Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

দেশে গণতন্ত্র হত্যার যে পাঁয়তারা চলছে তা খুবই দুঃখজনক

প্রকাশের সময় : ১২ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মোহাম্মদ আবদুল গফুর

বাংলাদেশে বর্তমানে যে পরিস্থিতি বিরাজমান তাকে কি কোনো বিবেচনায় স্বাভাবিক বা আশাব্যঞ্জক মনে করা যায়? আমার ক্ষুদ্র বিবেচনায় এ প্রশ্নের একমাত্র উত্তরÑ না। সমাজ ও রাষ্ট্রের যেদিকে তাকাই কেবলই হতাশার চিত্র। একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর এর সংবিধানে যে চারটি রাষ্ট্রীয় মূলনীতি স্বাধীন বাংলাদেশের চালিকাশক্তি বলে ঠিক করা হয় সেগুলো ছিল গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র। এ মূলনীতি চতুষ্টয়ের মধ্যে একমাত্র প্রথমটি ছাড়া অন্য তিনটিকেই পরবর্তীকালে কোনো না কোনোভাবে পরিবর্তিত বা সংশোধিত করা হয়। একমাত্র গণতন্ত্রের গায়েই কোনো আঁচড় দিতে সাহস পায়নি কোনো সরকার।
বাংলাদেশের সংবিধানের চার রাষ্ট্রীয় মূলনীতির মধ্যে একমাত্র গণতন্ত্রের গায়েই আঁচড় দিতে সাহস পায়নি কোনো সরকারÑ তার অর্থ অবশ্য এই নয় যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর এদেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কখনো হুমকির সম্মুখীন হয়নি। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক হলেও ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকারের আমলেই গণতান্ত্রিক আদর্শের টুঁটি চেপে ধরে দেশের সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে একটি মাত্র শাসক দল চালু রেখে কুখ্যাত একদলীয় বাকশালী ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল।
পরবর্তীকালে বহু দুঃখজনক ঘটনার মধ্যদিয়ে একদলীয় বাকশালী ব্যবস্থা বাতিল করে দেশে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তিত হলেও একপর্যায়ে একটি নির্বাচিত সরকারকে সামরিক ক্যুর মাধ্যমে উৎখাত করে তদানীন্তন সেনাপ্রধান জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতা দখল করে বসলে সেই অসাংবিধানিক অপকর্মের প্রতি প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়ে বসেন দেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। এখানে উল্লেখযোগ্য যে, স্বাধীন বাংলাদেশে সর্বপ্রথম গণতন্ত্র-ঘাতী একদলীয় বাকশালী ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিতও হয়েছিল দেশের এই সর্বপ্রাচীন রাজনৈতিক দলটির শাসনামলেই। এই একদলীয় বাকশালী ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি একটি নির্বাচিত সরকার উৎখাতকারী সামরিক ক্যুর মাধ্যমে ক্ষমতা দখলকারী সেনাপ্রধানকে সমর্থনদানের ঘটনা প্রমাণ করে যে, সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক নেত্রী আদৌ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন না। যদি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী হতেন তা হলে শুধুমাত্র নিয়তান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ‘অপরাধে’ নির্বাচিত বিএনপি সরকারকে সামরিক ক্যুর মাধ্যমে উৎখাতকারী অসাংবিধানিক শক্তির প্রতি তিনি সমর্থন জানাতে পারতেন না।
অবশ্য তিনি যে আদৌ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন না তার আরো বহু প্রমাণ রয়েছে। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ আমলে একপর্যায়ে দেশের অন্যতম প্রধান দল বিএনপি নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকারকে সামরিক ক্যুর মাধ্যমে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করেন তদানীন্তন সেনাপ্রধান জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। স্বাভাবিকভাবে এই এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সোচ্চার হয়ে ওঠে বিএনপি, আওয়ামী লীগসহ সব রাজনৈতিক দল। তবে এ আন্দোলনে বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যতটা আন্তরিক ছিলেন, ততটা যদি আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনাও আন্তরিক থাকতেন, তা হলে এরশাদ সরকারের আয়ু অত দীর্ঘ হতো না।
আমাদের দেশের একশ্রেণীর নেতানেত্রী জনগণকে যতটা বোকা মনে করেন তারা যে তা নন তার প্রমাণ পাওয়া গেল এরশাদের দীর্ঘ স্বৈরাচারী শাসন-পরবর্তী প্রথম নির্বাচনেই। নির্বাচনকে সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে দেশের উভয় প্রধান দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে একমত হন। দেশের সেই প্রথম নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নেতৃত্বে ছিলেন তদানীন্তন প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমদ। নির্বাচনে নিজ ভোট কেন্দ্রে ভোটদানের পর সাংবাদিকদের সাথে আলোচনার একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি সব জেলার খবর নিয়েছি, নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠু হয়েছে। আপনারা লক্ষ্য রাখবেন কেউ যেন পরাজিত হয়ে এর মধ্যে আবার কারচুপি আবিষ্কার না করে। পরে নির্বাচনের পূর্ণ ফলাফল প্রকাশিত হলে দেখা গেল, আওয়ামী লীগ নয়, অধিকাংশ আসনে বিজয়ী হয়েছে বিএনপিশেখ হাসিনা তখন অবলীলা এসে বলে ফেললেন, নির্বাচনে সূক্ষ্ম কারচুপি হয়েছে। অর্থাৎ সুষ্ঠু নির্বাচনে আওয়ালী লীগ হেরে গেলেও ধরে নিতে হবে নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। বলা বাহুল্য, এটাও গণতান্ত্রিক মনমানসিকতার প্রমাণ বহন করে না।
মানুষ সাধারণত নিজের ভুল নিজে বুঝতে পারে না। তাই তার ব্যর্থতাও তার কাছে অনেকটা অজানাই থেকে যায়। নেতা-নেত্রীদের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম নয়। কোন নেতানেত্রী কতটা সফল বা ব্যর্থ তার প্রমাণ পাওয়া যায় অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে। এই নির্বাচন সুষ্ঠু অবাধ হতে পারে যদি নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকেন কোনো নির্দলীয় নিরপেক্ষ কর্তৃপক্ষ। এই বাস্তবতা বোধেই একদা বাংলাদেশের সংবিধানে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন পরিচালনার বিধান সংবিধানে বিধিবদ্ধ হয়। এ ব্যাপারে শেখ হাসিনার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
এরশাদের দীর্ঘ স্বৈরাচারী শাসন শেষে বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমদের নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি বিজয়ী হওয়ায় বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়। সেই খালেদা সরকারের মেয়াদ শেষে নতুন নির্বাচনের প্রশ্ন এলে প্রধানত তদানীন্তন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার দাবির মুখেই নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধান সংবিধানে বিধিবদ্ধ করা হয়। এভাবে চালু হওয়া এ ব্যবস্থায় দেশে বেশ কয়েকটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং তাতে পালাক্রমে দুই প্রধান দলই নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে দেশ পরিচালনার সুযোগ লাভ করে।
পরবর্তীকালে একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে এই সুন্দর ব্যবস্থাটি বদলিয়ে দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা পুনরায় চালু করা হয়। এই পরিবর্তনের প্রতিবাদে দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ৫ জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচন বর্জন করে। বর্তমান সরকার বিএনপি-বর্জিত সেই বিতর্কিত নির্বাচনেরই ফসল। দেশের অন্যতম প্রধান দল বিএনপি নির্বাচন বয়কট করায় ৫ জানুয়ারির ওই নির্বাচন কার্যত হয়ে পড়ে মূল্যহীন। ওই নির্বাচনে জনগণ সব আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। বিরোধী দলসহ বৃহত্তর জনগণ নির্বাচনে আগ্রহ হারিয়ে ফেললে ওই নির্বাচন কার্যত হয়ে পড়ে মূল্যহীন এক নির্বাচনী মহড়া। সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা কোটকেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে বেপরোয়াভাবে ব্যালট-পত্রে সিল মেরে সরকারদলীয় প্রার্থীদের পক্ষে ভোট-সংখ্যা বৃদ্ধির অবাধ সুযোগ লাভ করে। এ ছিল এমন এক নির্বাচন, যে নির্বাচনে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে কষ্ট করে যেতে হয়নি, যেতে হয়নি সব প্রার্থী-সমর্থকদেরও। সরকারদলীয় প্রার্থীদের নির্বাচিত হওয়ার ব্যবস্থা সব কেন্দ্রে সীমিত সংখ্যক কর্মীরাই সুসম্পন্ন করে দেন। এ জন্য জনসাধারণ এ নির্বাচনের নাম দেয় ভোটারবিহীন নির্বাচন।
এভাবে ক্ষমতায় পুনঃঅধিষ্ঠিত হওয়ার ফলে বর্তমান সরকারের নেতা-নেত্রীদের মধ্যে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগ্রহ সীমাহীনভাবে বেড়ে যায়। এরপর তারা প্রথমে পৌর নির্বাচন এবং সর্ব শেষে ইউপি নির্বাচন করে সর্বপর্যায় দলীয় ক্ষমতার বিস্তার ঘটাতে উঠেপড়ে লেগেছে। এসব নির্বাচনে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর আক্রমণ চালিয়ে হতাহত করা, বাড়িঘরে আগুন দেয়া থেকে শুরু কওে ভোটকেন্দ্র দখল করে বিরোধীদলীয় লোকদের বাধা দেয়া, তাদের গুম-অপহরণ-হত্যা করা, বাড়িঘর ধ্বংস প্রভৃতি হেন অনিয়ম, জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন নেইÑ যা তারা করছেন না। ফলে দেশে মানুষের মন থেকে শান্তি ও স্বস্তি যেমন বিদায় নিয়েছে তেমনি দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে জমাট হতাশা বাসা বাঁধছে চিন্তাশীল মানুষদের এবং দেশের শুভাকাক্সক্ষীদের মনে। এসব নিয়ে প্রচুর লেখালেখিও হচ্ছে হাতেগোনা দু-একটি বিদেশি রাষ্ট্র ছাড়া পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই। যে দু-একটি ব্যতিক্রমী দেশ বর্তমান সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে তারাও তার বিনিময়ে তাদের জাতীয় স্বার্থ আদায় করে নিচ্ছে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ ও সার্বভৌম বিপন্ন করে।
কোনো আমলে দেশে গণতন্ত্র বিপন্ন হলে জাতীয় স্বার্থও যে আখের বিপন্ন হতে বাধ্য বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি তার প্রমাণ। ব্যক্তিস্বাধীনতাভোগী জনগণ দেশের জাতীয় স্বার্থের পক্ষে সোচ্চার হয়ে উঠতে পারে। পক্ষান্তরে কোনো দেশে যদি গণতন্ত্র না থাকে সে দেশের সরকারের প্রতি জনগণের আস্থাহীনতার ক্ষতিটুকু পুষিয়ে নিতে সরকার জাতীয় স্বার্থের বিনিময়ে হলেও বিদেশিদের আস্থা অর্জনের চেষ্টা করে। এ নিরেট সত্যটা অনেকে বুঝলেও আমাদের বর্তমান সরকারের বিজ্ঞ নেতানেত্রীরা বুঝতে পারেন না, এটা জাতির জন্য চরম দুর্ভাগ্য।
৫ জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার পর প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রথমে পৌর পর্যায়ে পরে ইউপি পর্যায়ে নির্বাচনী প্রহসনের মাধ্যমে দলীয় ক্ষমতার বিস্তার ঘটানোর নেশায় যেভাবে উন্মত্ত হয়ে উঠেছে সরকারি দলÑ তাতে দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ আরও অন্ধকারাছন্ন হয়ে পড়তে বাধ্য। এ প্রহসন অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত গণতন্ত্রের যথাযথ বিকাশের স্বার্থেই।
গণতন্ত্রের মোদ্দা কথাই হচ্ছে, পরস্পরবিরোধী মতামতের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নিশ্চয়তা এবং এমন এক সরকারের ক্ষমতায়ন যাদের প্রতি জনগণের আস্থা রয়েছে। এই আস্থার প্রমাণ পাওয়া যেতে পারে নিয়মিত ব্যবধানে সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের নিশ্চয়তা থেকে। বর্তমান সরকারের শাসনামলে এর কোনোটাই সম্ভব হচ্ছে না। সরকারের নেতৃবৃন্দ গণতন্ত্রের বুলি উচ্চারণে কখনো ক্লান্তিবোধ না করলেও বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক অধিকার স্বীকার করতে অসম্ভব বেদনা বোধ করেন। যখন-তখন বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা-মামলার মাধ্যমে তাদের মুখ বন্ধ করে রাখার ব্যাপারে তাদের সীমাহীন উৎসাহ।
গণতন্ত্রের অন্যতম শর্ত জনগণের অবাধ রায়ের ভিত্তিতে সরকার গঠনের ব্যবস্থা। এ জন্য আমাদের দেশের বিশেষ পরিস্থিতিতে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের বিধান যে বিশেষ উপযোগী তা সুপ্রমানিত। এরশাদ-পরবর্তীকালে খালেদা সরকারের শাসনামলের শেষ দিকে শেখ হাসিনা যখন বিরোধীদলীয় নেত্রী তখন প্রধানত তাঁর দাবির প্রেক্ষিতে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের বিধান সংবিধানে বিধিবদ্ধ হয়। এই সুন্দর ব্যবস্থার অধীনে দেশে বেশ কয়েকটি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং তার ফলে দেশের দুই প্রধান দলই পালাক্রমে নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠনের সুযোগ লাভ করে। কিন্তু পরবর্তীতে একপর্যায়ে হাসিনা সরকারের আমলে সেই ব্যবস্থা বাতিল করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে দেশে গণতন্ত্র বিকাশের পথ বন্ধ করে দেয়া হয়। প্রশ্ন ওঠে, একদা যে ব্যবস্থা শেখ হাসিনার দৃষ্টিতে চরম কাম্য হয়ে উঠেছিল, তা পরবর্তীকালে অন্য রূপে দেখা দিয়েছে কোণ রহস্যের কারণে ?
বর্তমানে দেশে যেসব কর্মকা- চলছে, তাতে মনে হয় দেশ থেকে গণতন্ত্রের নাম-নিশানা চিরতরে মুছে দেয়ার একটা সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে সরকার এগিয়ে চলেছে। যে কোনো রাষ্ট্রের মধ্যে তিনটি বিভাগ থাকে, যার একটি নির্বাহী, আরেকটি আইন প্রনয়ন এবং তৃতীয়টি বিচার বিভাগ। প্রথম দুটি সাধারণত সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকে বলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ওপরই নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের নাগরিকদের ব্যক্তিস্বাধীনতা রক্ষার অধিকার। জনগণের অধিকার রক্ষার শেষ ভরসাস্থল বিচার বিভাগ। সেই বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ পর্যায়ের মাননীয় বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা আইনসভার ওপর ন্যস্ত করার যে চিন্তাভাবনা চলছে সরকারি নেতানেত্রীদের মধ্যে, তার মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বাধীনতাও শেষ পর্যন্ত বিপন্ন করা হয় কিনা তাই এখন দেখার বিষয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দেশে গণতন্ত্র হত্যার যে পাঁয়তারা চলছে তা খুবই দুঃখজনক
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ