Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা আজ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

চলতি ২০১৮-১৯ অথর্বছরের দ্বিতীয়াধের্র (জানুয়ারি-জুন) মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে আজ বুধবার। সকাল সাড়ে ১১ টায় বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে প্রেস কনফারেন্সে নতুন এ মুদ্রানীতি ঘোষণা করবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন সরকারের প্রথম এই মুদ্রানীতি ‘সম্প্রসারণমূলক’ হবে বলে আভাস মিলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কমর্কতাদের কথায়। তারা বলছেন, গত দশ বছরে বাংলাদেশের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টানা তৃতীয়বারের দায়িত্ব পালন শুরু করেছে নতুন সরকার। উন্নয়নের সেই ধারাবাহিকতা রাখতে মূল্যস্ফীতি সহনীয় রেখে কাঙ্খিত জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য ‘সম্প্রসারণমূলক’ মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, জুলাই-ডিসেম্বর মেয়াদের মুদ্রানীতির ধারাবাহিকতায় নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে। বিশেষ করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার ওপর সবাির্ধক গুরুত্ব দেয়া হবে। সেই সঙ্গে কাঙ্খিত প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে বেসরকারি খাতে ঋণ জোগান যেন বাধাগ্রস্ত না হয়, সেদিকে নজর রাখা হবে।
মুদ্রানীতি প্রণয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অথর্নীতির প্রধান সূচকগুলো বেশ ইতিবাচক। গত দুই মেয়াদে যে সরকার ছিল সেই সরকারই ফের দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছে। নতুন সরকার নতুন উদ্যোমে কাজ শুরু করে দিয়েছে। তার সঙ্গে তাল মিলিয়েই নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে।
জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের প্রবৃদ্ধি তার আগের মেয়াদের (জানুয়ারি-জুলাই, ২০১৮) মুদ্রানীতির মতোই ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ ধরা হয়েছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, ডিসেম্বর শেষে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩ দশমিক ২০ শতাংশ। ‘যেহেতু বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ জুলাই-ডিসেম্বর মেয়াদের লক্ষ্যের চেয়ে কম আছে; সেহেতু এবার একটু সম্প্রসারণের দিকে যাওয়া হতে পারে,’ বলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই কর্মকর্তা।
২০১৮-১৯ অথর্বছরের বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ। আর গড় মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশে আটকে রাখার আশা করা হয়েছে। ২০১৭-১৮ অথর্বছরের বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। আর গড় মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫ শতাংশে আটকে রাখার আশা করা করা হয়েছিল। অথর্বছর শেষে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশে পৌঁছেছে। আর পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে (মাসওয়ারি) ডিসেম্বর মাসে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ। গড় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
বরাবরের মতো এবারও নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণার আগে অথর্নীতিবিদ, ব্যবসায়ী, ব্যাংকার ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাজেট বাস্তবায়নে সরকারের ঘোষিত আর্থিক নীতিকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে প্রতি অথর্বছরে দুটি মুদ্রানীতি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, আমার ধারণা, এবারের মুদ্রানীতি আগের (জুলাই ’১৮ থেকে ডিসেম্বর ’১৮) মুদ্রানীতির মতোই থাকবে। নতুন বছরের মুদ্রানীতিতে খুব একটা পরিবর্তন আসবে বলে মনে হয় না। তবে মূল কথা হলো-সর্বশেষ মুদ্রানীতিও বাস্তবায়ন হয়নি। বিশেষ করে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি মুদ্রানীতিতে যা ছিল, তার চেয়ে অনেক কম রয়ে গেছে।
মির্জ্জা আজিজুল বলেন, ব্যাংকের সুদের হার কিছুটা কমেলেও তা এক অঙ্কে আসেনি। এই ক্ষেত্রে সর্বশেষ মুদ্রানীতি কেন বাস্তবায়ন করা হয়নি, তা বিশ্লেষণ করে নতুন মুদ্রানীতিতে তার প্রতিফল থাকতে হবে। বিশ্লেষণের ভিত্তিতে ভবিষ্যতে কী করা যেতে পারে, তা করা উচিত। আমি আশা করি, নতুন মুদ্রানীতিতে সেই দিকনির্দেশনা থাকবে। সাবেক এই অর্থ উপদেষ্টা বলেন, খেলাপি ঋণের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অর্থ মন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করছে। দেখা যাক কী হয়। তবে আমি মনে করি, মূলত গত জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত যে মুদ্রানীতি ছিল, নতুন মুদ্রানীতিও প্রায় একইরকম থাকবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মুদ্রানীতি

৩০ জানুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ