Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পোশাক শ্রমিকরা রাস্তায়

এক মাসের মধ্যে সমাধান : বাণিজ্যমন্ত্রী ,সাভার-আশুলিয়ায় সংঘর্ষে আহত অর্ধশত, ১৫ কারখানা ছুটি ঘোষণা, বিজিবি মোতায়েন , মিরপুরের কালশী, বিমানবন্দর সড়ক , উত্তরা ও গাজীপুরে বিক্ষোভ

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১০ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

সরকার নির্ধারিত বেতনকাঠামো বাস্তবায়নের দাবি ও সাভারে পুলিশের গুলিতে শ্রমিক নিহতের ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। গতকাল বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চতুর্থদিনের মতো শ্রমিকরা রাজধানীর মিরপুরের কালশীর ২২ তলা ভবনের সামনে, বিমানবন্দর সড়ক, উত্তরা, ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক, সাভারের হেমায়েতপুর, উলাইল, বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়ক, বিশমাইল-জিরাবো সড়ক, কাঠগড়া, আশুলিয়া, জামগড়া, নরসিংহপুর, জিরাবোসহ প্রায় ১৫টি স্থানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধের চেষ্টা চালায়। এতে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিতে চাইলে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে।
এ সময় পুলিশ টিয়ারশেল, রাবার বুলেট, জলকামান ও লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সকাল ৮টা থেকে শুরু করে দুপুর ২টা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে থেমে থেমে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এ সময় রাজধানী ও সাভারে ১০টি কারখানায় ভাঙচুর করা হয়। এরই মধ্যে অর্ধশত কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাভার ও আশুলিয়ায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। কারখানাগুলোর সামনে পুলিশের জলকামানসহ সাঁজোয়া যান সর্তক অবস্থায় রাখা হয়েছে। এ ছাড়া গাজীপুর সিটি করপোরেশনের গাজীপুরা ও নাওজোড়সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা কর্মবিরতি করে বিক্ষোভ করেছে।
গত মঙ্গলবার বিকেলে শ্রমিকদের দাবি নিয়ে আড়াই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন বাণিজ্যমন্ত্রী, শ্রম প্রতিমন্ত্রী, শ্রমিকদের প্রতিনিধি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিরা। গতকাল বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী বলেন, আগামী এক মাসের মধ্যে গার্মেন্ট শ্রমিকদের সমস্যার সমাধান করা হবে। নতুন বেতনকাঠামোর কারণে কোনো শ্রমিকের যদি বেতন কমে যায়, তাহলে তা আগামী মাসের বেতনের সঙ্গে সমন্বয় করে পরিশোধ করা হবে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এ ধরনের আন্দোলনে অনেক সময় বাইরের লোক ঢুকে যায়। সে বিষয়টি সরকার কঠোরভাবে মনিটর করছে।
স্টাফ রিপোর্টার, সাভার জানান, বিভিন্ন দাবিতে সাভার ও আশুলিয়ায় কয়েকটি জায়গায় শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে অন্তত অর্ধশত শ্রমিক আহত হয়েছে। সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছে শ্রমিকরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সাভারের উলাইল মহল্লায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়াও শ্রমিক অসন্তোষের কারণে অন্তত ১৫টি কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে স্টান্ডার্ড গ্রুপের তিনটি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে মূল ফটকে নোটিশ ঝুলিয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া হেমায়েতপুরের ডার্ড গ্রুপ, উলাইলের আনলিমা, আল-মুসলিম গ্রুপ, আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকায় টেক্সটাউন গার্মেন্টস কারখানাও একদিনের ছুটি ঘোষণা করেছে।
মঙ্গলবার আনলিমা কারখানার শ্রমিক সুমন মিয়ার রহস্যজনক মৃত্যু হয়। তার বুকের বাম পাশে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তবে তার মৃত্যু পুলিশের গুলিতে এমন কথা শুনা গেলে পুলিশ তা অস্বীকার করেছে। সুমনের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে কারখানার মূল ফটকের সামনে ব্যানার টাঙ্গিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বুধবার বেলা ১১টার দিকে পৌর এলাকার উলাইলে অবস্থিত আল-মুসলিম গ্রুপের পোশাক কারখানা থেকে শ্রমিকরা বেরিয়ে আসে। তখন পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের তাদের সরিয়ে দিতে দেখা গেলেও কিছুক্ষণ পর শ্রমিকরা কারখানার সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ লাঠিচার্জ, রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে শ্রমিকরা চলে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এরপর সড়কে জলকামান ও পুলিশের বিশেষ সাঁজোয়া যান মহড়া দিতে দেখা গেছে।
সাভার মডেল থানার ওসি আবদুল আউয়াল জানান, শ্রমিকরা সরে যাওয়ার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পরে আল-মুসলিম কর্তৃপক্ষ কারখানাটি এক দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। এর আগে সকালে হেমায়েতপুরের স্টান্ডার্ড গ্রুপের শ্রমিকরা হেমায়েতপুর এলাকার ট্যানারি-হেমায়েতপুর সড়ক অবরোধ করে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে এবং কারখানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। সেখানেও শ্রমিকদের সাথে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে কর্তৃপক্ষ কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শ্রমিক জানায়, নতুন বেতন কাঠামোতে মজুরি বৈষম্যের কারণে তারা আন্দোলন করছে। সাভারের কাঠগড়া, জিরাবো ও নরসিংহপুর, হেমায়েতপুর, উলাইলসহ প্রায় ১০টি স্পটে শ্রমিকদের সাথে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশসহ প্রায় অর্ধশত শ্রমিক আহত হয়।
এর আগে সকাল ৭টায় দিকে আশুলিয়ার আব্দুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়কের পাশের বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। তখন তারা সড়কে চলাচলরত ৮ থেকে ১০টি যানবাহনের কাচ ভাঙচুর করে। তাদেরকে ঠেকাতে পুলিশ মারমুখী হলে শ্রমিকদের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ টিয়ারশেল ও ব্যাপক লাঠিচার্জ করে সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। সকাল সাড়ে ১০টায় বেরন সরকার মার্কেট, ছয়তলা, জামগড়া, শিমুলতলা ও ইউনিক এলাকার কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা তাদের কর্মস্থল এর উৎপাদন বন্ধ রেখে রাস্তায় নেমে আসে। এসময় শ্রমিকরা পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘটনায় ওই সড়কে চলাচলরত দূরপাল্লার শাহ ফতেহ আলী পরিবহন (ঢাকা মেট্রো ব-১৪-৪২৫৩), সিমেন্ট ভর্তি কাভার্ডভ্যান (ঢাকা মেট্রো উ-১১-৪৮৯০) পাজেরো জিপ (ঢাকা মেট্রো ঘ- ১৩-২২১৮), মিনিবাসসহ (বরিশাল জ-১১-০০৫৫) ১৫-২০টি গাড়ি ভাঙচুর করে।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা একপর্যায়ে ইউনিক ও শিমুলতলা পলমল গ্রুপ এলাকা থেকে বিক্ষোভ নিয়ে জামগড়া চৌরাস্তায় এলে পুলিশের একটি দল তাদের বাধা দেয়। তখন পুলিশ ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ শুরু করলে তারা চলে যায়। আশুলিয়ার শিমুলতলা এলাকায় শ্রমিকরা রাস্তায় বড় বড় পাথর ও ময়লা স্ত‚পের বস্তা ফেলে গাড়ি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। সকাল থেকে ওই এলাকার সেড ফ্যাশন, উইন্ডি গ্রুপ, স্টালির্ং অ্যাপারেলস, এএম ডিজাইন, হিয়ন অ্যাপারেলস, দি ড্রেস আইডিয়াস, পলমল গ্রুপসহ কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ দেখিয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে। আশুলিয়ার সংঘর্ষের ঘটনায় ১৫ শ্রমিক বেরন এলাকার নারী ও শিশু স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়েছে।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, তাদের চিকিৎসাকেন্দ্রে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ১৫ শ্রমিক আহতাবস্থায় এসেছে। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
কালশীর সড়কে শ্রমিকরা
দাবি মেনে নেয়ার দাবিতে চতুর্থ দিনের মতো গতকাল বুধবার সকাল থেকেই মিরপুরের কালশী এলাকার রাস্তায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে শ্রমিকরা। গতকাল সকাল থেকে উত্তরায় শ্রমিকরা সড়কে নামলেও যান চলাচলে তেমন কোন বাধার সৃষ্টি হয়নি। সকাল ৯টা থেকে বিক্ষোব্ধ শ্রমিকরা সড়কে নামলে কালশীতে মূল সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় আশপাশের সড়কে যানবাহন ডাইভারশন করে দেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ অবস্থা চলে দুপুর ১টা পর্যন্ত। অন্য দিকে দক্ষিণখান এলাকায় বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিক গতকাল সকালে সড়ক অবরোধ করে। পরে পুলিশ দ্রুত তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পরে ওই এলাকায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়। শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের জন্য সরকার ঘোষিত নতুন বেতনকাঠামো নির্ধারণ করলেও মালিকপক্ষ তা দিচ্ছে না। নতুন বেতনের দাবি জানালেও উল্টো হুমকি-ধামকি দেয় তারা।
কালশী এলাকায় শ্রমিকদের নেতৃত্ব দেয়া বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির নেতা প্রদীপ রায় বলেন, আমাদের দাবি গত নভেম্বরেই মানা হয়েছে বলে জানানো হয়েছিল। তখন বলা হয়েছিল, ডিসেম্বর থেকে বকেয়া পরিশোধসহ অন্যান্য দাবি মানা হবে। জানুয়ারি মাসের বেত নেই তা প্রমাণিত হওয়ার কথা। কিন্তু আমরা দেখলাম, সেসব দাবি মানা হয়নি। এখন আবার তারা একমাসের আশ্বাস দিচ্ছেন। কিন্তু এই একমাসেই যে দাবি পূরণ হবে, তার নিশ্চয়তা কী? তাই আমরা মালিকের লিখিত প্রতিশ্রুতি পেলে তবেই রাস্তা থেকে সরব।
আন্দোলনকারী শ্রমিক জলিল আহমেদ বলেন, আমরা টিভিতে দেখেছি, সরকার আমাদের দাবি মেনেছে। কিন্তু যিনি বাস্তবায়ন করবেন সেই মালিক এখন পর্যন্ত আমাদের কোনো আশ্বাস দেননি। তাহলে আমরা কিসের ভিত্তিতে বুঝব যে আমাদের দাবি মালিক মেনে নিয়েছে?
আরেক শ্রমিক জহুরুল হক বলেন, গতকাল তারা বলেছেন, বুধবার থেকে কোনো শ্রমিক রাস্তায় নামলে সে শ্রমিক নয়, সন্ত্রাসী। তার মানে আমাদের দাবি আদায়ে রাস্তায় নামার পথ বন্ধ করে দেয়া হবে। নামলে কি তারা সন্ত্রাসী বলে আমাদেরকে হত্যা করবে, যেভাবে গতকাল সাভারে আমাদের এক ভাইকে হত্যা করেছে? আমরা কি তাহলে আমাদের জীবন বাঁচাতে কোনো দাবি করতে পারব না? তিনি আরো বলেন, কাল (মঙ্গলবার) পুলিশ যে শ্রমিকদের ওপর হামলা করেছে, সেটার বিচারসহ ১৮টি দাবি নিয়ে আমরা রাস্তায় নেমেছি। তবে আমরা কোনো ভাঙচুর কিংবা অগ্নিসংযোগ অথবা সন্ত্রাসী কোনো কর্মকান্ড গত তিন দিন করিনি, আজো করব না।
পল্লবী থানার ওসি (অপারেশন) এমরানুল ইসলাম জানান, সকাল থেকেই কালশীর মূল সড়কে ২২তলা গার্মেন্টস ও স্ট্যান্ডার্ড গার্মেন্টসের শ্রমিকরা অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। শ্রমিকদের বিক্ষোভের কারণে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। প্রাপ্য মজুরি আদায়ে তাদের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে বারবার বুঝানো হয়। গার্মেন্টস মালিকরাও এসে শ্রমিকদের আশ্বস্ত করেন। একপর্যায়ে আশ্বস্ত হয়ে শ্রমিকরা বেলা ১টার দিকে সড়ক থেকে সরে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে।
গাজীপুরে মহাসড়ক অবরোধ
গাজীপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, পুলিশ ও শ্রমিকরা জানায়, বুধবার সকালে গাজীপুরের টঙ্গীর গাজীপুরা এলাকায় হপলোন অ্যাপারেলস লিমিটেড ও আশেপাশের কারখানার শ্রমিকেরা উৎপাদনে না গিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। একই দাবিতে নাওজোড়ের দিগন্ত সোয়েটার কারখানাসহ বেশ কয়েকটি কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করে রাস্তায় নেমে আসে। একপর্যায়ে তারা মহাসড়কের ওপর পরিত্যক্ত টায়ারে অগ্নিসংযোগ করে। এতে ঢাকা ময়মনসিংহ ও ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবরোধ সৃষ্টি হয়। সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের নাওজোড়, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুরা, সাইনবোর্ড এলাকায় থেমে থেমে অবরোধ চলতে থাকে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম বলেন, সর্বোচ্চ মিনিট দশেকের মতো অবরোধ ছিল। খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ, মেট্রোপলিটন পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। এতে শ্রমিকদের সাথে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। কয়েক রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়। পরে বেলা ১১টার দিকে উভয় সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। কোনো পুলিশ সদস্য সাংবাদিকদের ওপর আঘাত করেনি।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে টঙ্গী, গাজীপুরা, হোতাপাড়া, কোনাবাড়ী ও কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকায় চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়ন করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে যতক্ষণ প্রয়োজন হয় বিজিবি ততক্ষণ মোতায়েন থাকবে।



 

Show all comments
  • Mohammed Shah Alam Khan ১০ জানুয়ারি, ২০১৯, ১১:৪৬ পিএম says : 0
    আমাদের তোফায়েল ভাই যখন বানিজ্যমন্ত্রী তখন মেনন সাহেবের নিয়ন্ত্রিত একজন নেতা যিনি পোষাক শ্রমিকদের সর্বে সর্ববা বিদেশী টাকায় ঢুবে থাকেন। যার নামে মহিলা শ্রমিকেরা সম্ভ্রমহানীর মামলা করেও ক্ষমতাসীনদের চাপে পরে মামলা আপোশ করে। সেই ক্ষমতাশালী নেতা একজন শ্রমিকের লাশ নিয়ে তার মৃত্যুকে মিথ্যা ভাবে সরকারের ঘাড়ে চাপিয়ে আমিরাকার সাথে আমাদের যে বানিজ্য চুক্তি পোষাক শিল্পের উপর ছিল সেটা বাতীল হয়েছিল ঐ নেতার লেখা লেখির কারনে। এখনও আমদের সরকার আমেরিকার প্রচুর শর্ত মানার পরও আমিরিকার সরকার নানা বাহনা করে তাদের সেই আগের দেয়া সুযোগ নতুন করে নবায়ন করছে না। তখন এই মেনন সাহেবই সেই নেতাকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে তার নিজের স্বার্থ রক্ষার্থে এসব করে দেশের ক্ষতি করেছিলেন। মন্ত্রিত্ব হারিয়ে এখন আবার সেই একই পায়তাড়ায় নেমে সরকারকে নাজেহাল করার কায়দা পুরানো পদ্ধতীতে ওনারা করছেন বলে আমার মনে হয়ে। গতবারের মত করে আবার সেই লাশ... আমি জানি এটা পুলিশের গুলেতে নয় ওদের বানানো অভিযোগ আগেরই মত করে। হয়ত প্রাক্তন মন্ত্রীর সাথের যারা এখনও ক্ষমতায় আছেন তারাও এই খেলায় জড়িত আছেন বলেই শ্রমিক পুলিশের গুলিতে... বিষয়টা এখন পরিষ্কার না হয়ে ঘুড়পাক খাচ্ছে... আমার মনে হয় ওনারা একই কায়দায় পানি ঘোলা করে তাদের স্বার্থ সিদ্ধ করার মতলবে আছে... প্রকাশ সম্ভবত গত ’১৬ সালে একই ভাবে অগ্রীম বেতন নির্ধারণের বায়না তুলে আশুলিয়ায় শ্রমিক অসুন্তুষ্টের কারনে কারখানা বন্ধ হওয়া শুরু হয়েছিল। সেইসময়ে এই মন্ত্রীকে নিয়ে আমি সরাসরি ভাবে পত্রিকায় মন্তব্য করেছিলাম আজকের মতকরেই এবং নেত্রী হাসিনাকে নিজ হাতে বিষয়টা দেখার অনুরোধ করেছিলাম। জননেত্রী শেখ হাসিনা এরপর বিষয়টা সুনিপুন ভাবে সমাধান করেছিলেন। আমি আশা করবো এবারো কওমি জননী শেখ হাসিনা দেশের সমস্ত পোষাক শিল্পের শ্রমিকদের স্বার্থে বিষয়টি নিজের হাতে নিয়ে ব্যাবস্থা গ্রহণ করে এসব দেশের শত্রুদেরকে কঠিন হাতে দমন করে পরিস্থিতি শান্ত করবেন ইনশ’আল্লাহ। আল্লাহ্‌ আমাদের জনপ্রিয় দেশ দরদী কওমি জননী শেখ হাসিনাকে তার নিজের পাশে থাকা এসব কুচক্রীদের হাত থেকে রক্ষা করুন। আমিন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পোশাক

২৩ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ