Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মহাদুর্ভোগ

টানা তিন দিনের ছুটিতে গাড়ির বেড়েছে চাপ : ৫০ কি.মি. যানজট

মুন্সী কামাল আতাতুর্ক মিসেল, চান্দিনা, (কুমিল্লা) থেকে | প্রকাশের সময় : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে নারায়নগঞ্জের কাঁচপুর পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। টানা তিন দিনের সরকারী ছুটিতে মহাসড়কে গাড়ীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর থেকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
দাউদকান্দি হাইওয়ে পুলিশের ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, টানা তিন দিনের ছুটিতে মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেড়ে যাওয়ায় মেঘনা সেতু এলাকায় ধীর গতিতে গাড়ি পারাপারের কারণে যানজটের তীব্রতা বেড়েছে। মেঘনা গোমতী সেতুর গজারিয়া অংশে ইঞ্জিনিয়ারিং স্টাফ কলেজের কাছে মহাসড়ক সংস্কারের কাজ এবং তিনদিনের টানা ছুটিতে গাড়ির চাপ বেড়ে যাওয়ায় এ যানজটের সৃষ্টি। তিনি জানান, মহাসড়কের দাউদকান্দি থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত যানজট লেগেই আছে। যানজটের কবলে পড়ে দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ। এ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি কাজে নিয়োজিত যানবাহানও আটকা পড়েছে যানজটে। অনেকে খুব সকালে রওনা হওয়ায় অন্তর্ভুক্ত অবস্থাতেই পার করছেন সময়। শিশু ও বয়স্কদের জন্য খুবই পীড়াদায়ক হচ্ছে এই যানজট।
গত কয়েক মাসে ধরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজটের কারণে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতিকে প্রায় স্থবির করে দিয়েছে। অচল হয়ে পড়ে থাকছে ঘন্টা পর ঘন্টা যানবাহন। এতে করে প্রতিদিন মহাসড়কে যানজট রুটিন হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় যানবাহনের চলাচলকারীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে । একই সাথে প্রতিদিন ঘন্টার পর ঘন্টা মূল্যবান সময় মহাসড়কে যানবাহনে বসে থেকে কাটাচ্ছে হাজার হাজার যাত্রী। প্রদিদিন এটা নিত্যনৈমত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়ালেও যোগাযোগ মন্ত্রণালয় বা সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে নির্বিকার থাকায় পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ২৫০ কিলোমিটার দূরত্ব যেখানে পাঁচ ঘণ্টায় অতিক্রম করার কথা সেখানে বর্তমানে ১৪ থেকে ১৮ ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে। আটকে পড়া যাত্রীদের পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন দুর্ভোগ। দীর্ঘ এ যানজটে আটকা পড়ে অ্যাম্বুলেন্সেই মারা গেছে বেশ ক’জন রোগী। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সারাদেশে কাঁচামাল ও পণ্য সামগ্রী ঠিক সময়ে পৌঁছাতে না পারায় বন্ধ হয়ে গেছে অনেক কারখানার উৎপাদন। বেড়ে গেছে ভোগ্যপণ্যসহ সব ধরনের পণ্যের দাম।
দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাঠানো রফতানি পণ্য ঠিকমত চট্টগ্রাম না পৌঁছায় গার্মেন্টসসহ বহু রফতানি চালানের শিপমেন্ট ও অর্ডার বাতিল হয়ে যাচ্ছে। এভাবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সৃষ্ট অচলাবস্থার কারণে গত এক মাসে জাতীয় ক্ষতির পরিমাণ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। যানজটের কারণে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দিতে বাসে বসে শতশত কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। যানজটের কারণে প্রায় সবারই নাজেহাল অবস্থা। গত কয়েক দিনের যানজট দিশেহারা যাত্রী সাধারনেরা। যাত্রীরা প্রায়ই মহাসড়কের যানজট নিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের ফেইসবুকে স্ট্যাটাস চিচ্ছে আবার অনেকে জ্যামে বসে নিজের ছবির পাশাপাশি দীর্ঘ গাড়ীর সারির ছবি আপলোড দিতে দেখা যায়।
গত রবিবার ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের যানজট নিয়ে কামরুজ্জামান নামের এক ব্যক্তি তার নিজস্ব ফেইসবুকে লিখেছেন, যারা চট্রগ্রাম বিভাগ থেকে ঢাকা যাবেন ভাবছেন তারা যেন অত্যন্ত আজ রবিবার দাউদকান্দি হয়ে না আসার জন্য অনুরোধ জানিয়ে তিনি উল্লেখ করেন, সকাল ১০ টায় তিনি কুমিল্লা থেকে রত্তনা হয়ে দাউদকান্দি টোল প্লাজায় এসে পৌঁছেন ৪ ঘন্টায়। ঢাকায় তার জরুরী মিটিং শুরু হওয়ার কথা বিকাল ৪ টায়। তিনি তখনও জানেন তিনি ঢাকা মিটিংয়ে গিয়ে অংশগ্রহণ করতে পারবেন কিনা।
আলমগীর হোসেন নামে অপর ব্যাক্তি তার ফেইসবুকে লিখেছেন, ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে চলাচলরত বাসচালকদের শৃঙ্খলার মধ্যে এনে যেখানে সেখানে পার্কিং ও যাত্রী ওঠানো নামানো বন্ধ করা প্রয়োজন। পাশাপাশি মহাসড়কে টহলরত হাইত্তয়ে পুলিশ আরো শক্তিশালী হলে এই সড়কে যানজট বন্ধ করা সম্ভব। না হলে এই সড়ক চার লেন কেন, আট লেনে উন্নত করলেও এই সড়কে যানজট বন্ধ করা যাবে না। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং প্রশাসন এ ক্ষেত্রে সম্পূর্ণই ব্যর্থ এবং এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগও নেই! গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত যানজট থেমে থেমে অব্যাহত ছিল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যানজট

১৯ জানুয়ারি, ২০২৩
৯ জানুয়ারি, ২০২৩
১৯ ডিসেম্বর, ২০২২
২৭ নভেম্বর, ২০২২
২৯ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ