Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ফের অনিশ্চয়তায় ব্রেক্সিট পরিকল্পনা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে তার ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে পার্লামেন্টে এমপি’দের ভোটের নির্ধারিত সময় হঠাৎই পিছিয়ে দেয়ায় ফের অনিশ্চয়তায় পড়েছে ব্রেক্সিট পরিকল্পনা। পার্লামেন্টের ভোটাভুটিতে ব্রেক্সিট চুক্তিটি পাস না হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকার কারণেই ভোট পিছিয়ে দিলেন মে। এতে করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার (ব্রেক্সিট) পরিকল্পনা আরো অনিশ্চয়তায় পড়ল। মঙ্গলবারই পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট নিয়ে ভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই সোমবার তা পিছিয়ে দেওয়ার পদক্ষেপে কয়েকটি পরিণতির পট প্রস্তুত হয়েছে। কোনো চুক্তি ছাড়াই বিক্ষিপ্ত ব্রেক্সিট হওয়া থেকে শুরু করে যুক্তরাজ্যের ইইউ সদস্যপদ প্রশ্নে আরেকটি গণভোটও এ পরিস্থিতিতে অসম্ভব নয়। ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে কমন্সে ভোট কখন হবে সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী মে কিছু বলেননি। তবে তিনি বলেন, ২১ জানুয়ারির আগেই ভোট হতে হবে। মে সোমবার ভোট পিছানোর ঘোষণা দিয়ে পার্লামেন্টে বলেন, “আমরা ভোটাভুটি করলে চুক্তিটি সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে প্রত্যাখ্যাত হতে পারে। আর তাই এ সময়ে হাউজে বিভক্তির পথে পা না বাড়িয়ে ভোট পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে।” তবে মে তার চুক্তিটি যে সঠিক সেকথাও জোর দিয়েই বলেছেন। ব্রেক্সিট চুক্তিতে উত্তর আয়ারল্যান্ড নিয়ে এমপি’দের উদ্বেগ আছে বলে মে স্বীকার করেছেন। এমপি’দের এ উদ্বেগ আমলে নিলে এখনো চুক্তিটি পাস করাতে সক্ষম হবেন- এমনটিই বিশ্বাস করেন বলে জানিয়েছেন মে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র খসড়া ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ভোটাভুটির ঠিক একদিন আগে এ সিদ্ধান্ত জানানো হল। ইইউর অন্য সদস্যের অনুমতি ছাড়াই যুক্তরাজ্য ব্রেক্সিট সিদ্ধান্ত বাতিল করতে পারবে কি না তা জানতে চেয়ে ইসিজের রুলিং চেয়েছিলেন ব্রেক্সিটবিরোধী একদল রাজনীতিক। এর পরিপ্রেক্ষিতে এ রুল দিল ইইউ আদালত। মঙ্গলবার পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট চুক্তির ওপর এমপিদের ভোটাভুটির কথাছিল। ধারণা করা হচ্ছে, ব্রিটিশ হাউস অব কমন্সে থেরেসার প্রস্তাবের বিপক্ষে মত দেবেন অধিকাংশ সংসদ সদস্য। এমনটা হলে ভোটাভুটির ২১ দিনের মধ্যে বিকল্প প্রক্রিয়া জানাতে হবে থেরেসাকে। সে ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত চুক্তির প্রতি অটল থাকা, চুক্তির সংস্কার, পুনরায় গণভোট ও ব্রেক্সিট বাতিলের মতো বিকল্প পন্থা রয়েছে থেরেসার হাতে। বেক্সিটবিরোধী রাজনীতিবিদদের একাংশ যুক্তি দেখিয়েছেন, যুক্তরাজ্যের উচিত একতরফাভাবে ব্রেক্সিট স্থগিত করা। তাদের বিরোধিতা করেছে ব্রিটিশ সরকার ও ইইউ। সোমবার ইউরোপিয়ান কোর্ট অব জাস্টিসের জারিকৃত রুলে বলা হয়েছে, একতরফাভাবেই যুক্তরাজ্য ব্রেক্সিট বাতিল করতে পারবে। যুক্তরাজ্যের সদস্যপদ সংক্রান্ত কোনো শর্ত পরিবর্তন না করেই এটা হতে পারে। ইসিজে এক বিবৃতিতে জানায়, বের হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ইইউকে জানানোর পরও কোনো সদস্য রাষ্ট্র তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে পারে। সদস্যপদ প্রত্যাহারজনিত চুক্তিতে পৌঁছানোর আগে কিংবা সদস্যপদ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত জানানোর পর দু’বছর পর্যন্ত সিদ্ধান্ত বদলের সময় পাবে তারা। যদি দুই বছরের ওই সময়সীমা বাড়ানো হয়, তবে বর্ধিত সময় পর্যন্ত সদস্য রাষ্ট্রটি সিদ্ধান্ত বদলের সুযোগ পাবে। তবে আদালত জানিয়ে দিয়েছে সিদ্ধান্ত বদলের ক্ষেত্রে ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ’ করতে হবে। যুক্তরাজ্যের ক্ষেত্রেও সিদ্ধান্ত বাতিলে পার্লামেন্টের অনুমোদন লাগবে। অনুমোদন পাওয়ার পর তাদের ‘দ্ব্যর্থহীন ও নিঃশর্ত’ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে ইইউকে লিখিতভাবে জানাতে হবে। ব্রিটিশদের মধ্যে ব্রেক্সিট নিয়ে রয়েছে প্রবল ভিন্নমত। জরিপে ব্রেক্সিট গণভোট-পরবর্তী সময়ে দেশটির জনগণের মনোভাব পাল্টে যাওয়ার চিত্র দেখা গেছে। তেমনি ব্রেক্সিটবিরোধীদের অনেকে দাবি তুলেছেন আরেকটি গণভোটের। এ কাতারে রয়েছেন থেরেসার মন্ত্রী-এমপিরাও। ব্রেক্সিট চুক্তি চূড়ান্ত করা নিয়ে মতবিরোধের জেরে পদত্যাগ করেছেন দু’জন ব্রেক্সিটমন্ত্রী। থেরেসার চুক্তির বিরোধিতা করে অন্য মন্ত্রণালয়েরও কয়েকজন সরে দাঁড়িয়েছেন। পাশাপাশি মে’কে ব্রিটিশ কনজারভেটিভ পার্টির সংসদীয় প্রধানের পদ থেকে সরাতে আস্থা ভোটের দাবি জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন দলটির বেশ কয়েকজন এমপি। ৪৮ জন দাবি করলেই ডাকা হবে আস্থা ভোট। বিবিসি, রয়টার্স ।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ব্রেক্সিট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ