Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আমাকে মিয়ানমারে পাঠানোর আগে এখানেই গুলি করতে হবে: অ্যাঞ্জেলিনাকে ধর্ষিত নারী

কক্সবাজার ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৯ পিএম

চারদিনের সফরে বাংলাদেশে আসা জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা-ইউএনএইচসিআরের বিশেষ দূত ও হলিউড অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছেন। গত দুদিন তিনি শরণার্থী শিবিরগুলোতে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের ঘরগুলো ঘুরে দেখেন। তিনি শিশু, নারীসহ নানা বয়সী মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের সঙ্গে কথা বলে তাদের দুঃখ বোঝার চেষ্টা করেন।

মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা নারী-পুরুষের কষ্টের কথা মন দিয়ে শোনেন হলিউডের এ সাড়াজাগানো অভিনেত্রী। মঙ্গলবার কুতুপালংয়ে এক রোহিঙ্গা শিবিরে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ধর্ষণের শিকার এক নারীর ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা শোনেন তিনি। ওই সময় ওই নারীসহ অন্যরা জোলিকে বলেন, হয় তাদের বাংলাদেশে রাখা হোক, নতুবা গুলি করে মেরে ফেলা হোক। তবু তারা মিয়ানমারে ফিরে যাবেন না।

তখন অনেক নারী রাখাইনে ফিরে যাবেন না বলে তাকে জানান।তাদের ফিরে যাওয়ার নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টির দায়িত্ব মিয়ানমার সরকারের বলে জানান জোলি।

মঙ্গলবার বিকালে উখিয়ার কুতুপালং মধুরছড়া ক্যাম্প-৫ এ প্রেস ব্রিফিংয়ে জোলি বলেন, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি- মিয়ানমারে অসংখ্য নারী-পুরুষ সেনা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

এখনও তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। তারা জানিয়েছেন, হয় তাদের বাংলাদেশে রাখা হোক, না হয় গুলি করে মেরে ফেলা হোক।

তিনি বলেন, ‘এখন সবার দায়িত্ব হলো রাখাইনে যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত যেন তাদের ফেরত না পাঠানো হয়। নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও অন্য সুবিধা দেয়ার জন্য তিনি বাংলাদেশের প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশের পাশে দাঁড়াতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

সংখ্যাটা এত বড় যে, একা বাংলাদেশ সামলাতে পারবে না। এ কারণেই সবার সহযোগিতা দরকার। এ ছাড়া বিশ্ব সম্প্রদায়ের উচিত রোহিঙ্গারা যাতে নিজ দেশে নাগরিকত্ব পেয়ে মর্যাদার সঙ্গে বসবাস করতে পারে সেটি নিশ্চিত করা।’

জোলি বলেন, ‘নির্যাতনের শিকার হয়ে ২০১৭ সালের আগস্টের পর সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। এখনও মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গারা আসছেন। বাংলাদেশ উদার হস্তে এসব রোহিঙ্গাকে গ্রহণ করে নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করছে, যা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় এবং মানবতার জন্য অনন্য এক দৃষ্টান্ত।’

তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গারা খুবই অসহায়। এসব মানুষ শুধু বাস্তুচ্যুতই হয়নি; তারা এখন রাষ্ট্রবিহীন জনগোষ্ঠী। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বসহ অন্যান্য মৌলিক অধিকারকে অগ্রাহ্য করছে।’

প্রেস ব্রিফিংয়ে জোলি রাখাইনে রোহিঙ্গাসহ সব সম্প্রদায়ের অবস্থা উন্নয়নে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা প্রকাশের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে, তাদের অবশ্যই নিজ কাজের জন্য জবাবদিহি করতে হবে।’



 

Show all comments
  • jack ali ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৭:১৪ পিএম says : 0
    May Allah's curse upon all the so called muslim leaders who do not fight to protect the honor or our beloved mother and daughter
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ