Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ডাকসু ঘিরে সরগরম ঢাবি ক্যাম্পাস

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও হল সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সরগরম। তফসিল ঘোষণার পর থেকে এখনও কোন দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্যানেল ঘোষণা না করা হলেও প্রতিদিনই পাল্টাচ্ছে সমকিরণ। বৃহস্পতিবার দীর্ঘ ৯ বছর পর দ্বিতীয় দিনের মত মধুর ক্যান্টিনে আসে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে নির্বাচনে ঘিরে নিজেদের দল ভারি করতে টিএসসি ভিত্তিক সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে কাছে টানার চেষ্টা করছে সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ। প্যানেল চূড়ান্ত না হলেও ৫ নেতাকে সম্ভাব্যপ্রার্থী হিসেবে সামনে রেখে প্রচারণা চালাচ্ছে ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা।
দীর্ঘদিন ক্যাম্পাসে কোণঠাসা থাকা বিএনপি সমর্থিত ছাত্রদল বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের মত মধুর ক্যান্টিনে আসে। বেলা ১১টায় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, ঢাবি শাখার সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার সিদ্দিকীসহ ছাত্রদলের ২০-২৫জন নেতাকর্মী মধুর ক্যান্টিনে আসেন। পরে যোগ দেন কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজীব আহসান। মধুর ক্যান্টিনে সাংবাদিকদের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন ছাত্রদল নেতারা। এসময় মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়নসহ কয়েকটি বাম সংগঠনের নেতাকর্মীদেরও দেখা যায়। ডাকসু নির্বাচনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক গঠিত বিভিন্ন কমিটিতে একটি নির্দিষ্ট দলপন্থী শিক্ষকদের প্রাধান্য দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করে ছাত্রদল। নেতাদের দাবি ডাকসু নির্বাচনের জন্য গঠিত কমিটিগুলোতে গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ শিক্ষক নেই। যাদেরকে এসব কমিটিতে রাখা হয়েছে, তারা সবাই একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের সমর্থক, এজন্য এসব কমিটির পুনর্গঠনও দাবি করেন তারা।
ছাত্রদল সভাপতি রাজীব আহসান বলেন, শুধুমাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের জন্য নয়, সহাবস্থানের জন্য তারা ক্যাম্পাসে এসেছেন। তারা ক্যাম্পাসে সবসময় এমন সহাবস্থান চান। তিনি বলেন, আমরা আশা করছি প্রশাসন আমাদের দেওয়া ৭ দফা দাবির বিষয়ে আন্তরিকতা প্রকাশ করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে সহাবস্থান নেই। আমাদের নেতাকর্মীরা হলে থাকতে পারে না। সহাবস্থানের স্থায়ী সমাধান হোক এটাই চাই। সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান বলেন,ডাকসু নির্বাচনের জন্য গঠিত কমিটিগুলোতে গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ শিক্ষক নেই। যাদেরকে এসব কমিটিতে রাখা হয়েছে, তারা সবাই একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের সমর্থক। তাই এসব কমিটিতে গ্রহণযোগ্য শিক্ষকদের অন্তর্ভূক্ত করা হোক।
অন্যদিকে নির্বাচনকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে কাছে টানার চেষ্টা করছে ছাত্রলীগ। বৃহস্পতিবার ছাত্রলীগের নেতৃত্বে টিএসসিভিত্তিক ২২টি সংগঠন হলের ভিতরে ভোটকেন্দ্রের ছাত্রলীগের দাবির সাথে সহমত পোষণ করে মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদের ব্যানারে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি এস এম রাকিব সিরাজী। এতে বলা হয়, ভোটের রাজনীতির সুযোগ নিয়ে কেউ যেন শতসহস্র শহীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কোনো রাজনৈতিক শক্তিকে প্রতিষ্ঠিত করার অপচেষ্টা না করে। ডাকসু নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র ঐতিহাসিকভাবেই হলগুলোতে হয়ে আসছে। এর ধারাবাহিকতায় এবারও ভোটকেন্দ্র হলে হওয়ার যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেটি নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোনো আপত্তি নেই। সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী
শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বক্তব্য রাখেন। ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন সাংবাদিকদের বলেন, এই সংগঠনের ব্যানারে ডাকসু নির্বাচনের প্যানেল ঘোষণা করা হবে। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদও এর সাথে থাকবে বলে জানান তিনি। এসময় ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সবাই সহযোগিতা করবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এদিকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্যানেল ঠিক করা না হলেও ৫ নেতাকে সামনে রেখে প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছে ছাত্র ইউনিয়ন। সংগঠনটির নেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ছাত্র ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, ঢাবি সংসদের সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক রাজীব দাস, সাংগঠনিক সম্পাদক হাসিব মোহাম্মদ আশিক, বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির সদস্য কাজী মালিহাকে সামনে রেখে প্যানেল সাজাচ্ছে তারা। বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর জোট প্রগতিশীল ছাত্রজোট একসাথে প্যানেল ঘোষণা করবে বলেও জানান তারা। সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী এ বিষয়ে বলেন, আমরা সাধারণ শিক্ষার্থী, প্রগতিশীল ছাত্রজোট, আদিবাসী জনগোষ্ঠী ও বিভিন্ন সময়ে গড়ে ওঠা প্লাটফর্মের সাথে আলোচনা করে একটি বৃহৎ ঐক্য গঠন করার চেষ্টা করছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ডাকসু

৩ নভেম্বর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ