Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

গোদাগাড়ী উপজেলায় বিএনপি জামায়াতের আগ্রহ নেই, আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের লম্বা তালিকা

গোদাগাড়ী (রাজশাহী) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৩ জানুয়ারি, ২০১৯, ৫:১৬ পিএম

বিএনপি জামায়াতের নেতাদের মাঝে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে তেমন কোন আগ্রহ না থাকলেও আওয়ামীলীগের লম্বা তালিকা, সবাই যেন কোনভাবে মনোনয়ন পেতে চাই। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আমেজ কাটতে না কাটতেই শুরু হয়েছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তোড়জোড়, একজন নেতা তার সমর্থকদের নিয়ে ফেসবুকে, চা চক্রে, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কোনভাবে নিজেকে প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন। আগামী মার্চ মাসেই উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন কমিশনের ঘোষণার পর গোদাগাড়ীতে বইছে উপজেলা নির্বাচনের হাওয়া। উপজেলা বাসী দেখার অপেক্ষায় আছেন কারা হচ্ছেন উপজেলা চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী। এই নিয়ে চায়ের আড্ডায় আর মাঠে ময়দানে চলছে আলোচনা, উঠছে চায়ের কাপে ঝড়। তবে বিএনপি জামায়াত চুপ রয়েছে, তারা নির্বাচনে যাবেনা বলে সাফ জানিয়ে দিচ্ছেন। ফলে এক রকম এক তরফা আওয়ামী লীগের মধ্যে রয়েছে উপজেলা নির্বাচনের জন্য তোড়জোড়। বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবে না এমন ধারণা থেকেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীর তালিকা দিনে দিনে বড় হচ্ছে, যে কোনদিন জীবনে নির্বাচন করার চিন্তাও করেননি তিনিও স্বপ্ন দেখতে শুরু করছেন। কেননা বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনে না আসলে আওয়ামী লীগ হতে প্রার্থী হতে পারলেই খুব সহজেই চেয়ারম্যান হবার সম্ভাবনা বেশী থেকে মনোনয়ন চাইবেন অনেকে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবারের নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে গোদাগাড়ীতে আওয়ামী লীগ অন্তত ১১ জন মনোনয়ন চাইবেন বলে শুনা । এছাড়াও ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একজনের নাম শোনা যাচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত বিএনপি ও জামায়াতের মনোনয়ন প্রত্যাশী কাউকে পাওয়া যায়নি। আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান পদে যাদের নাম শুনা যাচ্ছে তারা হলেন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য এবং রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি একেএম আতাউর রহমান খান, ২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ঘোষিত প্রার্থী ও রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম আসাদুজ্জামান আসাদ, বিএনপি হতে সদ্য আওয়ামী লীগে যোগদানকৃত বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ইসহাক আলী, জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও দেওপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আকতারুজ্জামান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বদিউজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ, পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সহ-সভাপতি আব্দুল মালেক, পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য রবিউল আলম, গোদাগাড়ী স্কুল এন্ড কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোঃ এনামুল হক, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম এবং গোগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগ সভাপতি মজিবুর রহমান। ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন, গোদাগাড়ী উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি শফিকুল সরকার, গোদাগাড়ী পৌরসভা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল-মামুন ও রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-১ আসনের প্রধান সমন্বয়ক সালমান ফিরোজ ফয়সাল। এছাড়াও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে গোদাগাড়ী উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুফিয়া খাতুন মিলির নাম শোনা যাচ্ছে। বর্তমান উপজেলা পারিষদ চেয়ারম্যান ইসহাক আলী বলেন, ‘আমি সবে মাত্র দলে যোগদান করেছি। আওয়ামী লীগ বৃহৎ দল। সেখানে প্রত্যাশা বেশী। তবে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও স্থানীয় তিনবারের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর সবুজ সংকেত পেলে নিজে ভোট করতে আগ্রহী। ২০১৪ সালের আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ছিলেন জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম আসাদুজ্জামান আসাদ। তিনি বর্তমান চেয়ারম্যানের কাছে পরাজিত হন। আর আগেও তিনি ২০০৯ সালে নির্বাচনে অংশ নেন। তবে তিনি ভোটের মাঠে চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বদিউজ্জামান নির্বচন করার ঘোষণা দিয়ে মাঠে রয়েছেন। তার পক্ষের লোকজন তার পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে সেভেন স্টারের বিরুদ্ধে লড়াকু ভূমিকা রেখেছিলেন, তার নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা সংগঠিত হয়ে কাজ করেছিলেন, যা উপজেলাবাসী স্মরণ রেখেছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ বলেন, ‘জনগণ চাইলে এবং এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর আস্থা পেয়ে নির্বাচন করতে চাই। কারো বিরোধীতা করে নয়।’ তিনি থাকলে কেউ কেউ আমাকে সমর্থন দিবেন এবং মনোনায়ন প্রত্যাশী থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিবেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন প্রত্যাশি উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি শফিকুল সরকার ভোটের মাঠে জোর প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে গণসংযোগ ছাড়াও ভোটারদের দৃষ্টি কাড়তে হাতিতে চড়ে হাত নেড়ে জনগণের মন জয় করার চেষ্টা করছেন। প্রচারে নেমেছেন পৌর যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্ল আল- মামুন ও ছাত্রলীগ নেতা সালমান ফিরোজ ফয়সাল। ফেসবুকেও তারা ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সুফিয়া খাতুন মিলি নিজেকে প্রার্থী ঘোষণা করলেও নির্বাচনের মাঠে তৎপরতা দেখা যায়নি। তিনি বলেন, অতীতে যে ভুল করেছি এবার আর ভূল করতে চাই না। ‘আমি ফাইনাল সংকেত পেয়েই মাঠে নামবো।’ বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও জায়ামাত নেতা কামরুজ্জামান এবং মহিল ভাইস চেয়ারম্যান রওশন আরা ডলির সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, ‘এখনো নির্বাচনের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। দলীয় সিদ্ধান্ত পেলে আমরা নির্বাচনের বিষয়ে মুখ খুলতে পারব। উপজেলার চেয়ারম্যান নির্বাচনে প্রতিদ্বদ্বিতাকারী প্রার্থী, বিএনপি নেতা হযরত বলেন, যে ধরনের একাদশ নির্বাচন হলো তাতে আমার নির্বাচন করার কোন ইচ্ছা নেই। এধরনের নির্বাচন করার প্রয়োজন আছে বলে আমার মনে হয় না। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত একটা বড় ব্যপার। যে সিদ্ধান্ত আমাদের মানতে হবে। গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুস সামাদ শাওয়াল বলেন, উপজেলা এ সরকারের অধীনে উপজেলা নির্বাচন করবে না বিএনপি জোট। কেন না এমপি নির্বচনে প্রশাসনের সহযোগিতায় ২৯ ডিসেম্বর ভোটের আগের দিন রাতে ভোট কেটে, নৌকা প্রতীকে সিল মারা হয়েছে। , কেন্দ্র দখলসহ বিভিন্নভাবে ভোট ডাকাতি করা হয়েছে। ভোটারেরা ভোট দিতে পারেনি, জনগনের মতামতের প্রতিফলন ঘটেনি। আমাদের পর্টির মহাসচিব বলেছেন বিএনপি জোট উপজেলা নির্বাচন করবে না। দলীয কেউ নির্বাচন করলে বহিস্কার করা হবে। বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জামায়াত নেতা মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, জামায়াত আগামী উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবে না। যে নির্বাচনে জনগনের মতামতের প্রতিফলন ফটে না, ভোটার ভোট দিতে পারে না সে ভোট করে লাভ কি? তারপরেও দলীয় সিদ্ধান্তের উপর আমাদের নির্ভর করতে হয়। দল যে সিদ্ধান্ত নিবে সে সিদ্ধান্ত মানতে হবে।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: উপজেলা নির্বাচন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ