Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে ভাটা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে পণ্য আমদানিতে রেকর্ড হয়েছে। তবে এ সময়ে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির পরিমাণ কমে গিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর সময়ে আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য এলসি খোলার পরিমাণ প্রায় ২৮ শতাংশ কমে গিয়েছে। যেখানে আগের অর্থবছরের একই সময়ে ৩৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল।
শিল্পোদ্যোক্তারা বলছেন, নতুন শিল্প স্থাপনের জন্য মূলধনী যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হয়। মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি কমে যাওয়ার অর্থ হলো দেশে নতুন শিল্প হচ্ছে না। বিনিয়োগ স্থবিরতা চলছে। উদ্যোক্তারা বিনিয়োগবিমুখ হয়ে পড়ছেন। আর বিনিয়োগ কমে গেলে কর্মসংস্থানও কমে যায়। তাই পরিস্থিতি এমন হওয়াতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে জুলাই থেকে ডিসেম্বর সময়ে ২৩৮ কোটি ৬০ লাখ ডলারের সমপরিমাণ মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য এলসি (ঋণপত্র) খোলা হয়েছে। যা স্থানীয় মুদ্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি। অথচ গত অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ম‚লধনী যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য ৩২৯ কোটি ৪৭ লাখ ডলারের এলসি খোলা হয়েছিল। স্থানীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ছিল ২৭ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত অর্থবছরের জুলাইয়ের তুলনায় চলতি অর্থবছরের জুলাইয়ে প্রায় ৭ হাজার ৬০০ কোটি টাকার মূলধনী যন্ত্রপাতি কম আমদানি হয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, প্রতি বছরে দেশের শ্রমবাজারে ২০ লাখেরও বেশি কর্মক্ষম লোক প্রবেশ করছে। তাদের জন্য বর্ধিত হারে কর্মসংস্থান দরকার। কিন্তু নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি না হয়ে যদি বিদ্যমান শ্রমবাজার সঙ্কুচিত হয় তাহলে বেকারত্বের হার বেড়ে যাবে।
তবে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি কম হওয়ার কারণও ব্যাখ্যা করছেন অনেকে। তারা বলছেন, গত কয়েক বছর রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভালো থাকলেও জাতীয় নির্বাচনের কারণে সবাই একটু সতর্ক অবস্থানে ছিল। নির্বাচনের আগে ও পরে পরিস্থিতি কী হয় সেটা দেখে বিনিয়োগ করতে চাচ্ছিলেন বিনিয়োগকারীরা। অন্যদিকে গত বছরে রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রের জন্য মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি বেড়ে গিয়েছিল।
বিনিয়োগ বিষয়ে ব্যাংকাররা জানান, ব্যাংকে নতুন বিনিয়োগকারী আসছে না। যারা আসছে তাদের ঋণের অতীত ইতিহাস ভালো নয়। তাদের বেশির ভাগই ঋণ নিয়ে ব্যাংকের টাকা ফেরত দিচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে তারা নতুন বিনিয়োগ চাচ্ছে। এ কারণে ব্যাংক দেখেশুনে বিনিয়োগ করছে।
এদিকে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহও আগের বছরের তুলনায় কমে গিয়েছে। এজন্য চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতিতে আগের মুদ্রানীতির লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ঋণ প্রবাহের লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা কমিয়ে ধরা হয়েছে। ব্যাংকিং খাতে তারল্য সংকট (নগদ টাকা) রয়েছে বলে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে বলা হলেও বাংলাদেশ ব্যাংক দাবি করছে তারল্য সংকট নেই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ