত খুলনা-৫ আসন। এ আসনে বিএনপি ও নিবন্ধন বাতিল জামায়াতের মধ্যে তৈরি হয়েছে মনোনয়ন নিয়ে দূরত্ব। জামায়াতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ২০০১ সালের নির্বাচনে এ আসন থেকে জয়লাভ করেন। কিন্তু বিএনপি এবার এ আসনটি জামায়াতকে ছাড় দিতে রাজি নয়।
সুন্দরবনের কোলঘেঁষা কয়রা ও পাইকগাছা উপজেলা নিয়ে খুলনা-৬ আসনেও বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে মনোনয়ন নিয়ে ঠান্ডা লড়াই চলছে। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে জামায়াত নেতা শাহ মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস এ আসনে নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে চারদলীয় জোট প্রার্থী হিসেবে জামায়াতের শাহ মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস আবারও নির্বাচিত হন। এবার আসনটিতে জামায়াতের পক্ষ থেকে মনোনয়ন চাইবেন খুলনা মহানগর জামায়াতের আমির মাওলানা আবুল কালাম আজাদ। কিন্তু বিএনপি আসনটি জামায়াতকে ছাড় দিতে রাজি নয়। বিএনপির দাবি জামায়াতের সেই শক্ত অবস্থান এখন আর নেই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নির্বাচন

২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ