Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

স্মার্ট পেট্রোল টিমের জিরো টলারেন্স

সুন্দরবনের বনজ সম্পদ ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ

কয়রা (খুলনা) থেকে মোস্তফা শফিক | প্রকাশের সময় : ৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

সুন্দরবন থেকে সুন্দরি, পশুরসহ বিভিন্ন কাঠ, কুমির, হরিণ ও বাঘ পাচার রোধে বন বিভাগ প্রতিমাসে ২০ দিন স্মার্ট পেট্রোল টিম পাহারা দিচ্ছে। বনজ সম্পদ রক্ষার্থে তারা জিরো টলারেন্স অবস্থান নিয়েছে। দির্ঘ ১ বছর আগে থেকে বন এলাকায় পাহারার কাজ শুরু হয়েছে। মাছ, কাঁকড়া ও মধু ছাড়া বন এলাকায় অন্যান্য সকল সম্পদ আহরণ নিষিদ্ধ।

বন বিভাগ সুত্রে জানা যায়, বাগেরহাটের শরণখোলা, মংলা, রামপাল, সাতক্ষীরার শ্যামনগর, খুলনার কয়রা, পাইকগাছা, দাকোপ উপজেলায় একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সুন্দরবন থেকে সুন্দরী ও পশুর কাঠ পাচার করে থাকে। পাশাপাশি কুমির, হরিণ ও বাঘ পাচারের সাথেও এসব এলাকার এক শ্রেণির মানুষ জড়িত। বিশেষ করে শরণখোলার বলেশ্বর নদী পার হয়ে অপরাধীরা সম্পদ লুট করে নিরাপদ স্থানে চলে যায়। বনজ সম্পদ পাচার রোধে সল্প সংখ্যক লোকবল নিয়ে এটি রোধ করা খুবই দুরহ ব্যাপার হয়ে দাড়ায়। এ দিকে লক্ষে রেখে গত ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাস থেকে স্মার্ট পেট্রোল টিম পাহারা দিচ্ছে গোটা সুন্দরবন। আর খুলনা রেঞ্জের স্মার্ট টিম বরাবরই সফলতা দেখাতে সক্ষম হয়েছে। খুলনা রেঞ্জের টিম লিডার-১ মোঃ সুলতান মাহমুদ টিটু ও টিম লিডার-২ মোঃ মিঠু তালুকদার বলেন, তারা সুন্দরবনের সম্পদ রক্ষায় এক প্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে টহল কার্যক্রম করে থাকে। এতে করে সুন্দরবনে অপরাধ প্রবতনা অনেক অংশ কমে এসেছে। খুলনা রেঞ্জের সহকারি বন সংরক্ষক (এসিএফ) মোঃ আবু সালেহ বলেন, সুন্দরবনের স্মার্ট পেট্রোলিং বনজ সম্পদ রক্ষায় আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি সার্বক্ষনিক স্মার্ট টিমের কার্যক্রম তদারকি করে থাকেন বলে জানান।

খুলনা সার্কেলের বন সংরক্ষক মো. আমির হোসাইন চৌধুরী এ প্রতিবেদককে বলেন, খুলনা, শরণখোলা, সাতক্ষীরা ও চাঁদপাই রেঞ্জে ৩২ জন সশস্ত্র বনপ্রহরী মাসে ২০ দিন পাহারা দিচ্ছে। প্রতিদলে সদস্য সংখ্যা ৮/১০ জন। তাদের কাছে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়া পর্যাপ্ত জ্বালানী ও দ্রুতক্ষমতা সম্পন্ন জলযান রয়েছে। তার দেয়া তথ্যমতে, শুধুমাত্র ১ মাসে চোরাই শিকারীদের ৫৯ টি নৌকা ও ৩৯ জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়। সুন্দরবনের ৫২ শতাংশ এলাকা অভায়রণ্য। বনের সাথে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, শরণখোলা এলাকার একাধিক ব্যক্তি কুমির পাচারের সাথে সম্পৃক্ত। শরণখোলা থানার রেকর্ড অনুযায়ী, ২০০৮ সাল থেকে গেল বছর পর্যন্ত কুমির শিকারের সাথে জড়িত থাকায় ২৩ জনের নামে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। সুন্দরবনের দু’টি বিভাগকে ঘিরে অন্তত কয়েকটি গ্রুপ ও সিন্ডিকেট চক্র সক্রিয় রয়েছে। ৫ লাখ বর্গ কিলোমিটার এলাকার সুন্দরবনের এই সিন্ডিকেটের হাতে কুমির, কচ্ছপ, বানর, ডলফিন, হরিণ ও বাঘ নিরাপদে রাখার জন্য স্মার্ট পেট্রোলিং গ্রুপ নিরলশভাবে কাজ করে যাচ্ছে। পশ্চিম বন বিভাগের ডিএফও মোঃ বশিরুল আল-মামুন বলেন, সুন্দরবনের স্মার্ট পেট্রোলিং গ্রুপ সুন্দরবনের সম্পদ রক্ষায় যে সফলতা দেখিয়েছে তা খুবই ভাল। বর্তমানে পেট্রোলিং কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে তিনি জানান।



 

Show all comments
  • juwel ৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ৯:০৪ পিএম says : 0
    ৫ লাখ বর্গ কিলোমিটার হবে না মনে হয়, ৫/৬ হাজার বর্গ কিলোমিটার হবে
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সুন্দরবন

১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ