Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

গোপালগঞ্জে বারি-৪ তিল আবাদে কৃষকের সাফল্য

প্রকাশের সময় : ১৪ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

গোপালগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা

গোপালগঞ্জে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত বারি-৪ তিল আবাদ করে কৃষক বাম্পার ফলন পেয়েছেন। গত মঙ্গলবার টুঙ্গিপাড়া উপজেলার নিলফা গ্রামে অনুষ্ঠিত মাঠ দিবস থেকে কৃষি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছে প্রতি হেক্টরে প্রায় দেড় টন তিল উৎপাদিত হবে। লোকসানের কারণে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় তিলের আবাদ কৃষক ২৫ বছর আগে বন্ধ করে দেয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও পিরোজপুর-গোপালগঞ্জ-বাগেরহাট সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প এ বছর উদ্যোগ নিয়ে আবার কৃষকদের দিয়ে তিলে চাষ শুরু করে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সরেজমিন গবেষণা বিভাগ পিরোজপুর-গোপালগঞ্জ-বাগেরহাট সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প ও কৃষি সম্প্রসার অধিদপ্তর আয়োজিত মাঠ দিবসে প্রধান অতিথি ছিলেন গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণের ডিডি সমীর কুমার গোস্বামী। টুঙ্গিপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. মো. মনিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাঠ দিবসে গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণের সহকারী উপ-পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন, প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এইচ.এম খায়রুল বসার, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান, কৃষক মাহাবুবুর রহমান বিশ্বাস সহ আরো অনেকে বক্তব্য রাখেন। গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর গোপালগঞ্জ জেলায় ৪৪০ হেক্টর জমিতে বারি তিল ৪ জাতের আবাদ করা হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫শ’ মেট্রিক টন। আবহাওয়া অনুকূলে ধাকায় ক্ষেতে তিলের বাম্পার ফলেন হয়েছে। এ কারণে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে কৃষি বিভাগ ধারণা করছে। টুঙ্গিপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা ফসলের নিবিড়তা বাড়িয়ে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ১ হাজার হেক্টর উঁচু জমিকে ৪ ফসলী জমিতে পরিণত করব। এ সব জমিতে বারি উদ্ভাবিত স্বল্প জীবন কালের ফসল আবাদ করা হবে। এতে কৃষি ও কৃষকের উন্নতি ঘটবে। নিলফা গ্রামের কৃষক মো. শাহাদৎ হোসেন জানান, আগে আমার কলাই ও পাট আবাদ করতাম। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সরেজমিন গবেষণা বিভাগের গোপালগঞ্জ-বাগেরহাট-পিরোজপুর সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়ে উন্নত চাষাবাদের কলা কৌশল শিখাচ্ছে। এখন আমার দুই ফসলের জমিতে ৩ ফসল করছি। এর আগে এ জমিতে আমরা সরিষা ও কলাই উৎপাদন করেছি। সরিষা ও কলাই তুলেই তিল আবাদ করেছি। তিল কাটার পর ধান আবাদ করব। ওই প্রকল্পই আমাদের কৃষির আমূল পরিবর্তন ঘটাচ্ছে। গোপালগঞ্জ-বাগেরহাট-পিরোজপুর সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রল্পের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও বারির ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এইচ এম খায়রুল বসার বলেন, বারি তিল ৪ হেক্টর প্রতি ১৫শ’ কেজি ফলেছে। তিলে ৪৫ ভাগ তেল আছে। এটি বাংলাদেশের তৃতীয় প্রধান ভোজ্য তেল। এ তেলে মাছ মাংসের সমান ২০ ভাগ প্রোটিন রয়েছে। কোন কোলস্টোরেল নেই। তিল তেল নিরাপদ ভোজ্য তেল। স্থানীয় জাতের তিল হেক্টরে ৫শ’ থেকে ৬শ’ কেজি ফলে। কিন্তু বারি তিল হেক্টরে ফলে প্রায় ১৫শ’ কেজি। ১ কেজি বারি তিল থেকে সাড়ে ৪শ’ গ্রাম তেল পাওয়া যায়। কিন্তু স্থানীয় জাতের ১ কেজি তিলে মাত্র ২৫০ গ্রাম তেল উৎপাদিত হয়। তিল আবাদ এখানে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আমার কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে আবার তিল চাষ শুরু করেছি। তিল চাষে কৃষক লাভবান হবেন। আগামীতে এখানে তিলের আবাদ বৃদ্ধি পাবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গোপালগঞ্জে বারি-৪ তিল আবাদে কৃষকের সাফল্য
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ