Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শনির চাঁদে হয় ‘ভুতুড়ে’ বৃষ্টি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৭ জানুয়ারি, ২০১৯, ৩:২৬ পিএম

আকাশে মেঘ না জমলে কখনও বৃষ্টি হয় না। কিন্তু শনির চাঁদ টাইটান সেই নিয়মের ধারই ধারে না। সেখানে মেঘ ছাড়াই মুসলধারে নামে বৃষ্টি। ভুতুড়ে বৃষ্টি! টাইটানের উত্তর মেরুতে, গ্রীষ্মে।
এই প্রথম এই সৌরমণ্ডলের কোনও চাঁদে দেখা গেল, বৃষ্টি নামে গরম কালেও। আর সেই বৃষ্টিতে আকাশ থেকে পানি বদলে নেমে আসে তরল মিথেন। তবে তা আকাশের ঠিক কোথা থেকে নেমে আসছে, কেন নেমে আসছে, জানা যায়নি। আমাদের বৃষ্টির পানির ফোঁটার থেকে অনেক ধীরে ধীরে সেই মিথেন বৃষ্টির ফোঁটা নামে শনির চাঁদে।
নাসার ‘ক্যাসিনি’ মহাকাশযানের পাঠানো ছবি ও তথ্য এই খবর দিয়েছে। ওই বৃষ্টির পরেই ঠান্ডার মরসুম চলে গিয়ে পুরোপুরি গরম পড়ে শনির বৃহত্তম চাঁদ টাইটানের উত্তর মেরুতে। ‘ক্যাসিনি’র পাঠানো তথ্য বিশ্লেষণ করে একটি গবেষণাপত্র ছাপা হয়েছে আমেরিকান জিওফিজিক্যাল ইউনিয়নের আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার্স’-এ। যার মূল গবেষক ইডাহো বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী অনাবাসী ভারতীয় রজনী ধিংড়া।
মেঘ ছাড়া বৃষ্টি হচ্ছে কী ভাবে টাইটানের উত্তর মেরুতে, তা নিয়ে যথেষ্টই ধন্দে পড়ে গিয়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। কারণ, এই সৌরমণ্ডলের আর কোনও চাঁদেই এর আগে গরম কালে বৃষ্টি পড়তে দেখা যায়নি। এমনকী, শনির চাঁদ টাইটানের দক্ষিণ মেরুতেও এর আগে যে বৃষ্টি পড়তে দেখা গিয়েছিল, তা কিন্তু গরম কালে হয়নি।
রজনী ধিংড়া জানান, ‘এমন কোনও ক্লাইমেট মডেল নেই, যেখানে বলা আছে, মেঘ ছাড়াও বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টির জন্য সব সময়েই মেঘের প্রয়োজন। কিন্তু কেন, কী ভাবে টাইটানের উত্তর মেরুতে গরম কালে কোনও মেঘ ছাড়াই বৃষ্টি হয়, তা এখনও আমরা বুঝে উঠতে পারিনি। এও জানতে পারিনি কেন সেই বৃষ্টি হয় গরম কালে।’
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে শনির চাঁদ টাইটানের বায়ুমণ্ডলের মিল রয়েছে অনেকটাই। পৃথিবীর মতোই টাইটান পাথুরে। পৃথিবীর শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষার মতো নানা ঋতু রয়েছে টাইটানেও। তবে সেগুলির মেয়াদ অনেক বেশী। পৃথিবীর কয়েকটা বছর সেখানে একটা ঋতু। পৃথিবীর স্বাভাবিক পানি-চক্রের মতো একটা চক্র বা সাইক্লও রয়েছে টাইটানেও। তবে সেটা মিথেনের মতো তরল হাইড্রোকার্বনের।
পৃথিবীর চেয়ে অনেক কম পরিমাণে বৃষ্টি হয় টাইটানে। টানা ১৩ বছর শনি আর তার চাঁদ টাইটানের উপর নজর রেখেছিল ক্যাসিনি মহাকাশযান। কিন্তু ওই ১৩ বছরে বড়জোর ৭/৮ বার দেখা গেছে টাইটানের বৃষ্টি। পৃথিবীর অভিকর্ষ বলের সাত ভাগের এক ভাগ টাইটানের অভিকর্ষ বল। তাই পৃথিবীর আকাশ থেকে যে গতিতে নেমে আসে বৃষ্টি ধারা, টাইটানে নেমে আসা বৃষ্টির ধারা তার চেয়ে নামে অনেক ধীরে ধীরে। সেই ঘটনাকে দেখতে লাগে আমাদের তুষারপাতের মতো।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ‘শনির বৃষ্টি এখনও একটা জটিল রহস্য। আলোর দুই-একটা তরঙ্গদৈর্ঘ্যে সেই মেঘের মতো একটা কিছুর আভাস পেলেও, সব তরঙ্গদৈর্ঘ্যে সেই মেঘ দেখা যায়নি। আরও অবাক করেছে টাইটানের দক্ষিণ মেরু। সেখানে কিন্তু মেঘ ছাড়া বৃষ্টি হয় না কখনও। তা হলে, কেন উত্তর মেরুতে মেঘ ছাড়া বৃষ্টি হয়, এখনও বোঝা যাচ্ছে না।’ সূত্র: ইন্টারনেট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মহাকাশ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ