Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

হাইপারসনিক ফ্লাইটে তিন ঘণ্টায় প্যারিস থেকে টোকিও!

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ৩:৩৫ পিএম

প্যারিস থেকে টোকিওতে বিমানে যেতে এখন সময় লাগে ১২ ঘণ্টা৷ কিন্তু ইউরোপ আর জাপানের বিজ্ঞানীরা চেষ্টা করছেন সময়টা কমিয়ে মাত্র তিন ঘণ্টায় নিয়ে আসার। আগামী ২০-৩০ বছরের মধ্যে সেটা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন তারা৷ সম্প্রতি এই ধরনের একটি বিমানের নকশা উন্মোচন করেছে বোয়িং। বিমানের নকশা, পরিবেশগত প্রভাব এবং অর্থনৈতিকভাবে টেকসই হবে কিনা, তা যাচাই করে দেখছেন বিজ্ঞানীরা৷
এই প্রকল্পের একজন গবেষক এমানুয়েল ব্লানভিলেন জানান, ‘দ্রুতগতিসম্পন্ন বিমান তৈরির উদ্দেশ্য যাত্রার সময় কমানো৷ যেমন ধরুন, প্রায় তিন ঘণ্টায় ইউরোপ থেকে জাপান যাওয়া৷’
এ ধরনের বিমান তৈরির জন্য নতুন প্রযুক্তির জেট ইঞ্জিনের প্রয়োজন হবে৷ এই ইঞ্জিনের জন্য নতুন উপকরণ ও নতুন নকশা তৈরির চেষ্টা করছেন গবেষকরা৷ প্রকৌশলী পাট্রিক গ্রুন বলেন, ‘বাতাসের বাধা অতিক্রম করতে আপনার এ ধরনের এয়ারোডাইনামিক ডিজাইনের প্রয়োজন হবে৷ না হলে, বাতাসের চাপ এত বেশি থাকে যে, বিমানের গতি বাড়ানোর মতো পর্যাপ্ত ধাক্কা জেট ইঞ্জিন থেকে পাওয়া যাবে না৷’
সম্ভাব্য বিমানের মডেল ৬০ মিটার দীর্ঘ টানেলের ভেতর রাখা হয়৷ হাইপারসনিক, অর্থাৎ শব্দের গতির চেয়ে দ্রুতগতিতে বিমান চলতে হলে যে ধরনের বায়ু চাপ সহ্য করতে হবে, সেই পরিবেশ এই টানেলে সৃষ্টি করা যায়৷ গবেষক ক্লাউস হানেমান বলেন, ‘স্পেস শাটল কিংবা ৩০ কিলোমিটার উঁচুতে ঘণ্টায় প্রায় সাড়ে নয় হাজার কিলোমিটার বেগে চলতে পারে, এমন বিমান পরীক্ষা করার মতো বাতাসের চাপ এই টানেলে তৈরি করা যায়৷’
গবেষক ইয়োহান স্টিলান্ট বলেন, ‘এখন বিমান ভ্রমণের সময় আপনি যেমনটা অনুভব করেন, তার চেয়ে হাইপারসনিক বিমানে অনুভূতির পার্থক্যটা খুব বেশি হবে না৷ তখনও আপনি ভ্রমণ উপভোগ করতে পারবেন, সেই সঙ্গে শব্দের গতি কিংবা তার চেয়েও জোরে চলার আনন্দটাও পাবেন৷’
এখন পর্যন্ত গবেষণা করা বেশিরভাগ মডেলের বিমানে জ্বালানি ট্যাংক যে অংশে থাকবে, তার পরের অংশে যাত্রীদের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ জ্বালানি হিসেবে গবেষকরা তরল হাইড্রোজেনের কথা ভাবছেন, যা কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমন করে না এবং শীতলকারী পদার্থ হিসেবেও কাজ করে৷
গবেষক হিদেইয়ুকি তাগুচি বলেন, ‘বিমান ঘণ্টায় ছয় হাজার কিলোমিটারের বেশি গতিতে চলার মানে হচ্ছে, ইঞ্জিন বেশ গরম হয়ে উঠবে৷ ফলে তাকে ঠান্ডা করার জন্য আমাদের খুব শীতল জ্বালানির প্রয়োজন হবে৷’
আরেকটি টানেলে গবেষকরা চরম তাপমাত্রায় টিকে থাকতে পারবেন, এমন সিরামিক পরীক্ষা করে দেখা হয়৷ কারণ, তাদের কয়েক হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা সহ্য করতে হবে৷ প্রকৌশলী বুর্কার্ড এসার বলেন, ‘বিমানের গরম অংশটুকু যতটা সম্ভব সরু রাখার চেষ্টা চলছে, যেন গরমের আভা যাত্রীদের স্পর্শ করতে না পারে৷ যাত্রীরা যেন এখন বিমান ভ্রমণের সময় যেমন অনুভব করেন, তখনও তা করতে পারেন৷’
গবেষক এমানুয়েল ব্লানভিলেন জানান, ‘আমরা ২০৪০ থেকে ২০৫০ সালের মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে এমন বিমান তৈরি শুরুর আশা করছি৷ তবে এটা নির্ভর করছে প্রযুক্তিগত উন্নতির উপর৷’ সূত্র: ডেইলি মেইল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হাইপারসনিক ফ্লাইট
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ