Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পরিত্যক্ত ভবনে চলছে ক্লাস!

আশাশুনি (সাতক্ষীরা) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৮ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

আশাশুনি উপজেলার ৪১ নং যদুয়ারডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করায় ক্লাশ পরিচালনা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। তবুও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পরিত্যক্ত ভবনের দু’টি কক্ষে এবং পাশের মন্দির ও বারান্দায় ঠাসাঠাসি করে বসিয়ে ক্লাশ পরিচালনা করতে বাধ্য হচ্ছে কর্তৃপক্ষ।

ধূ-ধূ বিলের মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গ্রামের মানুষের বাচ্চাদের পড়ালেখা করানোর কোন সুযোগ ছিলনা। গ্রামবাসী অতিকষ্টে ১৯৫০ সালে ৬২ শতক জমির উপর স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন। তখন মাটির দেওয়ালের উপর ছনের ছাউনি দিয়ে ক্লাশ চালানো হতো। পরবর্তীতে মাটির দেওয়ালে টালিদিয়ে ছাওয়া হয়। তখন ৩টি কক্ষে ক্লাশ চলতো। বাকি ক্লাশ গাছ তলায় করা হতো। সরকার ১৯৯৪ সালে ৪ কক্ষ বিশিষ্ট একটি বিল্ডিং নির্মাণ করেন। একটিতে অফিস অন্য দু’টিতে ক্লাশ চলতো। দেড় শতাধিক জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে পরিচালিত স্কুলের কক্ষের অভাব প্রকট হয়ে দেখা দিলে ২০০৬ সালে পিডিপি-২ প্রকল্পের আওতায় ২ কক্ষ বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। তখন বেশ ভালভাবে ক্লাশ নেয়া যেত। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে ৪ কক্ষের পুরাতন বিল্ডিংটি খুবই নাজুক হয়ে পড়ায় চরম ঝুঁকিতে ক্লাশ পরিচালনা করা হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে ছাদ দিয়ে পানি পড়ে, ছাদের পলেস্তারা খসে খসে পড়ছে। ইতোমধ্যে পলেস্তারা পড়ে আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। দেওয়াল ও পিলার ফেটে গেছে। মেঝেতে ফাটল ধরেছে। জানালাগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। বাধ্য হয়ে কর্তৃপক্ষ ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছেন। কিন্তু বছরের পর বছর অতিক্রান্ত হলেও ৪টি কক্ষের দু’টিতে ঝুঁকি মাথায় নিয়ে ক্লাশ নেওয়া হচ্ছে। এখন দুই শিফটে ক্লাশ চালান হলেও কক্ষের অভাবে পাশের মন্দিরে ওস স্কুলের বারান্দায় ক্লাশ নিতে হচ্ছে। টিনের ছাউনি ছোট্ট মন্দিরে প্রচন্ড গরমে মেঝেতে বসে ক্লাশ করা খুবই কষ্টকর হলেও বাধ্য হয়ে সেটি করা হচ্ছে।
বারান্দায় ক্লাস বসানোর কক্ষের মধ্যের ক্লাসের কাছে আরেকটি ক্লাস চালানোয় চরম বিপত্তির সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া ১৯৯৪ সালে নির্মীত টয়লেটের অবস্থা খুবই বেহাল। টিউব ওয়েলের পানিতে আর্সেনিক থাকায় সুপেয় পানির সংকট বিরাজমান। বর্ষায় স্কুলের সামনের মাঠ নিমজ্জিত থাকায় খেলাধুলা পড়ে থাক চলাচল বিপদজনক হয়ে ওঠে। এতকিছুর পরও স্কুলের লেখাপড়ার মান ধরে রাখতে শিক্ষকরা ক্লান্তিহীন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে প্রতি বছর ৫ম শ্রেডুর শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় স্কুল থেকে ১০০% কৃতকার্য ও বৃত্তি পাওয়ার সক্ষমতা ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে। ফাকা মাঠের মধ্যে স্কুল অবস্থিত, সীমানা প্রাচীর না থাকায় স্কুলটি অরক্ষিত হয়ে থাকে।
এজন্য নতুন ভবন নির্মান, টয়লেট নির্মান, সুপেয় পানির অভাব দুর করা, মাঠ ভরাট ও সীমান প্রাচীর নির্মানের জন্য এলাকাবাসী ও অভিভাবক মহল উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পরিত্যক্ত ভবনে ক্লাস

১৮ জানুয়ারি, ২০১৯
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ