Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ভোট দেয়ার সুযোগ পেলেন নৌকার কর্মীদের পরিচিতরা

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৩:০৯ পিএম

নৌকার কর্মী আর তাদের পরিচিতরাই ভোট দেয়ার সুযোগ পেলেন। বাকিদের ফিরে যেতে হলো। ভোর থেকে ভোটকেন্দ্রের সামনে নৌকার ব্যাইজধারীরা। ভোটারদের চেহারা দেখে মিলেছে কেন্দ্রে ঢুকার অনুমতি। তারাই ভোট দেয়ার সুযোগ পেয়েছেন। বেশিরভাগ কেন্দ্রে জোর করে সিল মেরে বাক্স ভর্তি করারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল (রোববার) চট্টগ্রাম-৯-১০ ও ১১ সংসদীয় আসনের কয়েকটি ভোটকেন্দ্র ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। ফজরের নামাজের পর ভোটকেন্দ্রের সামনে বিপুল সংখ্যক মানুষের ভিড় দেখা যায়। তার আগেই সেখানে অবস্থান নেন নৌকার কর্মীরা। মানুষের জটলায় ঢুকে ভয়ভীতি আর হুমকি-ধমকি দিয়ে সরিয়ে দেয়া হয় বেশিরভাগ ভোটারদের। হতাশ হয়ে ফিরে যান ভোট দিতে না পারা ভোটারেরা। তবে রাস্তায় যথারীতি সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশের টহল ছিল। বেশিরভাগ কেন্দ্রে ছিল না ধানের শীষের কোন এজেন্ট। পতেঙ্গা এলাকায় দুই একটি কেন্দ্রে এজেন্ট ছিল সেখানে ভোটও সুষ্ঠু হতে দেখা গেছে।
চট্টগ্রাম পলিটেকনিক এলাকার বাংলাদেশ কোরিয়া টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারের মহিলা ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার এসএম মেজবাহ উদ্দিন জানান, সকালে ভোটারদের উপস্থিতি বেশি ছিল। প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা সাতটি বুথে এক হাজার ভোটগ্রহণ করা হয়। এরপর থেকে ভোটারের উপস্থিতি কমে যায়। তিনি জানান, নৌকার কর্মীরা রাত থেকে সকাল পর্যন্ত কয়েক দফা ব্যালট পেপার কেড়ে নিয়ে তাতে সিল মারতে চায়। কিন্তু তিনি তাতে রাজি হননি। তবে কতক্ষণ এভাবে ধরে রাখবেন তা নিয়েও দুশ্চিন্তা ছিল তার। কেন্দ্রের ভেতরে নৌকার কর্মীরা গিজগিজ করছিল। গেইটে দেখা যায়, নৌকার কর্মীদের অবস্থান। পরিচিত ভোটারদের ভেতরে যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছে তারা। বাকিদের হুমকি-ধমকি দিয়ে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। একই চিত্র পাশের পুরুষ ভোটকেন্দ্রেও। সেখানে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানান, সাতটি বুথে দুই ঘণ্টার কমসময়ে ১২শ’ ভোট কাস্ট হয়। ১০টার পর কেন্দ্রে ভোটার ছিল না। গেইটে যথারীতি নৌকার কর্মীদের অবস্থান।
পিএইচআমিন একাডেমী স্কুলে চার হাজার ৫৯৮ ভোটের মধ্যে সকাল ৯টায় আড়াই হাজার ভোট কাস্ট হয়ে যায়। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মধুসূদন দাশ দাবি করেন, খুব দ্রুতই ভোট হয়ে গেছে। নগরীর বারিক মিয়া বহুমূখী স্কুল কেন্দ্রে বিএনপির এজেন্ট পাওয়া গেছে। প্রিসাইডিং অফিসার এসএম জোবায়ের হাসান জানান, সকাল ১১টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় এক হাজার ভোট কাস্ট হয়েছে। ওই কেন্দ্রে ভোট দেন নৌকার প্রার্থী এম এ লতিফ। ১১টার পর নৌকার কর্মীরা জোর করে ভোট দিতে চাইলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ডাকেন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা। মুহূর্তে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। দক্ষিণ হালিশহর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রেও বিএনপির এজেন্ট ছিল। বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ওই স্কুলের তিনিটি কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণ ভোট হয়। একটি বুথে দেখা যায়, ৫২০ ভোটের মধ্যে তখনও পর্যন্ত মাত্র ৩৫ ভোট কাস্ট হয়। নগরীর নিউ ঝাউতলা স্কুলে সকালেই অনেকের ভোট দিয়ে দেয়া হয়। ব্যাংক কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান জানান, নৌকার কর্মীদের বাধা ঠেলে কেন্দ্রে ঢুকে দেখেন তার ভোট দেয়া হয়ে গেছে। এ সময় কয়েকজন ভোটারের চেঁচামেচিতে প্রিসাইডিং অফিসার তিনিসহ ওই ভোটারদের ভোট দেয়ার সুযোগ দেন। জামালখানের লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কয়েকজন ভোটার অভিযোগ করেছেন, ইভিএমে তাদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেয়ার সাথে সাথে গোপন কক্ষে বসে থাকা কর্মীরা নৌকায় ভোট দিয়ে দেয়। এ খবর পেয়ে অনেকে ভোট দিতে যায়নি সেখানে। সকাল থেকে একটি মেশিন নষ্ট থাকায় ভোট নেয়া বিঘ্নিত হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ