Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শহীদ জিয়াকে মানুষের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করা যাবে না

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

প্রতিহিংসা মেটাতে সরকার শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নাম ও কবরকেও নিশ্চিহ্ন করার ঘৃন্য কর্মে মেতে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, এই হিংসুক সরকার বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা আর আবেগের উৎস শহীদ জিয়াকে নিয়ে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। শেরে বাংলা নগর থেকে শহীদ জিয়ার মাজার সরিয়ে ফেলার নীলনক্সা বাস্তবায়ন শুরু করার পর এবার চট্টগ্রামে জিয়া স্মৃতি জাদুঘর দখল করতে মাঠে নেমেছে। বিএনপির এই নেতা বলেন, জোর করে কোন কিছু চাপিয়ে দিলেও হৃদয়ের উপর কোন হুকুম চলে না। জিয়াউর রহমান কেবল কোন ব্যক্তি নন, তিনি জাতীয়তাবাদী দর্শন ও আদর্শের পিতা। জনগণের প্রেরণার উৎস। তাঁর নাম বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে গেঁথে রয়েছে। কোনো ষড়যন্ত্র তাঁকে বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারবে না। গতকাল (বুধবার) বেলা ১১টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। 

রিজভী বলেন, ক্ষমতার দম্ভে এই অবৈধ সরকার হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছে। জনগণের ভোটাধিকার হরণ করার পর সরকার এখন কি করবে তা দিশা পাচ্ছেনা। ভোট ডাকাতি করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী জোট ক্ষমতা দখলের পর তাদের মধ্যে কোন অনুশোচনা বা আত্মগ্লানি দেখা যাচ্ছে না। বরং তাদের বেপরোয়াভাব সকল সীমা লঙ্ঘন করেছে। তারা একের পর এক নির্লজ্জ বেহায়ার মতো লাগামহীন কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে রোজ কেয়ামত পর্যন্ত মিড নাইট সরকার ক্ষমতায় থাকতে চায়।
তিনি বলেন, গত সোমবার মন্ত্রীসভার বৈঠকে শেখ হাসিনার সম্মতিতে ‘জিয়া স্মৃতি জাদুঘর’কে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি জাদুঘরে রূপান্তরের জন্য প্রস্তাব এনেছে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তার পরদিন গতকাল নামফলক কালি দিয়ে মুছে দিয়েছে ক্যাডার’রা। যা শুধু একটা নোংরামীই নয়, কাপুরুষতা। শাসকশক্তির পৃষ্ঠপোষনায় দেশের স্বাধীনতার ঘোষক ও একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে অপমান করার অর্থই হলো মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাকে অপমান করা। আওয়ামী লীগ কখনোই স্বাধীনতা চায়নি। স্বাধীনতা নিয়ে আওয়ামী নেতৃবৃন্দের দ্বিধা সর্বজনবিদিত। এই কারণে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তহীনতায় একজন মেজর জিয়া যখন হতাশাগ্রস্ত জাতির সামনে স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর স্পর্ধিত বার্তা দেন তখন ওরা হতবাক, ক্ষুব্ধ ও অনুশোচনাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। তাদের এই ঐতিহাসিক ব্যর্থতার জন্যই শহীদ জিয়ার ওপর ওরা প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ওঠে, আর সেজন্যই প্রতিহিংসা মেটাতে এখন শহীদ জিয়ার নাম ও কবরকেও নিশ্চিহ্ন করার ঘৃন্য কর্মে মেতে উঠেছেন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, শহীদ জিয়া আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা। মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতার ঘোষক, রনাঙ্গনের সাহসী যোদ্ধা এবং জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সর্বশেষ্ঠ খেতাব ‘বীর উত্তম’ উপাধীতে তিনি ভূষিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর নামে জেড ফোর্স গঠিত হয়েছিল। আজকের আধুনিক বাংলাদেশের বহুকিছু অর্জনের মূলে তাঁর নাম গেঁথে আছে, জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের ইতিহাসে এক ক্ষনজন্মা রাষ্ট্রনায়ক। নানা কারণে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ও গৌরবোজ্জল অধ্যায়ে স্থান করে নিয়েছেন। জিয়াউর রহমানের কারণেই বাকশালের গুহা থেকে আওয়ামী লীগের পূণর্জন্ম হয়। তাঁর সততা, নিষ্ঠা, গভীর দেশপ্রেম,পরিশ্রমপ্রিয়তা, নেতৃত্বের দৃঢ়তা প্রভৃতি গুণাবলি এ দেশের গণমানুষের হৃদয়কে স্পর্শ করেছিল। তিনি ছিলেন একজন পেশাদার সৈনিক। তা সত্তে¡ও সাধারণ মানুষের কাছে তাঁর যে গ্রহণযোগ্যতা ছিল যা অন্য কোনো রাষ্ট্রনায়কের ভাগ্যে তা জোটেনি। ভোট ডাকাতির মাধ্যমে মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে এখন জনগণের মনে আঘাত দিবেন না। রাষ্ট্রশক্তির হিংস্র আক্রমণকে প্রতিহত করে আপনাদের সেই কালো হাত ভেঙ্গে দেবে দেশের মানুষ। মানুষের সহ্যের বাঁধ ভেঙ্গে দিচ্ছেন। চলমান অধিকারের যুদ্ধে আপনাদের অনাচারের বিরুদ্ধে পাল্টা জবাব দিবে জনগণ। সময় ঘনিয়ে আসছে। আপনাদের উন্মত্ততার যবনিকাপাত ঘটতে সময় লাগবে না।
সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, অবৈধ সরকার দৈত্যের মতো দেশের জনগণের ঘাড়ের ওপর চেপে বসে যা ইচ্ছে তাই করছে। বিএনপিসহ বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী-সমর্থককে কারাগারে ভরেছে। কারাগারগুলো ধারণ ক্ষমতার ৪-৫ গুন বেশী বন্দীতে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। হাজার হাজার মামলা। লাখ লাখ আসামী। কোন বাছ বিচার নাই। সরকারের সমালোচনা করলেই সে নাশকতার গায়েবী মামলার আসামী। সাধারণ মানুষের এখন নাভিশ্বাস দশা। দেশের গণতান্ত্রিক জনগোষ্ঠীর প্রাণশক্তি বেগম খালেদা জিয়াকে নির্মম মানসিক ও শারীরিকভাবে যন্ত্রণা দেয়া হচ্ছে অন্ধকার কারাগারে রেখে।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা শাহজাহান চৌধুরী, আবদুস সালাম আজাদ, তাইফুল ইসলাম টিপু, বেলাল আহমেদ প্রমূখ।#



 

Show all comments
  • টিটু ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ২:২৯ এএম says : 0
    বলে লাভ কি কোন পতিকার পাওয়া যায়না
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিএনপি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ