Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

গোপালগঞ্জে বারি ১৫ সারিষার প্রদর্শনী প্লট : বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে সাফল্যের হাসি

প্রকাশের সময় : ২৮ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মো. অহেদুল হক, গোপালগঞ্জ থেকে : গোপালগঞ্জে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত বারি ১৫ জাতের সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। এ জাতের সরিষা হেক্টরে ১ হাজার ৬শ’ কেজি থেকে ২ হাজার কেজি উৎপাদন হবে। এ সরিষা আবাদ সম্প্রসারিত হলে দেশে সরিষার আমদানি নির্ভরতা কমবে। প্রতি কেজি বারি ১৫ জাতের সরিষা থেকে ৫০০ গ্রাম তেল পাওয়া যায়। এ সরিষা আবাদের মাত্র ৯০ দিনের মাথায় ক্ষেত থেকে কাটিং করা যায়। তারপর ক্ষেতে ইরি-বোর আবাদ করা যায়। বারি সরিষা আবাদ করে কৃষক বাম্পার ফলনের পাশাপাশি বিশাল মুনাফা করবে। গত শুক্রবার গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চন্দ্রদিঘলিয়া গ্রামে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পিরোজপুর-গোপালগঞ্জ-বাগেরহাট সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প ও গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আয়োজিত কৃষক সমাবশে এ তথ্য জানানো হয়। এ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহা পরিচালক ড. মো. রফিকুল ইসলাম মন্ডল। পিরোজপুর-গোপালগঞ্জ-বাগেরহাট সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আ.স.ম মাহাবুবুর রহমান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. খলিলুর রহমান, গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণের ডিডি সমীর কুমার গোস্বামী, ঈশ্বদী ডাল গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক জেবুননেছা। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এইচ এম খায়রুল বসার, কৃষক ওবায়দুর রহমান শাহজাহান মোল্লা, জিল্লুর রহমানসহ আরো অনেকে। পিরোজপুর-গোপালগঞ্জ-বাগেরহাট সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, এ বছর গোপালগঞ্জ জেলার ৫ উপজেলায় ২৫০ বিঘা জমিতে বারি ১১, ১৪ ও ১৫ জাতের সরিষা আবাদ করেছে কৃষক। এসব জমিতে সরিষার ফলন ১ হাজার কেজি থেকে ২ হাজার কেজি হবে বলে প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। বারি ১৫ জাতের সারিষার প্রদর্শনী প্লটে আবাদকারী গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চন্দ্রদিঘলিয়া গ্রামে কৃষক শাহজাহান মোল্লা বলেন, আমি অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে বারি ১৫ জাতের সরিষা আবাদ করেছি। স্থানীয় জাতের সরিষা হেক্টরে ৬০০ কেজি বরাদ্দে ফলে। কিন্তু বারি সরিষা প্রতি হেক্টরে ২ হাজার কেজি ফলবে বলে আশা করছি। স্থানীয় জাতের তুলনায় তিনগুণেরও বেশি বারি সরিষা ফলবে। এতে আমি অনেক মুনাফা ঘরে তুলতে পারবো। আমার এ সাফল্য দেখে আগামী বছর আমাদের গ্রামের অনেক কৃষক এ জাতের সরিষা আবাদের আগ্রহ দেখাচ্ছেন। প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. খায়রুল বাসার বলেন, পিরোজপুর-গোপালগঞ্জ-বাগেরহাট সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এ অঞ্চলে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। একদিকে দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে আবাসনের জন্য দিনদিন কৃষি জমি কমছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি কৃষকের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি। অমরা কৃষককে প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। কৃষক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জ্ঞান কাজে লাগিয়ে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি করছে। চলতি রবি মৌসুমে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চন্দ্রদিঘলিয়া গ্রামের কৃষক শাহজাহান বারি ১৫ জাতের সরিষা আবাদ করে লাভবান হচ্ছেন। তিনি স্থানীয় জাতের তুলনায় বারি সরিষার ফলন তিনগুণ পাচ্ছেন। এ সরিষা চাষ অত্যন্ত লাভজনক। আগামীতে এ অঞ্চলের কৃষক এ জাতের সরিষা আবাদে ঝুঁকে পড়বেন বলে আমি বিশ্বাস করি। পিরোজপুর-গোপালগঞ্জ-বাগেরহাট সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আ.স.ম মাহাবুবুর রহমান খান বলেন, এ প্রকল্পের বদৌলতে গোপালগঞ্জসহ ৩ জেলায় কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ধান, তেল, ডাল,পাট, সবজি, ফল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধিতে আমাদের প্রকল্প নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহা পরিচালক ড. মো. রফিকুল ইসলাম মন্ডল বলেন, গোপালগঞ্জে বারি উদ্ভাবিত ফসল আবাদ করে কৃষক কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপশি লাভবান হচ্ছেন। বারি জাতের সরিষা আবাদ সম্প্রসারিত হলে দেশে সরিষার আমদানি নির্ভরতা কমবে। এ সরিষার তেলের গুণগত মানও বেশ ভাল। এভাবেই কৃষককে বারিজাতের বিভিন্ন ফসল আবাদে উদ্বুদ্ধ করে পিরোজপুর-গোপালগঞ্জ-বাগেরহাট সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে গোপালগঞ্জে তেল, ডাল ও ধান জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করা হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গোপালগঞ্জে বারি ১৫ সারিষার প্রদর্শনী প্লট : বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে সাফল্যের হাসি
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ