Inqilab Logo

শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নারীদের সাথে অসদাচরণের ইতিহাস আছে ট্রাম্পের

রিপাবলিকান মনোনয়ন প্রত্যাশী ট্রাম্প সম্পর্কে ৫০ নারীর সাক্ষ্য

প্রকাশের সময় : ১৭ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : সুইমিং পুলে পার্টি দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এসেছিলেন ৫০ নারী মডেল ও ৩০ জন পুরুষ। এরমধ্যে রোয়ান ব্রিউয়ার নামে এক মডেলের প্রতি আকৃষ্ট হন ট্রাম্প। প্রথম পরিচয়েই সবার কাছ থেকে আলাদা করে নিজের বিলাসবহুল বাড়ি দেখান তাকে। ক্ষণিকের পরিচয়েই ব্রিউয়ারকে পোশাক বদলে সাঁতারের পোশাক পরতে বাধ্য করেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে উল্লিখিত ঘটনা নারীদের প্রতি ট্রাম্পের চাপিয়ে দেওয়ার মনোভাবের কিছুটা প্রকাশ পায়। ঘটনার সময় ব্রিউয়ারের বয়স ছিল ২৬। ওই সময় ৪৪ বছর বয়সী ট্রাম্পের প্রথম বিবাহবিচ্ছেদের প্রক্রিয়া চলছিল। চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দল থেকে প্রেসিডেন্ট পদে ট্রাম্পের মনোনয়ন অনেকটাই নিশ্চিত। মুসলমানদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেয়াসহ বিভিন্ন জাতিসত্তার মানুষ সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করে এরইমধ্যে বিতর্কিত হয়েছেন তিনি। স্মরণকালের ইতিহাসে কোনো প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়নপ্রত্যাশী নিয়ে এতটা বিতর্ক দেখা যায়নি। মার্কিন মুলুকে কয়েক দশক ধরেই পরিচিত ট্রাম্প। রিয়াল এস্টেট, ক্যাসিনো থেকে শুরু করে বিভিন্ন ব্যবসায় দীর্ঘদিন ধরেই জড়িত ট্রাম্প। একই সঙ্গে তিনি মিডিয়া ব্যক্তিত্বও। সুন্দরী প্রতিযোগিতার আয়োজক এই ট্রাম্প। কর্মসূত্রে বা অন্য কোনো সম্পর্কে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছাকাছি ছিলেন এমন ৫০ মডেল ও সহকর্মীর কাছ থেকে তথ্য নিয়ে প্রতিবেদন করেছে নিউইয়র্ক টাইমস। অর্ধশতাধিক সাক্ষাৎকার নিয়ে করা এই প্রতিবেদনে ট্রাম্প সম্পর্কে নারীদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। অনেকের প্রতিক্রিয়াই নেতিবাচক। নারীদের প্রতি বিরূপ মন্তব্য করা, লোক দেখানো বিষয় থেকে শুরু করে বিভিন্ন দোষের কথা বলেন তারা। আবার কিছু নারী ট্রাম্পকে তাদের ক্যারিয়ার গড়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ দেন। ট্রাম্পের বিতর্কিত মন্তব্যকেও গুরুতর বলে মানতে নারাজ তারা। সাক্ষাৎকার, আদালতের নথি ও লিখিত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, নারীদের বিষয়ে ব্যক্তিগত আগ্রহ প্রকাশ, জনসমক্ষে কোনো নারীর শরীর নিয়ে বিরূপ মন্তব্য, কর্মক্ষেত্রেই নিয়মবহির্ভূত কর্মকা-সহ বিভিন্ন অভিযোগ আছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। সুন্দরীদের প্রতি ট্রাম্পের আকৃষ্ট হতে দেখা যায় ছোটবেলা থেকেই। নিউইয়র্ক মিলিটারি অ্যাকাডেমি নামক এক বোর্ডিং স্কুলে পড়তেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে মেয়েবন্ধু নিয়ে যাওয়া নিষিদ্ধ ছিল। বিশেষ অনুষ্ঠানে মেয়েবন্ধু যেতে পারত। ১৯৬৪ সালে ট্রাম্পের সহপাঠী ছিলেন জর্জ হোয়াইট। তার ভাষ্য অনুযায়ী, প্রতি বিশেষ দিনেই সমবয়সী মেয়েবন্ধুকে স্কুলে নিয়ে যেতেন ট্রাম্প। প্রতিবারই নতুন বন্ধু। সহপাঠীদের কাছে এই বন্ধুদের দেখানোই ছিল ট্রাম্পের মূল উদ্দেশ্য। ছোট বয়সেই লেডিসম্যান উপাধি পান তিনি। ছোট বা বড় যে সিদ্ধান্তই হোক, নারীদের কাছে নিজের মতামতই চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর এই স্বভাব বাবা ফ্রেড ট্রাম্পের কাছ থেকে পেয়েছেন বলে মনে করেন ডোনাল্ডের দ্বিতীয় ও বর্তমান স্ত্রী ইভানা জেলনিকোভা ট্রাম্প। ১৯৭০ সালে ট্রাম্পের একটি রেস্টুরেন্টে ট্রাম্পের পরিবারের সঙ্গে রাতের খাবারে যোগ দেন তিনি। ওই সময়ই তিনি খাবার বেছে নেওয়ায় ট্রাম্পের চাপিয়ে দেওয়া মনোভাবের পরিচয় পান। ট্রাম্পের ওপর তার বাবার প্রভাব দেখেন। নিজের মা-বাবাকে রোল মডেল হিসেবেই উপস্থাপন করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে প্রতিষ্ঠানে নারীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে বাবার মতের বাইরে যান তিনি।
মিস ইউনিভার্স প্রতিষ্ঠান কিনে নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই প্রতিষ্ঠান থেকেই বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়। ১৯৯৭ সালের বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া টেম্পল ট্যাগার্ট বলেন, লাইনে দাঁড় করিয়ে বিশ্বসুন্দরীদের খুব কাছ থেকে দেখতেন ট্রাম্প। এবং বিভিন্ন জন সম্পর্কে বিভিন্ন মন্তব্য করতেন। এছাড়া সব প্রতিযোগীরই ঠোঁটে চুমো দেওয়ার প্রবণতা ছিল ট্রাম্পের। নিউইয়র্ক টাইমস।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নারীদের সাথে অসদাচরণের ইতিহাস আছে ট্রাম্পের
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ