Inqilab Logo

বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

রাখাইনে আরো সেনা পাঠাচ্ছে মিয়ানমার

জাতিসংঘ হাইকমিশনারের মিয়ানমার সফর বাতিল

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ১৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের কয়েকটি পুলিশ চৌকিতে বিদ্রোহীদের হামলার জের ধরে সেখানে অতিরিক্ত সেনা পাঠাচ্ছে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। ফলে রাজ্যটিতে সংঘাত তীব্র আকার ধারণ করার আশংকা তৈরি হয়েছে। মিয়ানমারের সংবাদ মাধ্যম ইরাবতি এ কথা জানিয়েছে। মিয়ানমারের স্বাধীনতা দিবস ৪ জানুয়ারি স্থানীয় সশস্ত্র গ্রুপ আরাকান আর্মি (এএ)’র হামলায় ১৩ পুলিশ সদস্য নিহত ও ৯ জন আহত হয়। স্বাধিকারের দাবিতে লড়াই করছে এএ। এএ কমান্ডার তুন নাইংয়ের বরাত দিয়ে ইরাবতি জানায়, আকাশ ও সড়কপথে মিয়ানমারের সরকারি সেনারা আসছে। তবে তিনি ৪ জানুয়ারি হামলা চালানোর যৌক্তিকতা তুলে ধরে বলেন যে ওই এলাকায় ঘাঁটি গেঁড়ে থাকা পুলিশ ইউনিটগুলো গত ডিসেম্বরে এএ’র উপর সেনাবাহিনীর হামলার সময় সহায়তা করেছিলো। এদিকে, রাখাইনে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার প্রধানের মিয়ানমার সফর বাতিল করে দিয়েছে নেইপিদো। রাখাইনের স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সদস্যরা মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে চলতি মাসের শুরুর দিকে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এই হামলার পর দেশটির প্রেসিডেন্ট উইন্ট মিন্ট রাখাইনে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন। অভিযানে এখন পর্যন্ত পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ তাদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়েছেন। রয়টার্স জানায়, সোমবার জাতিসংঘের এক বিবৃতিতে রাখাইনে জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ সরবরাহের অনুমতি দিতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। গত সপ্তাহে রাখাইনে সফরে যাওয়ার কথা ছিল জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডির। কিন্তু মিয়ানমার সরকার গ্রান্ডির রাখাইন সফর বাতিল করেছে। মিয়ানমারে জাতিসংঘ দফতরের প্রধান কুন্ত অস্তবি’র বরাত দিয়ে ১০ জানুয়ারি রয়টার্স জানায়, গত ডিসেম্বর থেকে ওই এলাকায় সাড়ে চার হাজার বেসামরিক লোক বাস্তচ্যুত হয়েছে। তিনি উভয় পক্ষের প্রতি বেসামরিক লোকজনের সুরক্ষা ও মানবাধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। এদিকে রাজধানী নেপিদোতে সেনা কমান্ডারদের সঙ্গে স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি’র বৈঠক থেকে বিদ্রোহীদের ‘গুড়িয়ে’ দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। সরকারের মুখপাত্র ঝাও তায়ে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা)’র সঙ্গে সম্পর্ক রাখার জন্য এএ-কে অভিযুক্ত করেন। তবে এএ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। আরসা-কে রাখাইনের মুসলিম জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের একটি সশস্ত্র সংগঠন বলে মনে করা হয়। অন্যদিকে, রাজ্যের বৌদ্ধ সংখ্যাগুরু জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করে এএ। তবে দুটি গ্রুপই এই রাজ্যের নতুন নাম রাখাইনের বদলে পুরনো নাম ‘আরাকান’ ব্যবহার করে। ২৬ জন আরাকানি যুবক ২০০৯ সালে আরাকান আর্মি গঠন করে। বর্তমানে এই গ্রুপের কয়েক হাজার সুসজ্জিত যোদ্ধা রয়েছে। রাখাইন প্রদেশে বৌদ্ধ বিদ্রোহীদের সঙ্গে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর চলমান সংঘর্ষে বাস্ত্যুচুত হাজার হাজার মানুষকে দ্রুত এবং অবাধে ত্রাণ সহায়তা দেয়ার সুযোগ দিতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। রাখাইনের স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সদস্যরা সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে। সংঘর্ষে গৃহহীন হয়ে পড়া হাজারো মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছাতে সোমবার এই আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। এর আগে গত সপ্তাহে রাখাইন প্রদেশ সরকার উত্তরাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলের পাঁচটি শহরে বেসরকারি সংস্থা এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। সংঘাতের কারণে রাখাইনের এই দুই অঞ্চলে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করে একটি নোটিশ জারি করা হয়। এসএএম, এএফপি, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রাখাইনে আরো সেনা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ