Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আমরাই হবো প্রথম ভুক্তভোগী প্রজন্ম : বিশ্বব্যাংক

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

পোল্যান্ডের কাতোভিতসা শহরে জাতিসংঘের আবহাওয়া পরিবর্তন বিষয়ক সম্মেলন চলা অবস্থায় বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আমরা যদি এখনই আবহাওয়া পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় নির্ধারিত পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন না করি তাহলে আমাদের প্রজন্মই আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে দেখা দেওয়া প্রতিকূলতার প্রথম ভুক্তভোগী হবো। আমরাই শেষ প্রজন্ম যাদের হাতে আবহাওয়া পরিবর্তন বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, বর্তমানে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধির ঝুঁকিতে রয়েছে। অথচ ২০১৫ সালের প্যারিস অ্যাকর্ডে ঠিক করা হয়েছিল, তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিমাণ ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার চেষ্টা করা হবে। বিশ্বের ১৮৩ দেশ যোগ দিয়েছে কাতোভিতাসার আবহাওয়া সম্মেলনে। ২০১৫ সালে ফ্রান্সের প্যারিসে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপাদন কমাবার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল তা বাস্তবায়নে দেশগুলোর পরিকল্পনার বিষয়ে সেখানে আলোচনা হবে। তাছাড়া এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের যোগান কে কাকে কীভাবে দেবে তাও সম্মেলনের আলোচনার বিষয়বস্তু। ২০১৫ সালে তাপমাত্রার বৃদ্ধিকে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ধরে রাখতে যেসব পদক্ষেপ প্রস্তাব করা হয়েছিল, এখন সেই একই লক্ষ্য অর্জনে যে প্রচেষ্টা প্রায় পাঁচ গুণ বেশি বাড়ানোর দরকার হবে তাও সম্মেলনেতুলে ধরা হবে। এমন অবস্থায় বিশ্বব্যাংকের সিইও ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বলেছেন, ‘এটা নিশ্চিত যে আবহাওয়া পরিবর্তনের লাগাম টেনে ধরার সুযোগ থাকা প্রজন্মগুলোর মধ্যে আমরাই সর্বশেষ। যদি এখনই আমরা কার্যকর পদক্ষেপ নিতে না পারি তাহলে আবহাওয়া পরিবর্তনের প্রভাবে প্রথম ক্ষতিগ্রস্ত প্রজন্মটা হবো আমরাই।’ সোমবার বিশ্বব্যাঙ্ক জানিয়েছে, ২০২১-২০২৫ সাল মেয়াদে আবহাওয়া পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় সংস্থাটি ১০ হাজার কোটি ডলারের তহবিল দেবে। এই অর্থ আবহাওয়ার পরিবর্তন রোধে গৃহীত পদক্ষেপ ও পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের কল্যাণে সমানভাবে ব্যবহৃত হবে। স¤প্রতি আবহাওয়া পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পুনর্বাসনে আবহাওয়া তহবিলের মাত্র পাঁচ শতাংশ করে খরচ করতে দেখা গেছে। তিন বছর আগে প্যারিসে অনুষ্ঠিত আবহাওয়া সম্মেলনে অংশ নেওয়া দেশগুলো বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিমাণকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখার বিষয়ে একমত হয়েছিল। সেখানে নির্ধারিত হয়েছিল, দেশগুলো সম্ভব হলে তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিমাণকে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ধরে রাখার চেষ্টা করবে। গত তিন বছরে এসব লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ জোরদার করা তো দূরে থাক বরং পদক্ষেপগুলো নিয়ে রাজনৈতিক বিভেদ আরও বেড়েছে। বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধির প্রভাবেই বিশ্বজুড়ে শুরু হয়েছে নানান প্রাকৃতিক বিপর্যয়। একদিকে যেমন দেখা যাচ্ছে দাবানল, অন্যদিকে তেমন দেখা দিচ্ছে হ্যারিকেন। পরিস্থিতি এতটাই সঙ্গিন যে আবহাওয়া পরিবর্তনের ওপর আগে অনুষ্ঠিত সম্মেলনগুলোর সাবেক সভাপতিরা এক যৌথ বিবৃতিতে, দ্রুত পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন। বিবৃতির ভাষ্য, ‘যত দিন যাচ্ছে, আবহাওয়া পরিবর্তনের প্রভাব ততই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। আমাদের অর্থনীতি এবং সমাজ ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন প্রয়োজন।’ প্যারিস অ্যাকর্ডে উল্লেখিত পদক্ষেপগুলোই বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালতে ইচ্ছুক যুক্তরাষ্ট্রের মতো প্রভাবশালী দেশের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি প্যারিস অ্যাকর্ড থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। ২০২০ সালে চূড়ান্তভাবে তা বাস্তবায়িত হবে। যুক্তরাষ্ট্রের সরে যাওয়ার প্রেক্ষিতে বরং এখন আরও পক্ষ প্যারিস অ্যাকর্ড থেকে সরে যেতে পারে বলে মনে করেন ‘ইউরোপিয়ান ক্লাইমেট ফাউন্ডেশনের’ প্রধান লরেন্স তুবিয়ানা। এদের একজন ব্রাজিলের নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট বোলসোনারো। তিনি নির্বাচনি প্রচারণা চালানোর সময়েই ঘোষণা করে দিয়েছিলেন আবহাওয়া পরিবর্তনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকেই অনুসরণ করবেন। গার্ডিয়ান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিশ্বব্যাংক

১২ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ