Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কুমিল্লায় ৬১ বিএনপি-যুবদল-ছাত্রদলের নেতাকর্মীকে আসামি করে আরো দুটি মামলা

চান্দিনা (কুমিল্লা) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৪:৩৫ পিএম

পুরোনো গায়েবিসহ বিভিন্ন মামলার আসামি বিএনপির কর্মী গ্রেপ্তার হচ্ছেন কেউ, জামিন চাইতে গিয়ে কারাগারে যেতে হচ্ছে। আবার কেউ কেউ সম্প্রতি দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে জেলহাজতে রয়েছেন। আবার একই মামলায় অন্যদের জামিন হলেও বিএনপির প্রার্থীদের কারাগারে যাওয়ার ঘটনাও আছে। কেউ পুরোনো নাশকতার বা দুর্নীতির মামলার দন্ড নিয়ে কারাগারে। আর অনেকে উচ্চ আদালতে যাচ্ছেন সাজা স্থগিতের আশায়। সব মিলিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লার বিএনপির প্রার্থী ও নেতাকর্মীরা এখনো থানা, আদালত আর কারাগারের চত্ত্বরে সময় পার করতে হচ্ছেন বলে বিএনপির একাধিক নেতাকর্মীর অভিযোগ।
জামিন নামঞ্জুর হওয়ায় কারাগারে আছেন কুমিল্লা-১০ নাঙ্গলকোট সদর দক্ষিণ আসনের বিএনপি দলীয় প্রার্থী মনিরুল হক চৌধুরী। এদিকে কুমিল্লায় নৌকা প্রতীকের প্রচারণায় হামলার অভিযোগে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক ও বর্তমান কাউন্সিলরসহ বিএনপি-যুবদল-ছাত্রদলের ৬১ নেতাকর্মীকে আসামি করে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যে কারনে বিএনপির নেতা-কর্মীরা এখনো আদালত, থানা আর কারাগারেই চক্কর কাটছেন। দলের টিকিট পেলেও নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তায় বিএনপির বহু নেতা। কুমিল্লা-৬ আদর্শ সদর আসনে বিএনপির প্রচারণার সময় নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, গুলিবর্ষণ এবং বাড়ি ঘর ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সদর আসনে বিএনপি প্রার্থী হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন। বিএনপি প্রার্থী হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন নিজ বাড়িতে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন যে, সদর দক্ষিণ উপজেলা বিএনপিসাধারণ সম্পাদক মাহবুব চৌধুরী নিজ বাসা থেকে আদালতে যাওয়ার সময় সিডি প্যাথ হাসপাতালের সামনে কিছু সন্ত্রাসী তাকে হুমকি দেয়। সেখান থেকে আদালত যাওয়ার পর আদালতের গেইটে পথরোধ করে ১৫/২০ জন সন্ত্রাসী মাহবুব চৌধুরীকে ব্যাপক মারধর করে অপহরণ করে নিয়ে যেতে চায়। তখন তার স্ত্রী ও উপস্থিত জনতা চিৎকার করলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। মাহবুব চৌধুরী বর্তমানে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এদিকে রাজনৈতিক মামলায় কুমিল্লা-১০ নাঙ্গলকোট সদর দক্ষিণ আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রাপ্ত মনিরুল হক চৌধুরীর জামিন বাতিল করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে হাইকোর্ট থেকে পুনরায় জামিন পেলেও জামিনের কাগজপত্র কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় পৌঁছানোর পর পুরোনো দুইটি গায়েবি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এদিকে কুমিল্লায় নৌকা প্রতীকের প্রচারণায় হামলার অভিযোগে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক ও বর্তমান কাউন্সিলরসহ বিএনপি-যুবদল-ছাত্রদলের ৬১ নেতাকর্মীকে আসামি করে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সদর দক্ষিণ মডেল থানায় দায়েরকৃত দুই মামলায় মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সদস্য খোরশেদ আলমের বাদী হওয়া মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১০ ডিসেম্বর বিকাল ৪ টায় বাদী নৌকা সমর্থকদের নিয়ে নগরীরর ২২নং ওয়ার্ডের লক্ষ্মীপুরে গণসংযোগ শেষে পদুয়ার বাজার ফেরার পথে দৈয়ারা রেলগেইট এলাকায় আসামিরা হামলা করে। ওই সময় আসামি রুবেল হোসেন’র ছোড়া গুলিতে কচুয়া গ্রামের জয়নাল আবদীনের ছেলে ছাত্রলীগ কর্মী সায়মন হাসান সানী আহত হয়। মামলায় আসামি করা হয়েছে বিলুপ্ত কুমিল্লা সদর দক্ষিণ পৌরসভা বিএনপির সভাপতি ও ২২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাহ আলম মজুমদার, সেক্রেটারি মামুনুর রশিদ মজুমদার, মহানগর যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান ইমাম মজুমদার, বিলুপ্ত সদর দক্ষিণ পৌরসভা ছাত্রদলের সভাপতি মোবারক হোসেন, ওয়ার্ড বিএনপি নেতা দৈয়ারার মৃত আমীর আলীর ছেলে শাহ জাহান, দূর্গাপুর গ্রামের মমিন মিয়ার ছেলে রুবেল হোসেন, দৈয়ারার মফিজুল ইসলামের ছেলে আল আমিন, শ্রীভল্লবপুরের আর্মি হাসেমের ছেলে রুবেল, দৈয়ারার মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে আ. মান্নান, শ্রীভলবপুরের সুলতান আহমদের ছেলে ফয়েজ উল্যাহ, মৃত আমির হোসেন মুন্সীর ছেলে সাইফুল ইসলাম, ফিরোজ আহমদের ছেলে তুহিন, আ. সোবহানের ছেলে টিটু, উত্তর রামপুর ছয়বাড়ীর মৃত রেসমত আলীর ছেলে জামাল হোসেন, উত্তর রামপুরের মৃত ওমর আহমদের ছেলে সায়েম মজুমদার, ইকবাল হোসেন মজুমদার, মৃত সফিকুর রহমানের ছেলে ইকরাম হোসেন, উত্তর রামপুরের মৃত রেসমত আলীর ছেলে আনোয়ার উল্যাহ মেম্বার, দূর্গাপুরের আবু মুসার ছেলে মানিক মিয়া, মনির হোসেন, মৃত মনু মিয়ার ছেলে মেহেদী, জাঙ্গালিয়ার মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম সুজন, দৈয়ারার মোখলেছুর রহমানের ছেলে মামুনুর রশিদ, জাঙ্গালিয়ার আবুল বাসারের ছেলে সায়মন, মৃত সফিকুর রহমানের ছেলে জাকির হোসেন, কচুয়ার মৃত কোরবান আলীর ছেলে বাবুল মিয়া, মৃত জুলফু মিয়ার ছেলে মোবারক হোসেন, দৈয়ারার মৃত সিরাজ মিয়ার ছেলে হোসেন মিয়া, উত্তর রামপুরের মৃত মোসলেম মিয়ার ছেলে জামাল হোসেন, মৃত অহিদুর রহমানের ছেলে সাদ্দাম হোসেন, আ. গফুরের ছেলে মনির হোসেনসহ অজ্ঞাতনামা ৩০/৪০ জন। ২০নং ওয়ার্ডে লক্ষীনগর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে কবির হোসেন বাদী হয়ে অপর দায়ের করা মামলায় আসামি করা হয়েছে বিলুপ্ত সদর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাবেক কাউন্সিলর হারুনুর রশিদ, কাজীপাড়ার আ. মোতালেব, মো. রনি, দেলোয়ার হোসেন, দিশাবন্দের আবুল আক্তার, নজরুল ইসলাম, বিল্লাল হোসেন, ফারুক, আবু বক্কর, জামাল, শফিকুর রহমান, লক্ষীনগরের আবু তাহের, দিশাবন্দের নাজমুল, লক্ষীনগরের শাহিন, এরশাদ, মাসুম, শাহ আলম, দিশাবন্দের ইবু, রবিন, অদুদ মিয়া, লক্ষীনগরের জোবায়ের, ফজল মিয়া, সাব্বির, মোশারফ, কাজীপাড়ার নিজাম উদ্দীন, মহরম আলী, নাজমুল হোসেন, আজিজুল ইসলাম, দিশাবন্দের সাইফুল ইসলাম, কাজীপাড়ার ফাহিমসহ অজ্ঞাতনামা ৮/১০ জন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিএনপি

১৩ ডিসেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ