Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

প্রধানমন্ত্রীর ঐক্যের আহ্বান কথার কথা- মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ৩:১৮ পিএম

প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ঐক্যের আহবান ‘কথার কথা’ বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার (২৬ জানুয়ারি) সকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যের ব্যাপারে উনি(প্রধানমন্ত্রী) যে ডাক দিয়েছেন সেটাকে মানুষ তো মেনে নেয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ তারা যে বিষয়টা নির্বাচনের সময় দেখিয়েছেন। আমাদের সঙ্গে যে সংলাপ হলো তখন তিনি যে কথাগুলো ‍দিয়েছিলেন, সেই কথাও উনি রাখতে পেরেছেন? একটাও রাখতে পারেননি অর্থাৎ রাখেননি। তিনি বলেছেন, গ্রেপ্তার হবে না, নতুন কোনো মামলা হবে না এবং একটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা হবে- একটাও রাখেননি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে যে কথাগুলো(জাতীয় ঐক্য, সংসদে যাওয়া) উনি বলছেন, এগুলো কথার কথা, এগুলো উনি সব সময় বলেন। আমরা তো ফলাফলই প্রত্যাখ্যান করেছি সেখানে আপনার নতুন করে শপথ নেয়া ও পার্লামেন্টে যাওয়া- এই বিষয় তো কোনো প্রশ্নই উঠে না।
শেখ হাসিনার জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণের ওপর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তার (প্রধানমন্ত্রী) বক্তব্য আমি শুনেছি। প্রথমে সেটা মনে হয়েছে যে, উনি একটা গিল্টি কনসেস থেকে বক্তব্যটা রেখেছেন। কেনো জানি না মনে হয়েছে যে, তার কোথাও একটা মনে হচ্ছে যে, বিষয়টা ঠিক হয়নি। একটা ব্যাখ্যা দেয়া প্রয়োজন। সেই ব্যাখ্যা উনি দিয়েছেন- কেনো বিএনপি ভালো করতে পারলো না, কেনো তারা(আওয়ামী লীগ) এতো ভালো করলো। যেটা তার চিন্তাভাবনা থেকেই বলেছেন। ভয়ে প্রকৃত ঘটনায় কেউ যেতে চাচ্ছে না। মিডিয়াও বলছেন না, অন্যান্যরাও সহজে বলতে ভয় পাচ্ছেন। কিন্তু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যে মিডিয়া, পলিটিক্যাল এরিনা, বিভিন্ন দেশগুলো থেকে যে সমস্ত বক্তব্য এসেছে, যে সমস্ত রিপোর্ট এসেছে তাতে করে এটা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে, এই নির্বাচন কোনো নির্বাচনই হয়নি। এটা একটা কঠিন তামাশা হয়েছে জাতির সঙ্গে। যে কথাটা আমি বার বার বলছি, জাতির সঙ্গে ক্রুয়েল মকারী।
তিনি বলেন, এ নির্বাচন বাংলাদেশের একটা বড় রকমের ক্ষতি করে দিয়েছে দীর্ঘ স্থায়ীভাবে। এই নির্বাচনের ফলে নির্বাচন প্রতিষ্ঠানের ওপর আস্থা জলে গেলো, এই নির্বাচনের ফলে নির্বাচন কমিশনের পরে আস্থা চলে গেলো, এই নির্বাচনের ফলে রাষ্ট্রের ওপরে আস্থা চলে যাচ্ছে এজন্যে যে, রাষ্ট্রযন্ত্রগুলোকে ব্যবহার করা হয়েছিলো, বিভিন্ন এজেন্সিগুলোকে ব্যবহার করা হয়েছিলো।সামগ্রিকভাবে যেন জনগণের প্রতিপক্ষ হিসেবে নামিয়ে দেয়া হয়েছে রাষ্ট্রকে। যেটা আওয়ামী লীগ করেছে। শুধু আমি নই, দেশের সকল সচেতন মানুষ মনে করে এই নির্বাচন কোনো নির্বাচনই হয়নি। যে কারণে আপনারা জানেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, বিএনপি, ২০ দলীয় জোট আমরা এই নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছি। পুনরায় একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আমরা একটা নির্বাচন দাবি করেছি এবং সেই নির্বাচনে জনগণ যাতে তার রায় দিতে পারে তার ব্যবস্থা করার জন্য আমরা বলেছি।
সরকারের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘বক্তব্যে উনি(প্রধানমন্ত্রী) যে ফিরিস্তি গুলো দিয়েছেন, উনার ইশতেহারের ফিরিস্তি, উনার কাজের ফিরিস্তি- এখানে তো বিরাট রকমের গরমিল রয়েছে। এই যে উন্নয়নের কথা বলা হচ্ছে এটা পুরোপুরি তো ধোঁকার উন্নয়ন। কিছু মানুষ বড়লোক হচ্ছে, ধনী হচ্ছেন। পত্রিকায় রিপোর্টও এসেছে যে, বাংলাদেশের ধনীর সংখ্যা আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে। আর গরীব আরো গরীব হচ্ছে। প্রত্যেকটি দ্রব্যের মূল্য বেড়েছে, মানুষের ক্রয় ক্ষমতা নিচে চলে যাচ্ছে। আপনার জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই, বিনিয়োগের কোনো নিরাপত্তা নেই এবং ব্যাংকে যারা টাকা রাখছেন তার পর্যন্ত দেখছেন ব্যাংক থেকেও টাকা কেটে নেয়া হচ্ছে বিভিন্নভাবে। দুর্নীতি এমনভাবে বেড়েছে যেন সেটা নিয়ে কেউ প্রশ্নও করতে পারে না। পুরোপুরি একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চলছে এবং সেটা করার জন্য এই সমস্ত আয়োজন করা হচ্ছে, সেজন্য নির্বাচনটা এভাবে করা হয়েছে।”
নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সকালে আসার পর সাংবাদিকরা তার কাছে প্রধানমন্ত্রীর জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণের ওপর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
এই সময়ে দলের ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।



 

Show all comments
  • Mohammed Shah Alam Khan ২৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ৯:১৭ পিএম says : 0
    প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ঐক্যের কথা বলেছেন কিন্তু তিনি অপশক্তির সাথে ঐক্য করতে যাচ্ছেন না এটও সত্য। কাজেই সেইদিক থেকে চিন্তা করলে বিএনপি জামাত দল এটা ভাবতেই পারে যে তাদেরকে বাদ রাখা মানে জাতীকে বাদ রাখা। কিন্তু তারা এটা ভাবতে নারাজ যে পাকিস্তানিদের দোসরেরা হচ্ছে অপশক্তি মানে বাঙালি জাতীর সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নেই। কাজেই আমি সরাসরি বলতে চাই বিএনপি জামাত জাতীয় ঐক্যের পর্যায়ে আসে না এটাই সত্য। আমাদের দেশ বাঙালিদের দেশ; আমাদের দেশে পাকিস্তানিদের কোন যায়গানেই কাজেই পাকিস্তানিদের দোসরদেরও যদিও তারা বাংলায় কথা বলে মানে বাংলা ভাষী তারপরও তাদের জায়গা এই বাংলায় নেই। কাজেই জাতীয় ঐক্যে আসতে হলে বিএনপিক জামাত বিসর্জন দিয়ে আসতে হবে নিইলে নিজের গায়েও অপশক্তির সীল লাগিয়ে জাতীর বাইরে থাকতে হবে এটাই মহা সত্য। এদিক থেকে চিন্তা করলে ফখরুল সাহেবের কথা ভুল নয় ভুল হচ্ছে তিনি যে পাকিস্তানিদেরদোসর এটা তিনি ভুলে যাচ্ছেন। আল্লাহ্‌ আমাকে সহ আমাদের সবাইকে সত্য বলতে, সত্যকে বুঝতে এবং সত্য পথে চলতে ক্ষমতা দিন। আমিন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রীর ঐক্যের আহ্বান
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ