Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জেএমবি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

‘র‌্যাডিক্যাল ইয়ুথ গ্রুপ’ নামে নতুন একটি ব্যানারে সংগঠিত হচ্ছে জাময়াতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)। আধুনিক ও উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত পেশাজীবীদের নিয়ে নতুনভাবে সংগঠিত হচ্ছে গ্রুপটি। এই গ্রুপের আট সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। র‌্যাবের দাবি, গ্রুপটি প্রায় দুই বছর ধরে কাজ করছে এবং মধ্যপ্রাচ্য থেকে অর্থ সংগ্রহ করে টেকনাফের রোহিঙ্গাদের অর্থ সরবরাহ করেছে।
গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‌্যাবের মিডিয়া শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান। গ্রেফতারকৃতরা হলো- আরাফাত আজম, রাশেদ আলম বাঁধন, মীর আফজাল আলী, মাহাদী হাসান, রাদিউজ্জামান হাওলাদার অনিক, জালাল উদ্দিন শোভন, জারির তাইসির ও আসিফুর রহমান। গত রোববার রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, ভাটারা ও কলাবাগান এলাকায় র‌্যাব-১ ও র‌্যাব-২ যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করে।
মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ২০১৫-১৬ সালের শুরুর দিকে জেএমবি নতুন করে এই গ্রুপের কার্যক্রম শুরু করে। প্রাথমিক অবস্থায় গ্রুপের কার্যক্রম মোহাম্মদপুর এলাকায় থাকলেও পরে তা কলাবাগান ও ভাটারা এলাকায় নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করে। গ্রুপটিতে প্রায় ৩০-৩৫ জন সদস্য যুক্ত। একজন দায়িত্বশীল আছে। পালাক্রমে অনুসারীদের ভেতর থেকে একেকজন আমীরের দায়িত্ব পালন করে। গ্রেফতার হওয়া শোভন, আফজাল ও মাহাদী আমীরের দায়িত্ব পালন করেছে এবং বর্তমান আমীর মীর আফজাল আলী। আমীরের দায়িত্ব হলো গোপন বৈঠকগুলোর আয়োজন করা এবং বিভিন্ন দায়িত্বশীল ব্যক্তির নির্দেশনা অন্যান্যা সদস্যদের নিকট পৌঁছানো।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, গ্রুপটি মূলত ২০১৪ সালে জঙ্গি বাশারুজ্জামান চকলেটের তত্ত্বাবধানে গঠিত হয়েছিল। মোহাম্মদপুরের একটি মসজিদকে কেন্দ্র করে গ্রুপটি গঠিত হয়েছিল। সেখানে বাশারুজ্জামান চকলেট নিয়মিত যাতায়াত করত। ওই সময় চকলেটের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হয়েছিল গ্রেফতার হওয়া মাহাদী, শোভন ও বাঁধন। চকলেটের আত্মগোপনে চলে যাওয়া এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক অভিযানের ফলে কিছুদিন গ্রুপের কার্যক্রম স্তিমিত ছিল। এরপর তারা ২০১৬ সালের দিকে আবার কার্যক্রম শুরু করে। প্রতি সপ্তাহে একটি মিটিং করত তারা। এই গ্রুপের সদস্যরা অন্যান্য নতুন জঙ্গি সদস্যদের উদ্বুদ্ধকরণ ও অর্থ সংগ্রহ করত। তারা বিভিন্ন মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য থেকে অর্থ সংগ্রহ করে টেকনাফের রোহিঙ্গাদের অর্থ সরবরাহ করেছে বলে জানতে পেরেছে র‌্যাব।
র‌্যাব জানায়, মাহাদী হাসান পেশায় একজন ছাত্র। সে ধানমন্ডির একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএসসি পড়ছে। ২০১৪-১৫ সালে বাশারুজ্জামান চকলেটের সাথে মিশে জঙ্গিবাদে জড়ায়। রাশেদ আলম বাধন ইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইইই’তে পড়াশুনা শেষ করেছে। তিনি ইনসাইড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের গণিত বিষয়ে শিক্ষকতা করছেন। জারির তাইসির মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ পড়ছে। জারির এর আগে র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়া সিয়ামের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে জড়িয়েছে। আসিফুর রহমান একজন ফ্রিল্যান্সার ও ওয়েব ডিজাইনার। সে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্সে পড়ে। আরাফাত আজম একজন পেশায় সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার। মূলত আধুনিক শিক্ষিত যুব সমাজকে জঙ্গিবাদে নিতে পারলে খুব সহজেই তাদের অনুসরণীয় পথ বাস্তবায়ন সম্ভব হবে এ জন্য তারা নতুন কার্যক্রম শুরু করে। র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, পুলিশের জঙ্গি অভিযানে চকলেটের মৃত্যুর পর জেএমবির এই নতুন গ্রুপটি চালু করে দেশে আবারো জঙ্গিবাদ ছড়িয়ে দেওয়াই ছিল তাদের উদ্দেশ্য।
আনসার আল ইসলামের প্রশিক্ষক গ্রেফতার: এদিকে, র‌্যাব-৩ এর একটি দল কদমতলী থানাধীন শ্যামপুর বরইতলা এলাকা থেকে আনসার আল ইসলামের ‘অপারেশনাল টিমের’ প্রশিক্ষক মো. ইউনুছ ওরফে আসাদুল্লাহকে গ্রেফতার করেছে। গত রোববার রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
র‌্যাব-৩ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিণা রাণী দাস বলেন, নির্বাচনে নাশকতা সৃষ্টির পরিকল্পনার উদ্দেশ্যে গোপনে মিলিত হয়েছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে ১টি চাপাতি ও ১টি ধারালো ছুরিসহ ৬টি উগ্রবাদী বই উদ্ধার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জেএমবি

১৭ আগস্ট, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ