Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

গাইনি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক সেবিকা ইনচার্জ সাময়িক বরখাস্ত

২৬ শিশুর লাশ উদ্ধার ঘটনা

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন ড্রেন ও ডাস্টবিন থেকে অপরিণত শিশুসহ মানবদেহের ২৬টি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ উদ্ধারের ঘটনায় গাইনী বিভাগের প্রধান ডা. খুরশীদ জাহান ও সেবিকা ইনচার্জ জোছনা আকতারকে সাময়িক বরখাস্ত করার সুপারিশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠিয়েছেন হাসপাতালটির পরিচালক। হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন বলেন, দুজনকে সাময়িক বরখাস্ত সংক্রান্ত সুপারিশের কাগজপত্র মঙ্গলবারেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এদিকে পুরো ঘটনার কারণ উদঘাটনে ৩ সদস্যের কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছেন তিনি।
ডা. বাকির হোসেন জানান, সোমবার সন্ধ্যার পর শিশুসহ মানবদেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ উদ্ধারের ঘটনায় উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে তিনি সর্বস্তরের চিকিৎসক-কর্মকর্তাদের নিয়ে সভা করেছেন। কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল ডা. সৈয়দ মাকসুমুল হকও ওই সভায় অংশগ্রহণ করেন। সভায় সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. জহিরুল হক মানিককে প্রধান করে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করে তিন কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
অভিযুক্ত ডা. খুরশীদ জাহান পরিচালকের কক্ষে বসে সাংবাদিকদের বলেন, পোস্ট গ্রাজুয়েশনের ক্লাস গ্রহণের জন্য গাইনী বিভাগে একটি লাইব্রেরী কক্ষ প্রয়োজন। তিনি বিভাগের স্টোর রুমটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে সেবিকা ইনচার্জ জোছনা আকতারকে নির্দেশ দিয়ে সোমবার বিকালে কর্মস্থল ত্যাগ করেন। জোছনা চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের দিয়ে রুমটি পরিষ্কার করান। ওই কক্ষেই শিশুসহ মানবদেহের অঙ্গপ্রত্যক্ষগুলো বোতলজাত করে সংরক্ষণ করা ছিল। এগুলো বহুদিনের পুরনো হওয়ায় শিক্ষার্থীদের প্রাকটিক্যাল ক্লাসে ব্যবহার করা হত না। খুরশিদ জাহানের দাবি, চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীরা বিষয়টির গুরুত্ব বুঝতে না পেরে বোতলজাত অঙ্গপ্রত্যক্ষগুলো ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছে। পরে বোতল সংগ্রহের জন্য পথশিশুরা সেগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলে দিয়েছে।
পরিচালক ডা. বাকির হোসেন বলেন, অপরিণত ও বিকালাঙ্গ মৃত শিশুর জন্ম হলে অভিভাবকরা সেগুলো দাফনের জন্য নেন না। তাদের লিখিত সম্মতিতে সেগুলো হাসপাতালে বোতলজাত করে রাখা হয় কলেজের তৃতীয় থেকে পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থীদের প্রাকটিক্যাল ক্লাস নেয়ার জন্য। গাইনী বিভাগে ব্যবহার অনুপযোগী অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো মাটিতে না পুঁতে ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া ঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ইনজেকশনে ১৭ রোগী অসুস্থ
এদিকে গত সোমবার রাত ১০টার দিকে পুরুষ অর্থপেডিক্স ওয়ার্ডে ইনজেকশন দেবার পর একসঙ্গে অসুস্থ হয়ে পড়ল ১৭ রোগী। হাসপাতাল থেকে সরবরাহ করা ইনজেকশন পুশ করার পর রোগীদের খিঁচুনি শুরু হয়। অনেকে বমি করে ফেলেন। ফলে ওয়ার্ড জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে। দ্রুত সিনিয়র চিকিৎসকরা এসে অন্য ওষুধ প্রয়োগ করলে রোগীরা স্বাভাবিক হয়। এ ঘটনার কারণ উদঘাটনে ৩ সদস্যের কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন।
অর্থোপেডিক্স ওয়ার্ড সূত্রে জানা গেছে, ওয়ার্ডে মোট ৯৪ জন রোগীর মধ্যে ২৩ রোগীকে হাসপাতালে থেকে সরবরাহকৃত সেফিউরক্সিম ইনজেকশন-৭৫০ মিলি ও অমিটিড ইনজেকশন (৪০ মিলি)সহ ব্যাথানাশক ইনজেকশন দেয়া হয়। ইনজেকশন দেওয়ার পর পরই কুদ্দুস, ইমতিয়াজ, বিকাশ চন্দ্র হাওলাদার, অলিয়ার, এনামুল হকসহ বেশ কয়েকজন রোগীর খিঁচুিন শুরু হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
হাসপাতালের পরিচালক জানান, ঘটনার পর হাসপাতালে চলমান ব্যাচের সেফিউরক্সিম ইনজেকশন সরবারাহ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অর্থপেডিক্স ওয়ার্ডে ব্যবহৃত ওষুধের বোতল পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চিকিৎসক

১৩ আগস্ট, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ