Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অস্থিতিশীল নিত্যপণ্যের বাজার

সাপ্তাহিক বাজার দর

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

রাজধানীর বাজারগুলোতে হঠাৎ করে অস্থিতিশীল হয়ে ওঠেছে নিত্যপন্যের বাজার। সপ্তাহের ব্যবধানে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে তিন টাকা বাড়িয়েছে বিপণনকারী কোম্পানি। খুচরা বাজারে ডিম ডজনপ্রতি ১০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ১৫ টাকা, কক মুরগি প্রতিটিতে ২০ টাকা ও গরুর গোশত কেজিপ্রতি ২০ টাকা বেড়েছে।
সবজির দরও কিছুটা বাড়তি। মাছের ক্ষেত্রেও আগের চেয়ে কিছুটা বেশি দাম চাইছেন বিক্রেতারা। এর আগে চালের দাম বেড়েছিল, যা খুচরা বাজারে আর কমেনি। কিছুদিন আগে ডালের দামও কিছুটা বেড়ে যায়। অবশ্য পেঁয়াজ, রসুন, আদা, বিভিন্ন ধরনের ডাল, আটা ইত্যাদি পণ্যের দাম সহনীয় আছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তীর ব্র্যান্ডের তেল বিপণনকারী সিটি গ্রুপ বোতলজাত এবং রূপচাঁদা ব্র্যান্ডের ভোজ্যতেল বিপণনকারী বাংলাদেশ এডিবল অয়েল লিমিটেড সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর কথা জানিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে। এ দুটি কোম্পানির পরিবেশক সূত্রে জানা যায়, লিটারে দাম বেড়েছে মূলত ৩ টাকা। কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, নতুন দাম অনুযায়ী প্রতি ৫ লিটারের এক বোতল সয়াবিন তেলের দাম হবে ৫০০-৫১৫ টাকা।
এই সময়ে বনভোজন, বিয়েসহ নানা সামাজিক অনুষ্ঠানে মাংসের চাহিদা থাকে। মালিবাগ বাজারে গতকাল শুক্রবার প্রতি কেজি গরুর মাংসের দাম ৫২০ টাকা চাওয়া হয়। যা দুই সপ্তাহ আগেও ৫০০ টাকা চাইতেন বিক্রেতা। শান্তিনগর বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজিপ্রতি দর ১৬০ টাকা চান বিক্রেতা। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, এক মাসে ব্রয়লার মুরগির কেজিপ্রতি দর ১৮ শতাংশ বেড়েছে।
শান্তিনগন বাজারের বিক্রেতা জামাল হোসেন বলেন, এক দিন আগে মাঝারি আকারের একটি রোস্ট তৈরির কক মুরগি ২০০ টাকায় বিক্রি করেছেন। গতকাল তা কেনাই পড়েছে ২০০ টাকা, বিক্রি করেছেন ২২০-২৩০ টাকা দরে। তিনি বলেন, আকারভেদে কক মুরগির দর প্রতিটিতে ২০-৩০ টাকা বাড়তি।
ডিমের দামও বাড়তি চাহিদার কারণে বেড়েছে। ফার্মের মুরগির লাল ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১০৫-১১০ টাকা দরে, যা আগের চেয়ে ১০ টাকা বেশি। কারওয়ান বাজারের ডিমের পাইকারি দোকানেই প্রতি ১০০ ডিম ৮৫০ টাকা চান বিক্রেতা। এতে হালি পড়ে ৩৪ টাকা। অন্যদিকে হাঁসের ডিম প্রতি হালি ৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে খুচরা দোকানে, যা সাধারণত ৪০-৪৫ টাকার মধ্যে থাকে।
শান্তিনগর বাজারে কেনাকাটা করছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা রফিক হোসেন। তিনি বলেন, জানুয়ারি মাসে বাসাভাড়া বাড়ল। ডিশের লাইনের বিল, ময়লা নেওয়ার বিল এবং খন্ডকালীন গৃহকর্মীর বেতনও বেড়েছে। এখন বাজারেও খরচ বাড়ল।
এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের মাছের দাম বেড়েছে। এখন ১৫০ টাকা কেজি দরের নিচে কোনো মাছ মিলছে না। সস্তা মাছ হিসেবে পরিচিত পাঙাশ বাজার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৮০ টাকা কেজিতে। এক সপ্তাহ আগে বিভিন্ন বাজারে এ মাছ ১২০ টাকা কেজি বিক্রি হয়। গত সপ্তাহে ২২০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া রুই ও মৃগেল মাছের দাম এক লাফে বেড়ে হয়েছে ২৬০-২৮০ টাকা। তবে বড় আকারের রুই মাছের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বাজার ভেদে বড় রুই কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০-৫৫০ টাকায়। পাবদা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৭০০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪৫০-৬০০ টাকা। তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৮০ টাকা কেজি। সপ্তাহের ব্যবধানে এ মাছের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকার মতো।
সপ্তাহের ব্যবধানে দাম অপরিবর্তিত থাকা মাছের মধ্যে টেংরার কেজি আগের সপ্তাহের মত বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৬৫০ টাকায়। শিং মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৬০০ টাকা কেজি। বোয়াল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৮০০ টাকা কেজি। চিতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৮০০ টাকা কেজি।
রামপুরার মাছ ব্যবসায়ী জামান বলেন, মাছের দাম শুধু আজ বাড়েনি। এক সপ্তাহ ধরেই বাড়তি। গত সপ্তাহে যে পাঙাশ মাছ ১২০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি এখন তা আড়ত থেকেই কিনতে হচ্ছে ১৪০ টাকা কেজি। সব ধরনের মাছের দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহে ২২০ টাকা কেজি বিক্রি করা রুই মাছ এখন ২৬০ টাকার নিচে বিক্রির উপায় নেই।
এদিকে টমেটো, বেগুন, গাজর, মুলা, শালগম, শিম, নতুন আলু, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাল শাক, পালন শাকসহ সব রকম শাক-সবজিতে বাজার ভরপুর থাকলেও নতুন আলু ও টমেটো বাদে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে।
গত সপ্তাহে ১০-১৫ টাকা কেজির মধ্যে বিক্রি হওয়া বেগুন, শালগম, মুলা, পেঁপে ও বিচিবিহীন শিম এখন ২০ টাকার নিচে মিলছে না। আর বিচিসহ শিম বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ২০-৩০ টাকা। গত সপ্তাহে ১০-২০ পিস বিক্রি হাওয়া ফুলকপির দাম বেড়ে হয়েছে ১৫-৩০ টাকা।
বাজারে নতুন আসা কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা কেজি। একই দামে বিক্রি হচ্ছে চিচিঙ্গা ও করলা। লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকা পিস। আর ধন্দুলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা। তবে কিছুটা কম দামে পাওয়া যাচ্ছে শাক টমেটো ও নতুন আলু। আগের মতো পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫-৩০ টাকা। আর নতুন আলু ১৫-২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাজার দর

১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ