Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

এমন আবাহনীকে চায়নি মোহামেডান

প্রকাশের সময় : ১৩ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : দুই চিরপ্রতিদ্ব›দ্বীর লড়াই এতোটা একপেশে হবে, এমনটা কল্পনা করেনি সমর্থকরাও। প্লেয়ার্স ড্রাফটে কাগজে-কলমে সেরা দলের স্টিকার আবাহনীর। অথচ, তামীমের এই দলটিই কি না মুশফিকুরের মোহামেডানের কাছে অসহায়! ৩৭ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটের জয়ে উৎসবে মেতে উঠলো মোহামেডান।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের ব্যাটিং বান্ধব উইকেটে মোহামেডানের কাছে কতোটাই না নাকাল হতে হলো আবাহনীকে। ১৮৩ রানে ইনিংস গুটিয়ে ফেলতে হলো দলটিকে! শুভাশিষের প্রথম ওভারে ফার্স্ট সিøপে তামীমের ফিরে আসার পর হাবিবুর রহমান জনির তৃতীয় ওভারে লিটন, অভিষেক ক্যাচ দিয়ে এসেছেন! স্কোর শিটে ১৫ উঠতে ৩ টপ অর্ডারের ফিরে আসার পর মনোবলটাই যেনো ভেঙ্গে গেছে আবাহনীর। সেখান থেকে ৪র্থ জুটির ৪৭, ৫ম জুটির ৩৮ এবং তাসকিনের ব্যাটসম্যান হয়ে ওঠায় ৮ম জুটির ৫১ এ কিছুটা মান রক্ষা হয়েছে আবাহনীর।
আবাহনীকে প্রথম পাওয়ার প্লেতে (৩৫/৩) ব্যাকফুটে নামিয়ে এনেছে মোহামেডান। ইনিংসের মাঝপথে বিশলা (২৩), শান্ত (৪২), মোসাদ্দেক (২৭),রাজু (২৮) ইনিংস বড় করতে না পারায় দ্বিতীয় পাওয়ার প্লে’র ৩০ ওভারেও (১০৭/৪) চ্যালেঞ্জিং স্কোরের আভাস দিতে পারেনি আবাহনী। শুভাশিষের ৯ম ওভারে মোসাদ্দেক এবং সাকলায়েন সজীব ফিরে আসলে বাধ্য হয়ে দায়িত্বটা নেন টেল এন্ডার তাসকিন। তবে ৪৯ বলে ৩ চার ১ ছক্কায় ৩৮ রানের ওই ইনিংসে মোহামেডানকে চ্যালেঞ্জ দিতে পারেনি আবাহনী। স্পিন বিষে আবাহনীকে ঘায়েল করতে চেয়েছিলেন মোহামেডান কোচ সোহেলÑকিন্তু গতকাল মোহামেডান সমর্থকদের বড় জয়ের উৎসবের উপলক্ষ্য এনে দিয়েছেন পেস বোলার শুভাশিষ (৩/৩৪)।
হোক না পুঁজি ১৮৩, কিন্তু তাই বলে কেন ফিল্ডিংয়ে নেমে পুরোপুরি হাল ছেড়ে দেবে আবাহনী? বোলিং, তো দূরের কথা,ফিল্ডিংয়ে এতোটুকু চাপও যে দিতে পারেনি আবাহনী। আবাহনী বোলার ফিল্ডারদের শরীরি ভাষা বলেছে তা। তাসকিনের প্রথম ওভারে বাঁ হাতের কব্জিতে পেয়েছিলেন চোট সৈকত আলী, সেই চোটটা বাড়তে থাকায় ড্রেসিং রুমে গেছেন ফিরে এই ওপেনার। তারপরও আবাহনী বোলার ফিল্ডাররা মোহামেডানের উপর চড়াও হতে পারেননি। তাসকিনের বলে ইজাজের স্কাই ক্যাচ ছেড়েছে জুবায়ের, ২৪ রানের মাথায় জীবন পেয়ে সেই ইজাজ ইনিংস টেনে নিয়েছেন ৪২ পর্যন্ত। অফ সাইডে স্বাচ্ছন্দে খেলছেন থেরাঙ্গা, মুশফিকুরÑতারপরও অফ সাইডে খেলার সুযোগই যে দিয়েছে আবাহনী বোলার ফিল্ডাররা! মোহামেডানের শ্রীলংকান রিক্রুট থেরাঙ্গা দারুন নির্ভরতা দিয়ে চলেছেন এবার। রূপগঞ্জ,কলাবাগান একাডেমির পর আবাহনীর বিপক্ষে উপর্যুপরি ফিফটি উদযাপন করেছেন তিনি গতকাল। ১০৫ বলে ৭ চার ১ ছক্কায় ৭৭ রানের হার না মানা ইনিংসে ৬ ম্যাচে ৩৭৬ রানে এখন প্রিমিয়ার ডিভিশনে রান সংগ্রহে সবার উপরে এই লঙ্কান। জয়টা আরো বড় হতে পারতো মোহামেডানের। মোসাদ্দেক,সাকলায়েন সজীব, তাসকিনকে ছক্কা মেরে উপর্যুপরি দ্বিতীয় ফিফটির সম্ভাবনা জাগিয়ে লং অফে ক্যাচ দিয়ে এসেছেন ইজাজ (৪২)। তাসকিনকে ২টি চার মেরে বড় শটে প্রলুদ্ধ হয়েও ভুল করেছেন মুশফিকুর। তাসকিনের বাউন্সারে উইকেট কিপারের মাথার উপর দিয়ে খেলতে যেয়ে ক্যাচ দিয়ে এসেছেন মুশফিকুর বিশলাকে (১৬)! এমন দিনে আবাহনীর ইনিংসে ১০ উইকেটের সব ক’টিই ক্যাচ (মুশফিকুর ৪টি ডিসমিসাল, সৈকত ২টি ক্যাচ, শুভাশিষ, আরিফুল, নাইম জুনিয়র, হবিবুর একটি করে ক্যাচ)! লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে বিশ্বরেকর্ড হয়ে গেছে দুই জায়ান্টের ম্যাচে।
৬ষ্ঠ ম্যাচে ৫ম জয়ে সুপার লিগের পথে এক পা বাড়িয়ে রেখেছে মোহামেডান। এই জয়ে পয়েন্ট তালিকায় এককভাবে শীর্ষে উঠে এসেছে ঐতিহ্যবাহী সাদা-কালো দলটি। অন্যদিকে ৬ষ্ঠ ম্যাচে তৃতীয় হারে সুপার লিগ কঠিন হয়ে পড়েছে আবাহনীর।

আবাহনীÑমোহামেডান
আবাহনী ঃ ১৮৩/১০ (৪৮.৪ ওভারে), তামীম ৪, লিটন ৩, অভিষেক ৭, বিশলা ২৩, নাজমুল শান্ত ৪২, মোসাদ্দেক সৈকত ২৭, রাজু ২৮, সাকলায়েন সজীব ০, তাসকিন ৩৮*, জুবায়ের ০, অমিত নয়ন ০, শুভাশিষ ৩/৩৪, হাবিবুর ২/৩০, নাইম জুনি. ২/৩০, নাইম ১/৩৫, এনামুল জুনি.১/২৯, আরিফুল ১/১১। মোহামেডান : ১৮৫/২ (৪৩.৫ ওভারে), সৈকত ১৩ (রিটায়ার্ড হার্ট), ইজাজ ৪২, থেরাঙ্গা ৭৭, মুশফিক ১৭, নাইম ২৫*, তাসকিন ১/৪২, অমিত নয়ন ১/৩৪।
ফল : মোহামেডান ৮ উইকেটে জয়ী। ম্যাচ সেরা : শুভাশিষ (মোহামেডান)।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: এমন আবাহনীকে চায়নি মোহামেডান
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ