Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

‘অখ্যাত’ ইভান্সেই প্রথম সেঞ্চুরি!

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

১০, ০*, ১, ২, ০- এবারের বিপিএলে আগের ৫ ম্যাচে তার রানের টালি। যোগফল মাত্র ১৩! মহামূল্যবান চার বিদেশি কোটা পূরণ করা একজনের কাছ থেকে এমন পারফরম্যান্স নিশ্চয়ই আশা করেনি রাজশাহী কিংস। আগের ম্যাচে ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে তাই আর সুযোগই মেলেনি লরি ইভান্সের। এক ম্যাচ বিরতি দিয়ে গতকাল আবারও মাঠে নামলেন। এবার ঠিকই দিলেন আস্থার প্রতিদান। এমন দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন হবে সেটা নিজেও হয়তো কল্পনা করেননি এই ইংলিশ। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি দিয়েই পাদপ্রদীপের আলোয় এলেন গত টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টে সর্বোচ্চ রান করা ইভান্স।
ইভান্স নামটি খুব পরিচিত নয় বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে। ৩১ বছর বয়সী এই ইংলিশ ক্রিকেটারের এখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার ভাগ্য হয়নি। খেলেছেন ডারহাম, সারে আর ওয়ারউইকশায়ারের মতো কাউন্টি দলগুলিতে। ইংলিশ ক্রিকেট বোর্ডের একটি এক্সিলেন্স একাদশে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। খেলেছেন মেরিলিবোর্ন ক্রিকেট ক্লাব বা এমসিসির হয়েও। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে বিপিএল ছাড়া আফগান প্রিমিয়ার লিগের বাইরে তাঁর খেলার অভিজ্ঞতা নেই। অখ্যাত এই ক্রিকেটারই রাজত্ব করলেন হোম অব ক্রিকেট!
গতকাল মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা রাজশাহী শুরুতে এগিয়েছে ধুঁকতে ধুঁকতে। মেহেদি হাসানের বলে ব্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে বোল্ড হন ওপেনার শাহরিয়ার নাফীস। মেহেদী হাসান মিরাজ ও মার্শাল আইয়ুবকে ফেরান বাঁহাতি স্পিনার লিয়াম ডসন। সপ্তম ওভারে রাজশাহীর রান ছিল ৩ উইকেটে ২৮। সেখান থেকে ইভান্স ও ডেসকাটের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় রাজশাহী। দুজন শুরুতে সময় নিয়েছেন বেশ। তবে পুষিয়ে দিয়েছেন পরে। ১৩ ওভার শেষেও রাজশাহীর রান ছিল ৭০। ইভান্সের রান তখন ৩৬ বলে ৩৭, ডেসকাটের ২৫ বলে ২৫। দুজনই পরে শেষ করেছেন দুর্দান্ত স্ট্রাইক রেটে।
ওপেন করতে নেমে শেষ পর্যন্ত ব্যাট করে ৬২ বলে ১০৪ রানে ইভান্সের ইনিংসে চার ৯টি, ছক্কা ৬টি। ডাচ ডেসকাট করেছেন অপরাজিত ৫৯। তাঁর ইনিংসে ছিল ২টি চার ও ৩ ছক্কা। চতুর্থ উইকেটে ১৪৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েছেন দুজন। চতুর্থ উইকেটে যা বিপিএলের রেকর্ড। ১২৩ রানের জুটিতে আগের রেকর্ড ছিল ২০১৬ বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে মারলন স্যামুয়েলস ও মাশরাফি বিন মুর্তজার।
বিপিএলে এটি ত্রয়োদশ সেঞ্চুরি। নবম ক্রিকেটার হিসেবে এই টুর্নামেন্টে সেঞ্চুরি করলেন ইভান্স। সর্বোচ্চ পাঁচটি আছে ক্রিস গেইলের। একাধিক সেঞ্চুরি নেই আর কারও। এমন একটি প্রথমের সাক্ষী হতে পেরে অনুভূতিটিও যেহেতু অসাধারণ সেহেতু সেঞ্চুরিটিকে বিশেষ বলাটাও সমীচীন। যা বলতে কুণ্ঠাবোধ করলেন না খোদ ইভান্সও। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে তিনি জানালেন, ‘অসাধারণ লাগছে। এখন পর্যন্ত এটাই (সেঞ্চুরি) কিছুটা কঠিন ছিল। এমনও হতে পারে পরের ম্যাচে আমি প্রথম বলেই আউট হয়ে গেছি। অতএব আপনাকে আপনার লেভেল বুঝে খেলতে হবে। সেটা যতখানি সম্ভব। যখন সময় খারাপ যায় তখন নিজের ওপর বিশ্বাসটা রাখা জরুরি। অবশ্যই আমি ভাবিনি যে সেঞ্চুরি করবো।’
এর পেছনে অবশ্য একটা কারণ আছে। সেটা হলো; টানা ৫ ম্যাচ রান খরায় থাকার পরেও টিম ম্যানেজমেন্ট তার ওপর আস্থা রাখবে সেটা তিনি ভুলেও ভাবেনি। তার ওপর আবার অর্ডার বদল! মোট ছয় ম্যাচের তিনটিতে ছয় ও একটিতে পাঁচে ব্যাটিংয়ে নামলেও এই ম্যাচসহ আরো একটিতে তাকে ওপেনিংয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখানে নেমে দলের আস্থার প্রতিদানও দিয়েছেন ষোলোআনা। হয়তো ভাবতেই পারেননি এখানেও তিনি এভাবে জ্বলে ওঠবেন, ‘এটা আমার কাছে বিশেষ কিছুই। আমি আমার কোচ ও স্বত্বাধীকারীর প্রতি কৃতজ্ঞ যে তারা আমাকে এমন একটি সুযোগ দিয়েছে। এটা আমি ভাবিইনি।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইভান্সেই প্রথম সেঞ্চুরি
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ