Inqilab Logo

বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মেক্সিকোর নতুন সমস্যা ‘সারগ্যাসম’

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ৬:৪৭ পিএম

দারুণ সব সৈকত থাকার কারণে প্রতিবছর অনেক পর্যটক মেক্সিকোসহ ক্যারিবীয় দেশগুলোতে ঘুরতে যান৷ কিন্তু ইদানীং এক সমস্যা দেখা দেয়ায় পর্যটকের সংখ্যা কমে যাচ্ছে৷ নতুন এই সমস্যা হচ্ছে ‘সারগ্যাসম’ নামের একধরনের সামুদ্রিক শৈবাল৷
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় এই শৈবালের সংখ্যা দ্রুতগতিতে বাড়ছে৷ একে একটি বিশাল পরিবেশগত বিপর্যয় বলে মনে করছেন ইন্সটিটিউট অফ ওশান সায়েন্সেস অ্যান্ড লিমনোলোজির ব্রিগিটা ফান তুসেনব্রুক৷ তবে কিছু মানুষ আছেন, যারা এই বিপুল সংখ্যক সারগ্যাসমকে একটি সুযোগ হিসেবে দেখছেন৷ তারা নতুন কিছু করার স্বপ্ন দেখছেন৷
উদ্যোক্তা ডেভিড খাওরেগি জানান, ‘আমরা সারগ্যাসম দিয়ে একটি পুরো শিল্পখাত গড়ে তুলতে চাই৷ আমার তো মনে হয় তখন আমাদের উলটো সারগ্যাসমের চাষ করতে হবে।’
সাধারণত বারমুদা ট্রায়াঙ্গল এলাকার সমুদ্রের পানিতে সারগ্যাসম ভেসে বেড়ায়৷ তবে কয়েক বছর ধরে ক্যারিবীয় এলাকার সৈকতে এর দেখা পাওয়া যাচ্ছে৷ বিপুল সংখ্যক সারগ্যাসমের কারণে ইকোসিস্টেমে পরিবর্তন আসছে৷ মেক্সিকোর পুয়ের্টো মোরেলস উপকূলে বিজ্ঞানীরা বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করছেন৷
গবেষক ব্রিগিটা ফান তুসেনব্রুক বলেন, ‘আমরা এখনো সারগ্যাসম সম্পর্কে বেশি কিছু জানি না৷ তবে এটুকু বুঝতে পারছি, তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় এরা বেশি পুষ্টি পাচ্ছে৷ ফলে এদের সংখ্যা দ্রুতগতিতে বাড়ছে৷ আমরা আরো বেশি তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করছি৷’
সাগর পাড়ে জমা হওয়া সারগ্যাসম থেকে একসময় হাইড্রোজেন সালফাইড ছড়াতে শুরু করে, যার গন্ধ অনেকটা পচা ডিমের মতো৷ ফলে সেই সময় সৈকতে যাওয়া সম্ভব হয় না৷ গতবছর অবস্থা এতটাই বেগতিক হয়ে পড়েছিল যে, বার্বাডোজে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে হয়েছিল৷
অনেক দেশের আয়ের একটা বড় উৎস পর্যটন থেকে আসায়, সেই দেশগুলো সারগ্যাসম নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠছে৷ যেমন, গতবছর মেক্সিকোর প্লায়া দেল কার্মেনে কম পর্যটক দেখা গেছে৷ ফলে সরকার সারগ্যাসমের হাত থেকে সৈকত বাঁচাতে উদ্যোগ নিয়েছে৷
উদ্যোক্তা ডেভিড খাওরেগি বলেন, ‘আমরা একটি উপায় বের করেছি, যাকে সারগ্যাসমবিরোধী প্রতিবন্ধক বলে ডাকছি৷ এটা পানিতে ভেসে থেকে সারগ্যাসমকে সৈকত পর্যন্ত পৌঁছা থেকে বিরত রাখে৷’
ডেভিডের কোম্পানি কিছুদিন হলো সারগ্যাসমবিরোধী প্রতিবন্ধক উৎপাদন শুরু করেছে৷ আরো অনেক কোম্পানি এই কাজে নামার চিন্তা করছে৷ খাওরেগি বলেন, ‘সারগ্যাসম নিয়ে কী করা যায় তার খুব একটা অভিজ্ঞতা মেক্সিকোর নেই৷ ফলে আমাদের মতো অন্য খাত থেকে আসা কোম্পানিগুলো এটা সামাল দেয়ার চেষ্টা করছে৷’
এই ল্যাবরেটরিতে সারগ্যাসম থেকে বায়োগ্যাস তৈরির চেষ্টা চলছে৷ যদিও শৈবাল থেকে বায়োগ্যাস তৈরির বিষয়টি নতুন নয়, এখানকার গবেষকরা বলছেন, সারগ্যাসমের সঙ্গে একটি নির্দিষ্ট মাশরুম মেশালে ভালো হয়৷
সারগ্যাসম দিয়ে পুয়ের্টো মোরেলসে একজন একটি বাড়িও তৈরি করেছেন৷ উদ্যোক্তা ওমর ভাসকেস বলেছেন, ‘ইটগুলো তৈরিতে সারগ্যাসম ব্যবহার করা হয়েছে৷ এছাড়া দুই ইটের মাঝেও সারগ্যাসম আছে৷ সব মিলিয়ে এই বাড়ির প্রায় ৬০ শতাংশই সারগ্যাসম দিয়ে তৈরি৷’
গত বছরের শেষ দিকে সারগ্যাসম আবার সাগরে ফিরে গেছে৷ তবে মে মাসে আবার ফিরে আসবে বলেই এলাকাবাসী মনে করছেন৷ সূত্র: ডয়চে ভ্যালে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মেক্সিকো


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ