Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অরুণাচলে মোদির সফরে চীনের নিন্দা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৯:০৪ পিএম | আপডেট : ১২:১১ এএম, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

ভারতের উত্তরপূর্ব সীমান্তের পাশে অবস্থিত অরুণাচল প্রদেশ সফরে যাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নিন্দা জানিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে শনিবার দেয়া বিবৃতিতে চীন বলেছে, ওই এলাকায় ভারতীয় নেতাদের সব ধরনের কার্যক্রমের ‘বিরোধিতা’ করছে তারা। খবর আল-জাজিরা।
আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে বিজেপির জন্য ভোট চাইতে পর পর কয়েকটি জনসভায় অংশ নিয়েছেন মোদি। তারই অংশ হিসেবে অরুণাচল সফর করেন তিনি। চীন বলছে, এই সফর দু’দেশের মধ্যে সীমান্ত বিরোধকে জটিল করে তুলল। এর প্রতিবাদ জানাতে দেরি করেনি ভারত। দিল্লি জানিয়ে দিয়েছে, এ ব্যাপারে বেইজিংয়ের বিরক্তি, অসন্তোষকে একেবারেই গুরুত্ব দিতে রাজি নয়। কারণ, অরুণাচল ভারতেরই অঙ্গরাজ্য। দেশের অন্যান্য রাজ্যের মতো অরুণাচল সফরে আগেও গিয়েছেন ভারতের রাজনৈতিক নেতারা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফর কোনও ব্যাতিক্রমী ঘটনা নয়।
প্রধানমন্ত্রী মোদির অরুণাচল সফর নিয়ে প্রশ্নের জবাবে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনিয়িং শনিবার বলেন, ‘চীন-ভারত সীমান্ত প্রশ্নে চীনের অবস্থানে কোনও বিভ্রান্তি নেই। তা তাৎক্ষণিক বা সাময়িক নয়। তার ধারাবাহিকতা রয়েছে। তথাকথিত ‘অরুণাচল প্রদেশ’কে চীন কোনও দিনই স্বীকৃতি দেয়নি। চীন-ভারত সীমান্তের পূর্ব দিকে কোনও ভারতীয় রাজনীতিকের সফরকে আমরা আদৌ সমর্থন করি না।’
তার পাল্টা জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘অরুণাচল প্রদেশ ভারতের বাইরে নয়। তা ভারতেরই একটি অঙ্গরাজ্য। অন্যান্য রাজ্যের মতো অরুণাচলে এর আগেও গিয়েছেন ভারতীয় রাজনীতিকরা। এবার তার অন্যথা হয়নি।’
মোদির অরুণাচল সফরে চীন কতটা রেগেছে, তা এ দিন স্পষ্ট হয়ে যায় চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে। সেখানে তাদের মুখপাত্র হুয়া চুনিয়িং বলেছেন, ‘দু’টি দেশের স্বার্থকেই মনে রাখার অনুরোধ জানাচ্ছি ভারতকে। চীনের স্বার্থ, চীনের উদ্বেগের কথাও যেন মনে রাখা হয়। যাতে দু’দেশের সম্পর্ক জোরদার হয়ে ওঠার গতি বাড়ে। অনুরোধ করব, পরিস্থিতি যেন সে দিকে না গড়ায় যাতে বিরোধ আরও বেড়ে না যায় বা সীমান্ত বিরোধকে তা যেন জটিল করে না তোলে।’
উল্লেখ্য, ৩ হাজার ৪৮৮ কিলোমিটার লম্বা নিয়ন্ত্রণরেখার বিভিন্ন এলাকা নিয়ে ভারত ও চীনের মধ্যে বিরোধ দীর্ঘ দিনের। অরুণাচল প্রদেশ ভারতের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত রাজ্য। এর রাজধানী ইটানগর। ১৯১৩ সাল থেকেই উত্তরে তিব্বতের সাথে এর সীমান্ত নিয়ে বিবাদ রয়েছে। ব্রিটিশরা হিমালয়ের শীর্ষরেখাকে সীমান্ত হিসেবে প্রস্তাব করেছিল, কিন্তু চীন তা প্রত্যাখান করে। এই প্রস্তাবিত রেখাটি ম্যাকমাহন রেখা নামে পরিচিত এবং বর্তমানে এটিই কার্যত ভারত চীন সীমান্ত হিসেবে স্বীকৃত। ১৯৪৭ সালে চীন প্রায় সম্পূর্ণ অরুণাচল প্রদেশের উপর কর্তৃত্ব দাবী করে। ১৯৫৯ ও ১৯৬২ সালের মধ্যবর্তী সময়ে চীনা সেনারা বেশ কয়েকবার ম্যাকমাহন রেখা অতিক্রম করে ও সাময়িকভাবে ভারতের সীমান্ত ঘাঁটিগুলি দখল করে। ১৯৬২ সালে চীন অরুণাচল প্রদেশ থেকে পশ্চাদপসরণ করে। এরপর বহুবার সীমান্ত বিবাদটি সমাধানের চেষ্টা করা হলেও আজও কোন সমঝোতা হয়নি। ১৯৭২ সালে অঞ্চলটি অরুণাচল প্রদেশ ইউনিয়ন অঞ্চলে পরিণত হয় এবং ১৯৮৬ সালের ডিসেম্বরে একে পূর্ণাঙ্গ অঙ্গরাজ্যের মর্যাদা দেয় ভারত।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চীন-ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ