Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শুনানি হাইকোর্টের ছয় বেঞ্চে

নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ

মালেক মল্লিক | প্রকাশের সময় : ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

সদ্য সমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ সংক্রান্ত আবেদনের শুনানি হবে হাইকোর্টের ৬টি একক বেঞ্চে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন নির্বাচনের সংক্রান্ত আবেদনের শুনানির জন্য এসব একক বেঞ্চকে দায়িত্বে দেন। নির্বাচনে সংক্রান্ত বিষয়টিগুলো হাইকোর্টের নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে শুনানি হবে। সংবিধান অনুযায়ী, নির্বাচনে নির্বাচিতদের বিষয়ে গেজেট জারির ৪৫ দিনের মধ্যে নির্বাচনী অনিয়মের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করার সুযোগ রয়েছে।
হাইকোর্টের নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে যেতে হলে সংবিধানের ১২৫(খ) অনুচ্ছেদ ও নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা-২০০৮-এর ৩৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী আবেদন করতে হবে। সংবিধানের ১২৫(খ) অুনচ্ছেদে বলা হয়েছে,সংসদ কর্তৃক প্রণীত কোনো আইন দ্বারা বা অধীন বিধান অনুযায়ী কর্তৃপক্ষের নিকট এবং নির্ধারিত প্রণালীতে নির্বাচনী দরখাস্ত ব্যতীত নির্বাচন বা সংসদের কোনো নির্বাচন সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার এ এম মাহবুৃব উদ্দিন খোকন ইনকিলাবকে বলেন, নির্বাচনে জাল ভোট, এজেন্টদের বের করে দেয়াসহ একতরফাভাবে ভোট দেয়ারসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। সারা দেশের ৩০০ আসনের কেন্দ্রের অনিয়মের তথ্য সংগ্রহ চলছে। আশা করছি দ্রত সময়ের মধ্যে আবেদন করতে পারব।
সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার ব্যারিস্টার মো. সাইফুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, নির্বাচনের অনিয়মসহ নানা অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য প্রধান বিচারপতি হাইকোর্টের ৬টি একক বেঞ্চ গঠন করেছেন। এখানে শুধুমাত্র নির্বাচন নিয়ে আবেদনগুলো শুনানি হবে।
হাইকোর্টের ৬টি বেঞ্চ হল- বিচারপতি সৌমেন্দ্র সরকার, বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান, বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হক, বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান, বিচারপতি মাহমুদুল হক ও বিচারপতি কাশেফা হোসেন। এই ছয়টি একক বেঞ্চকে নির্বাচন সংক্রান্ত সব আবেদন নিষ্পত্তির করতে বলা হয়েচে। যদিও এখনো নির্বাচন নিয়ে হাইকোর্টে কোন অনিয়মের অভিযোগ আসেনি।
নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অনিয়ম নিয়ে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে যাওয়ার সুযোগ না থাকলেও হাইকোর্টের বেঞ্চে পিটিশন দায়ের করতে পারবেন সংক্ষুদ্ধরা। তিনি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল ও নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়, এগুলো আর এখন করার সুযোগ নেই। যদি কেউ সংক্ষুব্ধ হন, তাহলে তারা নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে গিয়ে মামলা করতে পারেন। নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল আইন এখনও আছে, ট্রাইব্যুনাল এখন আর নেই। তবে হাইকোর্টে মামলার করার জন্য আলাদা বেঞ্চ আছে। ইতোমধ্যে একাধিক বেঞ্চ গঠন করা হয়েছে।
গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে। একই সঙ্গে নির্দলীয় সরকারের অধীনে পুনঃনির্বাচন দাবি করেছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা এখন পর্যন্ত শপথও নেননি। গত ৩ জানুয়ারি বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কমিশন বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে এবং ৬ জানুয়ারি আরেকটি স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ ঐক্যফ্রন্টের অভিযোগ সত্য নয় মর্মে স্মারকলিপি দেয়।
বিএনপির নির্বাচন বিষয়ে আইনগত লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। যেসব আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা হেরেছেন, সেসব আসনে ব্যাপক অনিয়ম, জাল ভোট, এজেন্টদের বের করে দেয়াসহ একতরফাভাবে ভোট দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। এরই মধ্যে ইসি লিখিতভাবে অভিযোগ দাখিল করলেও হাইকোর্টের নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে কোনো অভিযোগ দাখিল করেননি ঐক্যফ্রন্টের কোনো পরাজিত প্রার্থী। ভোটের দিন ২৯৮টি আসনে ঘোষিত ফল অনুযায়ী ঐক্যফ্রন্ট সাতটি আসনে বিজয়ী হয়। পরবর্তীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি আসনে বিএনপির প্রার্থী নির্বাচিত হয়। বিএনপি ৬ আসনে জয়লাভ করেছে। বাকি ২ টিতে জয়লাভ করেছে ঐক্যফ্রন্টের শরিক গণফোরাম। আইন অনুযায়ী আইনি প্রতিকার পেতে হলে এখন একমাত্র উপায় হাইকোর্টের নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল করা। আইন অনুযায়ী নির্বাচিতদের বিষয়ে গেজেট প্রকাশের ৪৫ দিনের মধ্যে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ জানানোর সুযোগ রয়েছে। এরই মধ্যে গত ১ জানুয়ারি গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের সংসদ সদস্যরা গত ৩ জানুয়ারি শপথ নিয়েছেন। ৭ জানুয়ারি নতুন সরকার গঠিত হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কেউ হাইকোর্টে অভিযোগ দাখিল করেননি।
এদিকে নতুন এমপি নেয়া শপথ বাতিল এবং নতুন করে গেজেট প্রকাশের দাবি জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি), জাতীয় সংসদের স্পিকার ও মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে লিগ্যাল নোটিশ দেন মাহবুব উদ্দিন খোকন। পরবতীতে রিট আবেদন করেন। একদিন শুনানি শেষে রিট খারিজ করে দেন। যদিও রিটকারীরা ঘোষণা দিয়েছেন তারা অন্য বেঞ্চে আবেদনটি নিয়ে যাবেন।



 

Show all comments
  • প্রজাপতির জীবন ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৩ এএম says : 0
    ঐ যে কল্লাটা দিয়ে গেছে সেখান থেকে শিক্ষা পেয়েছে সবাই. তাই রায় কি হবে তা সবার জানা।
    Total Reply(0) Reply
  • Mir Irfan Hossain ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৩ এএম says : 0
    ২৯ ডিসেম্বর কালরাত, পৈশাচিক বিজয়।
    Total Reply(0) Reply
  • MD Saiful Islam ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৪ এএম says : 0
    এর আবার কিশের শুনানি। রায় তো হয়েই আছে।সুষ্ঠু নিবাচন হয়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Soman Miah ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৭ এএম says : 0
    ঠেলাঠেলি করবেন না। লাইনে দাঁড়ান। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবেন না ।সবাইকে গালি দেওয়া সুযোগ দেয়া হবে
    Total Reply(0) Reply
  • Abdul Mannan ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৯ এএম says : 0
    কেন্দ্র ভিত্তিক কোন ফলাফল কারকাছে আছে বলে মনে হয় না।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Mhamud ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৯ এএম says : 0
    যদি নির্বাচনে অনিয়ম থেকে থাকে, তাহলে নির্বাচন বর্জন করলেন না কেন? হেরে গিয়ে কোর্টে গেলে সেখানেও হারবেন?
    Total Reply(0) Reply
  • Md Ayna ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৯ এএম says : 0
    এখন থেকে মাঠে যান জনগণের কাছে গিয়ে মিলামিশ করেন । আগামী 10 বছরের জন্য
    Total Reply(0) Reply
  • Akhtarul Habib ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৯ এএম says : 0
    সব পথ বন্ধ
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতীয় সংসদ নির্বাচন

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ