Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পাবনার ঐহিত্যবাহী ইছামতি নদী এখন মৃতবৎ

দখল-দূষণে নিপতিত দখলদার উচ্ছেদ, খনন ও পানি প্রবাহ নিশ্চিতের দাবিতে বিশাল মানববন্ধন

পাবনা থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯, ৪:৪১ পিএম | আপডেট : ৫:১১ পিএম, ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯

পাবনার ঐহিত্যবাহী ইছামতি নদী। এই নদী কালের সাক্ষী। পদ্মা নদী থেকে ইছামতি নদীর উৎপত্তি। পাবনা শহর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে প্রায় ৪৪ কিলো মিটার দীর্ঘ ইছামতি নদী পাবনার জেলার হুরাসাগর নদীতে পড়েছে। ইছামতি নদী হুরাসাগর নদীর উপ- নদী। পদ্মা ও আত্রাই নদী থেকে পানি প্রবাহ নিয়ে ইছামতি নদী হুরাসাগরে নিয়ে যেতো। হুরাসাগর নদীর পানি প্রবাহ এত আরও বৃদ্ধিমান ছিল। ভারতের ফারক্কা ব্যারেজের আঘাতে কালক্রমে ইছামতি নদী আদি আদল হারিয়ে পাবনা শহরের ৬ কিলো মিটার জুড়ে প্রায় মৃতবৎ অবস্থায় পড়ে আছে দীর্ঘ ৪০ বছরকাল।

ইছামতি নদী প্রবাহমান থাকাকালে কবি গুরু রবীন্দ্রনাথকে বুকে ধারণ করে নিয়ে গিয়েছে শাহজাদপুরের কাচারী বাড়ীতে । রাজধানী ঢাকার সাথে পাবনা ও এর আশপাশের জেলা সমূহের নদী ভিত্তিক ব্যবসা-বাণিজ্য ছিল। শহরের খেয়াখাটে লঞ্চ-স্টিমার, এবং রূপকথা সড়কের শেষ মাথায় বড় বড় গয়নার নৌকা ভিড়ত। সেই দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। বিভিন্ন নদীতে পানির টান পড়ায় কালে কালে এই নদী গভীরত্ব ও পানির প্রবাহ হারিয়ে ফেলেছে। ইছমতি নদী বলতে পাবনা শহরে এখন মরাখাল। এই নদীকে তার আদিরুপে ফেরানো না গেলেও অন্তত: গভীরত্ব বাড়িয়ে পানির প্রবাহ বৃদ্ধি করা সম্ভব। এই কাজ কয়েকবার করাও হয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। শুধু অর্থ গেছে পানিহীন নদীতে। অপরিকল্পিতভাবে কাজ করায় ইছামতি নদী পাবনা শহরে তার আদি চেহারা ফিরে পায়নি। নদীতে পানির প্রবাহ না থাকায় এটা নর্দমায় পরিণত হয়েছে। শহরের প্রায় অধিকাংশ আর্বজনা, বর্জ্য এই নদীতে ফেলায় শহরের বায়ু দূষণ ও গন্ধ ছড়িয়ে নাগরিক জীবনকে বিষময় করে তুলেছে। পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার পাবনার আটঘরিয়ার লক্ষীপুর ইউনিয়নের পাশ দিয়ে প্রবাহিত ইছামতি নদী জোরপুর্বক দখল করে বাড়ি ঘর বানানো হচ্ছে। এই নদী খনন করে রক্ষার দাবিতে শহরের নাগরিকরা একট্টা হয়েছেন। তারা মানববন্ধন কর্মসূচি, স্মারকলিপি প্রদান করে যাচ্ছেন। পাবনা জেলা প্রশাসক ম. জসিম উদ্দিন চাচ্ছেন, ইছামতি নদীকে প্রবাহমান করতে। এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন নাগরিকরা। ইছামতি নদী প্রবাহমান করতে জেলা ও পুলিশ প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, পাবনা পৌরসভাকে যৌথভাবে কাজ করতে হবে বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করেন। পাবনার ঐতিহ্যবাহী ইছামতি নদী থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ, নদী খনন ও পানি প্রবাহ নিশ্চিত করার দাবিতে আজ শনিবার পাবনার প্রধান সড়কে একটি বিশাল মানববন্ধন করা হয়। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন, ইছামতি উদ্ধার আন্দোলন ও সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধনে পাবনার রাজনীতিবিদ, আইনজীবী , শিক্ষক, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ শরিক হন। বক্তব্য রাখেন, ইছামিত আন্দোলনের আহ্ববায়ক মাহবুব আলম, জেলা জজ কোর্টের সাবেক পিপি রাজনীতিবিদ এ্যাড. শাহজাহান আলী, পাবনা সেক্টরস কমান্ডার্স ফোরামের আহ্ববায়ক আব্দুর রহিম পাকন, পাবনা প্রাইম ব্যাংকের ম্যানেজার মোঃ ময়েন উদ্দিন, কবি আমিনুর রহমান খান, টেবুনিয়া শামসুল হুদা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ এনামুল হক টগর, সাংবাদিক আব্দুল হামিদ খান, হাসান আলী ও সেলিম নাজির উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা নারী নেত্রী , হাসিনা আক্তার রোজী প্রমুখ। মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পাবনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শাফিউল ইসলাম বলেন, যে নদীকে নিয়ে এত মানুষ আন্দোলন করছেন, পাবনার সেই ইছামতি নদী অবশ্যই খনন হবে, দখলদার উচ্ছেদ হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাবনা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ