Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

তাসকিনের ম্যাচে আফিফ দ্যুতি

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-টোয়েন্টির ষষ্ঠ আসরে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে চিটাগং ভাইকিংসকে ৫ রানে হারিয়েছে সিলেট সিক্সার্স। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৬৮ রান করে সিলেট। জবাবে ৭ উইকেটে ১৬৩ রান করতে পারে চট্টগ্রাম। শুরুর ধাক্কা সামলে ব্যাট হাতে দারুণ অবদান রাখায় আফিফ হোসেনকে প্রসংশায় ভাসিয়েছেন দুই দলের অধিনায়ক।
সিলেটের হয়ে ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ ৫৯ রান করেন অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার ও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অপরাজিত ৫২ করেন নিকোলাস পুরান। ২৮ বলে ৪৫ রানের আরেক মূল্যবান ইনিংস আসে আফিফ হোসেনের ব্যাট থেকে। পরে বল হাতে চার উইকেট নিযে সিলেটের জয়ে বড় অবদান রাখেন তাসকিন আহমেদ।
১৬৯ রানের লক্ষ্যে প্রথম ওভারেই মারকুটে আহমেদ শেহজাদকে হারায় ভাইকিংস। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দলের হাল ধরেন ক্যামরন ডেলপোর্ট ও মোহাম্মদ আশরাফুল। বিপিএলে নিজের প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে রান না পেলেও এই ম্যাচে আশা দেখাচ্ছিলেন বড় ইনিংসের। সেই সঙ্গে ডেলপোর্টও দলের রান সচল রাখছিলেন। তাদের ৫৭ রানের জুটি ভাঙে দুজনের ভুল বোঝাবুঝিতে ব্যক্তিগত ২২ বলে ৩৮ রান করা ডেলপোর্ট রান আউটের মাধ্যমে। একটু পরে সাজঘরের পথ ধরেন আশরাফুলও। ২৩ বলে ব্যক্তিগত ২২ রান করে তাসকিনের বলে আউট হন তিনি। ভাইকিংস অধিনায়ক মুশফিকও এদিন ক্রিজে টিকতে পারেননি। দলীয় ৭৪ রানে কাপালির বলে পুরানের হাতে ক্যাচ তুলে আউট হন মুশফিক।
তার বিদায়ে এই ম্যাচ জয়ের আশা অনেকটাই ডুবে যায় ভাইকিংসের। সিকান্দার রাজার সঙ্গে ২০ রানের জুটি গড়লে কাপালির বলে বোল্ড হন মোসাদ্দেক। ফ্রাইলিঙ্ক ও রাজা চেষ্টা চালালেও সেটা প্রতিহত করেন সিক্সার্স বোলাররা। দুইজন মিলে গড়েন ৩৭ রানের জুটি। তবে ব্যক্তিগত ৩৭ রানে রাজা আউট হন তাসকিনের বলে। শেষদিকে ভাইকিংসকে জয়ের স্বপ্ন দেখান ফ্রাইলিঙ্ক। শেষ ওভারে দরকার ছিল ২৪ রান। ২ ছক্কায় ১৮ রান নিতে পারে চট্টগ্রাম। টুর্নামেন্টে প্রথম জয় পায় সিলেট।
টস জিতে ব্যাট করা সিলেটের শুরুটা ভালো হয়নি। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই ফ্রাইলিঙ্কের বলে আউট হন লিটন দাস (০)। তৌহিদের পরিবর্তে একাদশে সুযোগ পাওয়া নাসির হোসেনও প্রথম ম্যাচে জ্বলে উঠতে ব্যর্থ হন। ৩ রান করেই নাইম হাসানের বলে ক্যাচ আউট হন তিনি। কোন রান না করে সাজঘরে ফিরেন সাব্বির রহমানও।
দলীয় ৬ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন ওয়ার্নার ও আফিফ হোসেন। দুইজনেই বেশ দায়িত্বশীল ব্যাটিং করেন। মিরপুরের স্লো উইকেটে দুইজন মিলে গড়েন ৭১ রানের জুটি। ওয়ার্নার অতটা আক্রমণাত্মক না খেললেও শুরু থেকেই বেশ আক্রমণাত্মক ছিলেন আফিফ। ২৮ বলে ৪৮ রান করে খালেদ আহমেদের বলে আউট হন তিনি। আফিফ ফিফটি করতে না পারলেও অর্ধশতক তুলে নেন সিক্সার্স অধিনায়ক ওয়ার্নার। বিপিএলে নিজের দ্বিতীয় ম্যাচেই প্রথম ফিফটি পান তিনি।
আফিফের বিদায়ের পর পুরানের সঙ্গে জুটি বেঁধে দলীয় সংগ্রহ বড় করতে থাকেন ওয়ার্নার। শুরু থেকেই বেশ আক্রমণাত্মক ছিলেন পুরান। ৫৯ করে ওয়ার্নার আউট হলে শেষদিকে পুরানের অপরাজিত ৫২ রানে ১৬৮ সংগ্রহ করে সিলেট সিক্সার্স। ভাইকিংসের হয়ে বল হাতে ৩টি উইকেট পান রবি ফ্রাইলিঙ্ক।
এই জয় দলপতি ওয়ার্নারের কাছে স্বস্তির, ‘এমন পরিস্থিতিতে আপনি সবসময় চিন্তিত থাকবেন। তবে ৬ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর আমরা ভালোভাবে সামলে নিয়েছি।’ এজন্য আফিফের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন অজি তারকা, ‘আমি আফিফকে পুরো ২০ ওভার ব্যাট করতে বলেছিলাম, তবে সে জেভাবে পারে খেলেছে, নিজেকে মেলে ধরেছে, এর কৃতিত্ব আমি তাকে দেব। টুর্নামেন্টে আমাদের হয়ে সে ভালো কিছুই করতে যাচ্ছে।’ ব্যাটে-বলে দারুণ পারফম্যান্স করা ফ্রেইলিঙ্ককেও মূল্যায়ণ করেন ওয়ার্নার।
পরাজিত দলপতি মুশফিকের মুখেও আফিফ বন্দনা, ‘আমরা বল হাতে ভালো শুরু করেছিলাম, কিন্তু আফিফ ভালো ব্যাট করে ওয়ার্নারের উপর চাপ কমিয়েছে।’ তবে সব ছাপিয়ে এটাকে ক্রিকেটের জয় হিসেবে দেখছেন ভাইকিংস অধিনায়ক, ‘সব মিলে বলব, এটা ক্রিকেটের জন্য ছিল দারুণ একটা ম্যাচ। তবে সেরা দলটাই জিতেছে।’
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
সিলেট সিক্সার্স: ২০ ওভারে ১৬৮/৫ (লিটন ০, ওয়ার্নার ৫৭, নাসির ৩, সাব্বির ০, আফিফ ৪৫, পুরান ৫২*, অলক ২*; ফ্রেইলিঙ্ক ৪-০-২৬-৩, নাঈম ৪-০-২০-১, রাজা ৩-০-২৮-০, আবু জায়েদ ৩-০-৩৪-০, খালেদ ৩-০-৩৩-১, মোসাদ্দেক ৩-০-২৫-০)।
চিটাগং ভাইকিংস: ২০ ওভারে ১৬৩/৭ (শাহজাদ ৬, ডেলপোর্ট ৩৮, আশরাফুল ২২, মুশফিক ৫, রাজা ৩৭, মোসাদ্দেক ৭, ফ্রাইলিঙ্ক ৪৪*, নাঈম ০, সানজামুল ২*; তাসকিন ৪-০-২৮-৪, ইরফান ৪-০-৩৫-০, নাসির ১-০-১০-০, আল আমিন ৪-০-৫৭-০, লামিচানে ৪-০-২১-০, আফিফ ১-০-৬-০, অলক ২-০-৬-২)।
ফল: সিলেট সিক্সার্স ৫ রানে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ: নিকোলাস পুরান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিপিএল

২৭ জানুয়ারি, ২০২৩
২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ