Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ওজন কমানো জরুরি

প্রকাশের সময় : ৪ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ৯:৫৪ পিএম, ৩ মে, ২০১৬

লাগামহীনভাবে ওজন বাড়ছে? রসনার কাছে হেরে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত? ব্যায়ামের কথা শুনলেই কুড়েমিতে ধরে? যতই আয়েশি জীবনযাপন করুন না কেন, আপনি কিন্তু যে কোন সময়ে প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হতে পারেন। আর প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ যার সঙ্গী তার কী আর শক্র চাই?
পৃথিবীতে যে দেড় কোটি মানুষ হাইপ্রেসারে ভুগছেন তাদের এক কোটিরই ওজন বেশি। এর মধ্যে তিন কোটি অত্যধিক মোটা। সুতরাং উচ্চ রক্তচাপের সঙ্গে ওজন বৃদ্ধি সরাসরি সম্পৃক্ত। পৃথিবীতে প্রতিবছর ৭০ লক্ষ মানুষ উচ্চ রক্তচাপজনিত জটিলতায় মারা যান। বুকের পাঁজরের ভেতর বামপাশে রয়েছে হৃৎপি-। পাম্পের মাধ্যমে রক্তনালির সাহায্যে এটা অনবরত শরীরে রক্ত সরবরাহ করছে। রক্ত তার চলার পথে ধমনির দেয়ালে যে শক্তির প্রয়োগ করে তাই হলো চাপ অর্থাৎ রক্তচাপ। প্রবীণদের রক্তনালির স্থিতিস্থাপকতা কমে যায় বলে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে রক্তচাপ বাড়তে থাকে। সুতরাং উচ্চ রক্তচাপের অর্থ হলো রক্ত তার চলার পথে ধমনির দেয়ালের ওপর স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বলপ্রয়োগ করছে। এক-তৃতীয়াংশ রোগীর ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপে কোনও উপসর্গ না-ও থাকতে পারে। সাধারণত উচ্চ রক্তচাপের উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছে বুক ধড়ফড় করা, মাথা ঝিমঝিম করা, বুকে ব্যথা, বাম কাঁদে ও বাম হাতে ব্যথা, ঘুম না হওয়া। কখনও মাথাব্যথা, কপালে ঘাম, শ্বাসকষ্ট বা নাক দিয়ে রক্ত পড়তে পারে। উচ্চ রক্তচাপের কারণে শরীরে অনেক জটিলতা দেখা দেয়। এর সরাসরি প্রভাব পড়ে হৃৎপি-ের ওপর। ফলে হৃৎপি-ের আকার বড় হয়ে যায়। ইসকেমিক হার্ট ডিজিজ, হার্ট ফেলিয়র এমন কী হার্ট অ্যাটাকও হতে পারে। চোখের ওপরও উচ্চ রক্তচাপের প্রভাব আছে। ফলে অন্ধত্ব হতে পারে। কিডনি বিকলও হতে পারে। মস্তিষ্কের রক্তনালি উচ্চ রক্তচাপের প্রভাবে ছিঁড়ে গিয়ে রক্তক্ষরণ হতে পারে। পক্ষাঘাতগ্রস্ত হওয়ারও আশঙ্কা থাকে। উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা হলো মুখে খাওয়ার ওষুধ। এটি সারাজীবন খেতে হবে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকলেও ওষুধ ছেড়ে দেয়া যাবে না। তবে বিভিন্ন সময়ে ডাক্তারের পরামর্শমতো ডোজ বাড়ানো, কমানো যেতে পারে। ওষুধ খেয়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার চেয়ে এর প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করাই উত্তম। যদি লবণ গ্রহণের মাত্রা অর্ধেক কমিয়ে আনা যায় তবে বিশ্ব স্ট্রোক ও মস্তিষ্কে রক্তচাপজনিত মৃত্যুর সংখ্যা ২.৫ মিলিয়ন কমে যাবে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ওজন হ্রাস করলে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি ১৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাবে। ওজন কমাতে কিন্তু ব্যাপক আয়োজনের প্রয়োজন নেই। ৩০-৪০ মিনিট হাঁটলেই ওজন অনেক কমানো সম্ভব। তবে সবচেয়ে বেশি জোর দিতে হবে খাবার নিয়ন্ত্রণের ওপর। চর্বিযুক্ত খাবার, তেলেভাজা, ঘি, মাখন একেবারে বারণ। ডিমের কুসুম, মাংস, চিংড়ি, মাছের ডিম এড়িয়ে চলুন। বেশি করে সবজি খান। বিভিন্ন ফলও খেতে পারেন। ফাস্টফুড, কেক, পেস্ট্রি, পিৎজা, চিপ্স যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন। প্রচুর পানি খান। ধূমপান এবং মদ্যপান তো একেবারে নিষেধ।
ষ আফতাব চৌধুরী
সাংবাদিক-কলামিস্ট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ওজন কমানো জরুরি
আরও পড়ুন