Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আইজি পদ ফোর স্টারসহ একগুচ্ছ দাবি পুলিশের

পুলিশ সপ্তাহ-২০১৯

সাখাওয়াত হোসেন | প্রকাশের সময় : ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

পুলিশের আইজি পদটি চার তারকার (ফোর স্টার) সমমর্যাদা, স্বতন্ত্র পুলিশ বিভাগ ও মেডিক্যাল কলেজসহ একগুচ্ছ দাবি পেশ করা হবে এবারের পুলিশ সপ্তাহে। এছাড়া একাধিক আইজিপি (মহাপরিচালক) পদ ও বিভিন্ন দূতাবাসে একজন করে পুলিশ কর্মকর্তারও নিয়োগ চায় বাংলাদেশ পুলিশ। পুলিশ সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এসব দাবি জানানো হবে পুলিশের পক্ষ থেকে। আগামীতে অতিরিক্ত ডিআইজি থেকে অতিরিক্ত আইজিপি পর্যন্ত ২৮০টি সুপারনিউমারারি (সংখ্যাতিরিক্ত) পদ চায় পুলিশ। পুলিশ সদরদফতর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। 

অন্যদিকে ২০১৮ সালে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে সাহসী ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার জন্য ৬৪টি জেলার পুলিশ সুপারসহ ৩৪১জন কর্মকর্তাকে পদকের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। সাহসিকতা ও সেবায় বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (বিপিএম) ও প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল (পিপিএম) পদকের জন্য তাদের মনোনীত করা হয়। পুলিশ সপ্তাহে এসব পদক প্রদান করা হবে।
সূত্র জানায়, চার তারকার সমমর্যাদার পদ পাওয়া গেলে তাতে জেনারেল অর্থাৎ সেনা প্রধানের সমমর্যাদা পাবেন পুলিশ প্রধান (আইজিপি)। বর্তমানে আইজিপি থ্রি স্টার জেনারেল। এখন র‌্যাংকব্যাজ উন্নীত করে পদটিকে চার তারকা জেনারেলের সমান মর্যাদাসম্পন্ন চান পুলিশ কর্মকর্তারা। আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হতে যাওয়া ‘পুলিশ সপ্তাহে’ প্রধানমন্ত্রীর কাছে এসব দাবি তোলা হবে। এবারের পুলিশ সপ্তাহের স্নোগান ‘পুলিশ-জনতা ঐক্য গড়ি, মাদক-জঙ্গি নির্মূূল করি’। ইতিমধ্যে পুলিশের নীতি-নির্ধারণী বৈঠকে এই দাবি দাওয়া অনুমোদন করা হয়েছে। পুলিশের এই দাবি-দাওয়াগুলোর মধ্যে আরো রয়েছে-পুলিশের জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট একটি হাসপাতাল নির্মাণ, নতুন ১ লাখ পুলিশ সদস্য নিয়োগ, নতুন যানবাহন ক্রয় ও লজিস্টিকস সাপোর্ট নিশ্চিতকরণ।
পুলিশ সদর দফতরের জনসংযোগ বিভাগের এআইজি মো. সোহেল রানা দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, পুলিশ সপ্তাহের সব প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। সন্ত্রাস, মাদক ও জঙ্গি দমন ছাড়াও পুলিশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্যের স্বাক্ষর রাখছে। পদকের জন্য ৩৪১ পুলিশ কর্মকর্তাকে মনোনীত করা হয়েছে। পুলিশ সপ্তাহে পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের দাবি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরা হবে। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ সদর দফতর এবারের পুলিশ সপ্তাহে যেসব কর্মসূচী প্রণয়ন করেছে তাতে রয়েছে অনুষ্ঠানের প্রথম দিন সকালে দেশের বিভিন্ন পুলিশ ইউনিটের সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত কন্টিনজেন্ট, সুসজ্জিত বাদক দল, অশ্বারোহী ও পতাকাবাহী দলের নয়নাভিরাম প্যারেড পরিদর্শনের মাধ্যমে অভিবাদন গ্রহণ করবেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর ’১৮ সালে কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পুলিশ সদস্যদের বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (বিপিএম) ও প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল (পিপিএম) পদকের ব্যাজ পরিয়ে দেবেন তিনি। পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) স্টল পরিদর্শন শেষে প্রধানমন্ত্রী পুলিশ অডিটরিয়ামে পদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কল্যাণ সভায় যোগ দেবেন। এ সভায় পুলিশ সার্ভিস এ্যাসোসিয়েশনের নেতারা সার্বিক অবস্থা বর্ণনা করে তাদের দাবি দাওয়া তুলে ধরবেন। মধ্যাহ্নভোজের মধ্য দিয়ে সভা শেষ হবে। পরে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কল্যাণ প্যারেড হবে। পরদিন প্রধানমন্ত্রী পুলিশ বাহিনীর উর্ধতন কর্মকর্তাদের সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আইনশৃঙ্খলার উন্নয়নে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেবেন। এদিন বিকেলে রাজারবাগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তাদের বৈঠক ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীদের সঙ্গে তাদের বৈঠকের কথা রয়েছে। তৃতীয় দিন পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তারা বঙ্গভবনে যাবেন। সেখানে প্রেসিডেন্ট তাদের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। রাজারবাগে ভাল কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ আইজিপি ব্যাজ দেয়া হবে। ৭ ফেব্রুয়ারি রাজারবাগে পুলিশের মাঠপর্যায়ের সদস্যদের সঙ্গে আইজির বৈঠক, সিআইডির সঙ্গে বিশেষ সভা, পুলিশ সার্ভিস এ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে। তাছাড়া সপ্তাহজুড়ে চলবে বিভিন্ন সভা-সেমিনার। এ সময়েই পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট নিজেদের ’১৮ সালের কাজের মূল্যায়ন ও ’১৯ সালের কর্মপদ্ধতি নির্ধারণ করবে।
পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামো ভারসাম্যহীন ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ। এরই মধ্যে পুলিশে সুপারনিউমারারি পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। আগামীতে অতিরিক্ত ডিআইজি থেকে অতিরিক্ত আইজিপি পর্যন্ত ২৮০টি সুপারনিউমারারি (সংখ্যাতিরিক্ত) পদ চায় পুলিশ। পদোন্নতি চেয়ে এরই মধ্যে পুলিশ সদরদফতর থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবও পাঠানো হয়েছে। এবারের পুলিশ সপ্তাহে জাতীয় জরুরি সেবা সার্ভিস ৯৯৯-এর সাংগঠনিক কাঠামো বৃদ্ধির ব্যাপারে আলোচনা হতে পারে। এটি একটি আলাদা ইউনিট হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে। এরই মধ্যে এটির প্রয়োজনীয় জনবল ও যানবাহনের অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলে ওই কর্মকর্তা মন্তব্য করেন।
জানা গেছে, পুলিশ ও সিভিল পদসহ বর্তমানে পুলিশ বাহিনীতে মঞ্জুরীকৃত জনবল দুই লাখ ১২ হাজার ছয়জন। দেশে এক লাখ মানুষের নিরাপত্তায় ১২০ জন পুলিশ রয়েছে। এ সংখ্যা ভারতে প্রতি লাখে ১৫০ জন, পাকিস্তানে ১৮১ ও মালয়েশিয়ায় ৩২০ জন। প্রতিবেশী অনেক দেশের জনসংখ্যার তুলনায় দেশে পুলিশের সংখ্যা কম।



 

Show all comments
  • Mohd Mojib ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৫২ এএম says : 0
    বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী যা কিছু দাবি করে তাহা পূরণ করা সরকারের দায়িত্ব এবং কর্তব্য কারণ পুলিশ বাহিনীর সার্বিক সহযোগিতায় আমাদের সরকার বিগত 10 বছর ক্ষমতায় ছিল এখনও নতুন করে ক্ষমতায় এসেছে এটা একমাত্র ভূমিকা বাংলাদেশ পুলিশ এই পুলিশের প্রতিদান দিয়ে কখনোই শেষ করা যাবে না তাদের ঋণ কোনদিন শোধ হবার নয়
    Total Reply(0) Reply
  • Mahmudul Mahmud ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৫৪ এএম says : 0
    প্রশাসন ক্যাডারে ২৩২৩ হাজারের উপর কর্মকর্তা সুপার নিউমারারারি প্রমোশন/পদবি নিয়ে আছে; কাক পক্ষি টের পায় না,পুলিশের জন্য ৪৯৫ টা পদবি চাইছে প্রশাসনের মাথা খারাপ হয়ে গেছে।
    Total Reply(0) Reply
  • জাহাঙ্গীর জাহিদ ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৫৪ এএম says : 0
    উনারা যা যা চায় সব দিয়ে দেয়া উচিত
    Total Reply(0) Reply
  • Asm Fakhrul Islam ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৫৫ এএম says : 0
    নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রস্তুতি চলতেছে আর কি।
    Total Reply(0) Reply
  • Mosarrof Hossain Rana ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৫৫ এএম says : 0
    IGP should get the status of a Ministe!! And all police officers will be grade-1. ঠিক আছে না?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পুলিশ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ