Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পাহাড়ে সবজি চাষে স্বাবলম্বী অনেকে

রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) থেকে নুরুল আবছার চেীধুরী | প্রকাশের সময় : ১৩ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার উপজেলার শেষ সীমান্ত পাহাড়ি এলাকায় বসবাস করে আসছেন গরীব ও অসহায় সঙ্গীতা তঞ্চঙ্গ্যার পরিবার। কোন রকম মোটা ভাত মোটা কাপড়ে সংসার চলে তাদের। জীবন সংগ্রামের যুদ্ধে অনেক সময় নুয়ে পড়েন সঙ্গীতা। জুমচাষই তাদের একমাত্র অবলম্বন। জুমচাষ শেষ হওয়ায় পর তাদের হাতে কোনো কাজ থাকে না। তাই সংসারে আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যায়। জুম চাষের মৌসুম শেষ হলে সম্পূর্ণ বেকার হয়ে পড়ে তাদের মতো এলাকার অন্য কৃষি পরিবারগুলো চলে এভাবে। আশপাশের সমুল জমিতে পুরুষরা তামাকের চাষ করেন। সঙ্গীতার পরিবারে রয়েছেন স্বামী বাপ্পী তঞ্চঙ্গ্যা ও দুই ছেলে-মেয়ে। দুই ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার খরচ জোগানো তাদের পক্ষে কষ্ঠকর হয়ে পড়ত। এক কথায় সংসারে অভাব ছিল সঙ্গীতাদের নি্যু দিনের সঙ্গী।

সঙ্গীতা তঞ্চঙ্গ্যাদে মহাল্লায় সরেজমিনে গেলে জানা যায়, কারও কাছ থেকে কোনো সহায়তা না পেয়ে নিঃস্ব অবস্থায় সঙ্গীতা বেসরকারি একটি এনজিও সংস্থার শরণাপন্ন হন। উক্ত প্রতিষ্ঠানে রাঙ্গুনিয়া অফিসের খাদ্য ও জীবিকায়ন নিরাপত্তা প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণ নেন সঙ্গীতা। তার সঙ্গে পাড়ার আরও কিছু নারী প্রশিক্ষণ নিয়ে সবজি চাষে জড়িয়ে পড়েন। সবজি চাষের পাশাপাশি ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরির প্রশিক্ষণ নেন তারা। ২০১৭ সালে অল্প জমিতে বিষমুক্ত সবজি চাষ করলেও পরের বছর অধিক জমিতে নানা জাতের সবজি চাষ করে সফল হন তারা। তারা চাষে সারের পরিবর্তে ভার্মি কম্পোস্ট সার ব্যবহার করায় সবজিগুলো অধিক স্বাস্থ্যসম্মত বলে বাজারে চাহিদা বেড়ে যায়। সবজি চাষকে জীবিকার একমাত্র অবলম্বন হিসেবে নিয়েই পথ চলতে শুরু করেন সঙ্গীতাসহ পাড়ার অন্যরা। তাদের উৎপাদিত বিষমুক্ত সবজি এলাকার চাহিদা পুরণ করে রাঙ্গুনিয়া-কাপ্তাই উপজেলার বিভিন্ন বাজারে বেশ সমাদর পায়। এসব বাজারের অনেক বেপারি খুব সকালে সবজি কিনতে তাদের বাড়িতে আসেন। তাছাড়া আশপাশের অনেক মানুষ বিষমুক্ত টাটকা সবজি কিনতে ভিড় করেন সঙ্গীতা ও আশপাশের নারীদের বাড়ির আঙিনায়। তাদের কার্যক্রম দেখে এলাকার চন্দ্রঘোনা রেশমবাগানের ১৭৮টি উপজাতীয় চাকমা-মার্মা ও তঞ্চঙ্গ্যা পরিবারের অনেকে তামাক চাষের জমিতে সবজির চাষাবাদ শুরু করেন। আগে এসব জমিতে ব্যাপক তামাক চাষ করতেন উপজাতীয়রা। এখন সবজি চাষ হওয়ায় তামাক চাষ তেমন একটা করেন না তারা। ফলে এলাকার জমির মাটির উর্বরতা শক্তিও বাড়ছে।

রাঙ্গুনিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কারিমা আক্তার বলেন, আমরা সব সময় এসব উদ্যমী নারীদের সহায়তা দেই। মাঠ পর্যায়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক কাজ করেন। সঙ্গীতার মতো এলাকার অন্য নারীরাও যদি নিজের অনাবাদি জমি ও বাড়ির আঙিনায় সবজি চাষ করেন তবে দারিদ্র দুর হয়ে যাবে। সাবলম্বি হবে উপজাতীয়রা। এ কাজে কৃষি অফিস সার্বক্ষণিক সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাহাড়ে সবজি চাষ
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ