Inqilab Logo

বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা হলেন সালমান এফ রহমান

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ৬:৩৮ পিএম | আপডেট : ৭:৪১ পিএম, ১৫ জানুয়ারি, ২০১৯

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিশিষ্ট শিল্পপতি ও ঢাকা-১ আসনের আওয়ামী লীগের এমপি সালমান এফ রহমান।
এ সংক্রান্ত আদেশে প্রেসিডেন্ট সই করার পর জারি হয়েছে প্রজ্ঞাপন। নিয়োগ পাওয়ার পর দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে সর্বাত্মক চেষ্টার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন নতনু এ উপদেষ্টা।
সালমান এফ রহমান বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। এর আগেও তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বেসরকারিখাত বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১ (দোহার-নবাবগঞ্জ) আসন থেকে তিনি বিপুল ভোটে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন।
সালমান এফ রহমান দেশের সবচেয়ে বড় বেসরকারী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো গ্রুপের মালিক। প্রতিষ্ঠানটি দেশের শিল্প খাতের প্রায় সব শাখায় বিনিয়োগ করেছে যার মধ্যে বস্ত্র, সামুদ্রিক খাবার, আবাসন, হোটেল, নির্মাণ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, মিডিয়া, সিরামিকস, ঔষধ অন্যতম।
এই দূরদর্শী ব্যবসায়ী তার বিনিয়োগ মানসিকতা, অধ্যাবসায় ও বিচক্ষণতা দিয়ে শুধু বেক্সিমকো গ্রুপকেই নয়, সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশের ব্যাবসা খাতের সম্ভাবনা যেসব ব্যবসায়ী সত্তর দশকে উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন, সালমান এফ রহমান তাদের মধ্যে অন্যতম। ব্যবসার সাথে সাথে দেশের ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে তুলে ধরার গুরুত্বও তিনি উপলব্ধি করেছিলেন সেই সময়।

১৯৬৬ সালে সালমান ফজলুর রহমান এবং তার ভাই সোহেল ফজলুর রহমান পারিবারিক জুট মিল পরিচালনার মাধ্যমে ব্যবসায় নামেন। ১৯৭১ সালে জুট মিলটি সরকার জাতীয়করণ করলে তারা ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ এক্সপোর্ট এন্ড ইমপোর্ট কোম্পানি (যা পরে বেক্সিমকো গ্রুপ হিসেবে পরিচিত হয়) প্রতিষ্ঠা করেন। তারা সেই সময় ইউরোপে সামুদ্রিক খাবার ও চূর্ণ হাড় রপ্তানি করেন এবং সেই অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা দ্বারা ঔষধ আমদানি করেন।
১৯৭৬ সালে তারা বেক্সিমকো ফার্মা প্রতিষ্ঠিত করেন যা বর্তমানে বাংলাদেশের ঔষধ খাতের সবচেয়ে নামকরা কোম্পানি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। ১৯৮২ সালে দুই ভাই আরব বাংলাদেশ ব্যাংকের (এবি ব্যাংক) প্রতিষ্ঠা করার জন্য দুবাইভিত্তিক গালাদারি ব্রাদার্স গ্রুপের সাথে চুক্তি করেন। তবে তারা ১৯৮৫ সালে ব্যাংকটির শেয়ার অন্য অংশীদারদের কাছে বিক্রি করে দেন এবং আইএফআইসি ব্যাংকের ৩০% শেয়ার কিনে নেন। ২০১০ সালে সালমান এফ রহমান ব্যাংকটির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
সালমান এফ রহমান একসময় এফবিসিসিআই-এর প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি আইএফআইসি ব্যাংক ও আবাহনী লিমিটেডের চেয়ারম্যানও। সাথে সাথে তিনি তিনি ইংরেজী দৈনিক পত্রিকা দ্যা ইন্ডিপেনডেন্ট এবং ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনেরও মালিক।

২০১৬ এর নভেম্বরে সালমান এফ রহমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার বেসরকারি উন্নয়ন খাতের উপদেষ্টা হিসাবে পুনঃনিয়োগপ্রাপ্ত হন। আওয়ামী লীগ বেসরকারী খাতের উন্নয়নে সালমান এফ রহমানের প্রজ্ঞা ও মেধা কাজে লাগাতে চায়। সে সময় অর্থনীতি বিশেষজ্ঞরা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। কারণ, সালমান এফ রহমান একজন সুপরিচিত প্রভাবশালী ব্যবসায়ী যিনি বেক্সিমকো গ্রুপকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় কর্পোরেট কোম্পানিতে প্রতিষ্ঠায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
সালমান এফ রহমান অনেক জনহিতকর কর্মকান্ডে জড়িত। তিনি সামাজিক দায়বদ্ধতা পূরণে বাংলাদেশের মানুষের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেই লক্ষ্যে তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও দাতব্য সংস্থার সাথে নিজেকে যুক্ত রেখেছেন। কিছুদিন আগে যখন মায়ানমারের সেনাবাহিনীর সহিংসতার কারনে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে, তখন সালমান এফ রহমান রোহিঙ্গাদের জন্য উদ্বেগ জানিয়ে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন। ত্রাণ হিসেবে খাদ্য ও প্রায় ৪ হাজার পরিবারের মধ্যে কাপড় বিতরণ করেন। এর পাশাপাশি উখিয়ায় রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার লক্ষ্যে একটি মেডিকেল ক্যাম্পও স্থাপন করা হয় তার মালিকানাধীন বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের পক্ষ থেকে।

২০১৭ সালের হুরন গ্লোবাল রিচ রিপোর্ট অনুযায়ী সালমান এফ রহমান ২২৫৭ বিলিয়নিয়ার মধ্যে ১৬৮৫ তম স্থানে আছেন। সালমান এফ রহমান অবশ্য বলেছেন, হুরন গ্লোবাল রিচের দেয়া ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বেক্সিমকো গ্রুপের সম্পদ হতে পারে কিন্তু তা কোনভাবেই তার ব্যাক্তিগত সম্পদের হিসাব নয়।



 

Show all comments
  • Mohammed Shah Alam Khan ১৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ১০:২০ পিএম says : 0
    ঢাকা জেলার দোহার থানার প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব যিনি এখন নবাবগঞ্জ-দোহার থানার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন তাঁকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দরবারের মন্ত্রীর পদমর্যাদা সম্পন্ন উপদেষ্টা হিসাবে নিয়োগ দিয়েছেন। এটা আমাদের নবাবগঞ্জ বাসীর জন্যে একটা শুখবর বটে। আমি দেখে আসছি যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন এই অঞ্চলের একজন মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী সবসময়ই কেবিনেটে ছিল। কিন্তু ২০১৪ সালে আমাদের এলাকার সাংসদ নির্বাচিত হয় জাতীয় পার্টি থেকে যে কারনে গত সরকারে এই অঞ্চলের কোন প্রতিনিধি কেবিনেটের কোন সদস্যের মর্যাদায় ছিল না। আবার আমাদের নব-নির্বাচিত সাংসদ তার ব্যাক্তিগত ও দলীয় যোগ্যতার বলে নবাবগঞ্জ-দোহারের সেই ঐতিহ্য ফিরেয়ে এনেছেন এটাই আমাকে আনন্দিত করেছে। আমি এই সুদুর কানাডা থেকে আমাদের সাংসদকে যদিও ভোট দিতে পারিনি কিন্তু দলীয় প্রতিনিধি জয়ী হওয়াতে আনন্দিত হয়েছিলাম এখন সেটার মাত্রা আরও কয়েক ধাপে বেশী হয়েছি। আমি ওনার জন্যে আমার ও আমার পরিবারের পক্ষ থেকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা সাথে সাথে আমাদের দোয়া আল্লাহ্‌ যেন ওনাকে আমাদের এলাকার কাজ কর্ম আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা প্রদান করেন। আমিন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সালমান এফ রহমান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ