Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

দুধ-দইয়ে ভেজাল

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

দুধসহ খাদ্যে ভেজাল মেশানো মারাত্মক দুর্নীতি বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে দুধ-দইয়ে অ্যান্টিবায়োটিক, অণুজীব, কীটনাশক ও সিসা পাওয়ার ঘটনা অনুসন্ধান করে জড়িত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল সোমবার বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের নজরে এলে আদালত স্বপ্রণোদিত হলে রুলসহ এ আদেশ দেন। এসময় আদালত বলেছেন, মানুষ শুধু টাকার পেছনে ঘুরছে, দেশ নিয়ে কেউ ভাবছে না।
দুধ, দই এবং গোখাদ্যে ভেজাল মেশানোর ঘটনায় জড়িত ব্যক্তি ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করতে কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তিন মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বিবাদীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হেলেনা বেগম চায়না। শুনানিকালে আদালত বলেন, খাদ্যে ভেজাল মেশানো একটি বড় দুর্নীতি। এ ধরনের ভেজালে মানুষের কিডনি ও লিভার নষ্ট হচ্ছে, ক্যানসার হচ্ছে। মানুষ এখন শুধু টাকার পেছনে ঘুরছে। দেশ ও দেশের মানুষ নিয়ে কেউ ভাবছেন না। পরে এএম আমিন উদ্দিন মানিক সাংবাদিকদের বলেন, দুধ-দইয়ে অ্যান্টবায়োটিক অনুজীব,কীটনাশক, সিসা, গরুর দুধেও বিষের ভয়, শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ পায়। বিষয়টি অবগত হয়ে আদালত দুধ ও দইয়ের উৎপাদনকারী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কেন সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না সেই মর্মে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে রুল জারি করে কারণ জানতে চান। এই মর্মে চার সপ্তাহের রুল জারি করেন এবং ১৫ দিনের মধ্যে এই বিষয়ে কী ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হলো তার অগ্রগতি প্রতিবেদন জানাতে আদেশ দেন।
দুধ-দইয়ে অ্যান্টিবায়োটিক, অণুজীব, কীটনাশক ও সিসার ছাড়াও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর অন্যান্য ক্ষতিকর উপাদান আছে কিনা, তা নিরূপণে প্রো-কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ছয় মাস পর পর এ কমিটিকে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা খাদ্য সমন্বয় কমিটি ও বিএসটিআইয়ের চেয়ারম্যানের প্রতি এ নির্দেশ দেয়া হয়।
সরকারি প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরির এক গবেষণায় গাভির কাঁচা দুধে সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি কীটনাশক ও নানা ধরনের অ্যান্টিবায়োটিকের উপাদান পাওয়া গেছে। পাওয়া গেছে বিভিন্ন অণুজীবও। একই সঙ্গে প্যাকেটজাত গাভির দুধেও অ্যান্টিবায়োটিক ও সিসা পাওয়া গেছে মাত্রাতিরিক্ত। বাদ পড়েনি দইও। দুগ্ধজাত এই পণ্যেও মিলেছে সিসা। সংস্থাটি জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার আর্থিক সহায়তায় গাভির খাবার, দুধ, দই ও প্যাকেটজাত দুধ নিয়ে এই জরিপের কাজ করেছে। সরকারের ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরি গরুর দুধের ৯৬ শতাংশ নমুনায় অণুজীব, ৩০ শতাংশ প্যাকেটজাত দুধে অ্যান্টিবায়োটিক পেয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, বাজারের কোনো কোনো দইয়ে ক্ষতিকর সিসাও আছে। প্রতিষ্ঠানটি গোখাদ্যেও মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশকসহ নানা ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক পেয়েছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দুধ-দইয়ে

১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ