Inqilab Logo

বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইসলামী কর্মতৎপরতা

প্রকাশের সময় : ১০ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ছাত্র ও শ্রমিক সমাবেশ
আমিরুল মুজাহিদীন হযরত মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই) বলেছেন, সমাজ ও মানবতা যখন পাপাচার ও গোনাহের অন্ধকারে ডুবে যায় তখনই যুগে যুগে নবী-রাসূলদের পাঠিয়ে আল্লাহ মানুষদের হেদায়াত ও আলোর পথ দেখিয়েছেন। শেষ যুগে মহানবী বিশ্বনবী আকায়ে নামদার হযরত মুহাম্মদ মুস্তাফা (সা.)-এর আর কোনো নবী আগমন করবেন না। আজকে মহানবী (সা.)-এর অবর্তমানে তাঁর পবিত্র দায়িত্ব ও উত্তরসূরির ভূমিকা রাখছেন হক্কানি পীর-মাশায়েখ ও ওলামায়ে কেরাম। সোনার ও বিশুদ্ধচারী মানুষ হিসেবে তৈরি হতে হলে হক্কানি পীর-মাশায়েখ ও ওলামায়ের কেরামের সান্নিধ্য লাভ করে মহান আল্লাহ তায়ালার প্রকৃত সন্ধান এবং রাসূলের জীবনাদর্শের অনুসরণ করতে হবে। চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ জাম্মুরি মাঠে তিন দিনব্যাপী বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল ও হালকায়ে জিকিরের উদ্বোধনী বয়ানে আমীরুর মুজাহিদীন হযরত মাওলানা সাইয়েদ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই উপরোক্ত কথা বলেন।
পীর সাহেব চরমোনাই আরও বলেন, ইসলাম একটি পরিপূর্ণ ও মানুষের স্বভাববান্ধব জীবনব্যবস্থা। ইসলামে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রসহ বিশ্বমানবতার চারিত্রিক, অবকাঠামো ও প্রাযুক্তিক উন্নয়নের দিকনির্দেশনা রয়েছে। ইসলাম রাষ্ট্রীয় আদর্শ হিসেবেও ন্যায়-ইনসাফ ও ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের স্বাধীনতা, নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করে।
চরমোনাই মাহফিলে আখেরি মুনাজাত
সম্প্রতি চরমোনাই পীর আলহাজ হযরত মাওলানা মুফতি সৈয়দ মোঃ রেজাউল করীম এর পরিচালনায় আখেরী মোনাজাতের মধ্যদিয়ে তিন দিনব্যাপী ফালগুনের বাৎসরিক মাহফিল শেষ হয়েছে। মাহফিলে আখেরি বয়ানকালে পীর সাহেব বাংলাদেশের সকল হক্কানী ওলামায়ে কেরামকে এক প্লাটফর্মে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আগত লক্ষ লক্ষ মুসল্লি সমাগত হয়। প্রচ- ঝড়বৃষ্টি-কাদা হলেও মাহফিলের প্যান্ডেলের ভিতর আগত মুসল্লিরা বয়ান শোনেন এবং আখেরি মোনাজাত শেষ করে বাড়ি ফিরেন। মাহফিলে আগত মুসল্লিদের অধিকাংশ নতুন লোক চিশতিয়া সাবেরিয়া তরীকায় বয়াত গ্রহণ করেন এবং পীর সাহেব তরীকার নিয়ম নীতি মুরিদানদের বাতলে দেন। যারা আল্লাহ ও রাসূলের নীতি অনুসরন করে না তারা কেয়ামতের দিনে নবীজীর সুপারিশ পাবে না। যারা বয়াত গ্রহণ করবেন তারা তরীকার পাঁচ ওষুধ ও ছবক ঠিক মতন আদায় করবেন। পরিপূর্ণ ও সহী শুদ্ধভাবে নামাজের জন্য কেরাত শিক্ষা করা ফরজ। যারা আত্মাকে পবিত্র করতে পারবে তারা বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে। পীর সাহেব ইমানের উপরে পরিপূর্ণভাবে মজবুত থাকার জন্য নির্দেশ দেন। আল্লাহ পাকের জিকির বেশি বেশি করলে কলবের ময়লা দূর হয়। কলব পরিষ্কার হওয়ার একমাত্র পথ হল জিকির। পীর সাহেব বলেন সুবিধাবাদী নামধারী মুসলমানরাই ইসলাম, মুসলমান, আল্লাহর রাসূল (সঃ), কুরআন-হাদীস, মসজিদ-মাদরাসা, দাড়ি-টুপিসহ ইসলামী পোশাক-পরিচ্ছদের দুশমন। ইসলামের বিরুদ্ধে যারা অপপ্রচার চালাচ্ছেন এ ব্যাপারে সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান। আখেরি মোনাজাতে পীর সাহেব বিশ্বের মুসলিম উম্মাহর জন্য দোয়া করেন এবং বাংলার জমিনে ইসলামী হুকুমত কায়েমের জন্য সকলের সহযোগিতা ও দোয়া কামনা করেন। আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে গোটা এলাকাজুড়ে নদীর আশপাশে বিস্তীর্ণ এলাকা বাগানবাড়ির আঙ্গীনাসহ কোন স্থানেই তিল পরিমাণ ঠাঁই ছিল না। ২৫ ফেব্রুয়ারি চরমোনাই পীর সাহেবের আমন্ত্রণে বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও হেলিকপ্টারযোগে সৌদি আরবের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ডঃ ইব্রাহিম আব্দুল আজিজ আল জায়েদ, সৌদী রাষ্ট্রদূত ও অন্যান্য কর্মকর্তাগণ আসেন। বেলা ১২টায় চরমোনাই ময়দানে আগমণ করলে পীর সাহেব মুফতি সৈয়দ মো: রেজাউল করীম, নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মো: ফয়জুল করীম ও আলিয়ার অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মো: মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী তাদেরকে স্বাগত জানিয়ে লাল গালিচা সংবর্ধনা প্রদান করেন। পরে তারা জামিয়ার অধ্যক্ষের কার্যালয় ও মাহফিলের প্যান্ডেলসহ বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে বাদ জোহর মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ড. ইব্রাহিম আব্দুল আজিজ মুসলিম দেশগুলোর সাথে বন্ধুত্ব রাখার সুবাদেই চরমোনাই পীরের আমন্ত্রণে এ মহাসম্মেলনে আসতে পেরে তিনি নিজেকে ধন্য মনে করেন এবং সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে সকলকে মোবারকবাদ জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসলামী কর্মতৎপরতা
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ