Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কেমিক্যাল অপসারণে আবারো বাধা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

পুরান ঢাকা থেকে অবৈধ কেমিক্যাল গোডাউন সরাতে গিয়ে আবারও বাধার মুখে পড়েছে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন গঠিত টাস্কফোর্স। গতকাল রোববার টাস্কফোর্সের পাঁচটি দল পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে স্থানীয় বাড়ির মালিক ও ব্যবসায়ীদের বাধার মুখে পড়ে। এ সময় শহীদনগরে রাজনারায়ণ রোডের একটি বাড়িতে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও শ্রমিকেরা টাস্কফোর্সের সদস্যদের দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে লালবাগ থানার পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে। অভিযানে বাধা দেওয়ার সময় বিদ্যুতের একটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
গতকাল রোববার এক অনুষ্ঠানে পুরান ঢাকায় কেমিক্যাল গোডাউন অপসারণ অভিযানে ব্যবসায়ীদের বাধার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্টমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, কোনও বাধাতেই চকবাজারের কেমিক্যাল গুদাম সরানোর কাজ থেমে থাকবে না। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বিষয়ে সিরিয়াস। এরইমধ্যে তিনি একটি দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী কাজ চলছে। তিনি বলেন, আমরা একটি নীতিমালা তৈরির কাজ করছি। সরকারের এই কার্যক্রমে যারা বাধা দিচ্ছে, নিশ্চয়ই তাদের একদিন ভুল ভাঙবে এবং তারাই এই কাজে সরকারকে সহযোগিতা করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দিক-নির্দেশনা বাস্তবায়নে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র যে সহযোগিতা চাইবেন সরকারের পক্ষ থেকে তা করা হবে। ঢাকা শহরকে তিনি কিভাবে সাজাবেন এটা তার বিষয়। এখানে তার সিদ্ধান্তই চ‚ড়ান্ত।
এর আগে গত শনিবারও পুরান ঢাকার বকশীবাজারের জয়নাগ রোডে নিষিদ্ধ রাসায়নিক গুদাম, পলিথিন ও প্লাস্টিকের কারখানার বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েছিল টাস্কফোর্সের সদস্যরা। ব্যবসায়ীদের বাধার মুখে টাস্কফোর্সের সদ্যরা
স্টাফ রিপোর্টার : পুরান ঢাকা থেকে অবৈধ কেমিক্যাল গোডাউন সরাতে গিয়ে আবারও বাধার মুখে পড়েছে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন গঠিত টাস্কফোর্স। গতকাল রোববার টাস্কফোর্সের পাঁচটি দল পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে স্থানীয় বাড়ির মালিক ও ব্যবসায়ীদের বাধার মুখে পড়ে। এ সময় শহীদনগরে রাজনারায়ণ রোডের একটি বাড়িতে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও শ্রমিকেরা টাস্কফোর্সের সদস্যদের দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে লালবাগ থানার পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে। অভিযানে বাধা দেওয়ার সময় বিদ্যুতের একটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
গতকাল রোববার এক অনুষ্ঠানে পুরান ঢাকায় কেমিক্যাল গোডাউন অপসারণ অভিযানে ব্যবসায়ীদের বাধার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্টমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, কোনও বাধাতেই চকবাজারের কেমিক্যাল গুদাম সরানোর কাজ থেমে থাকবে না। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বিষয়ে সিরিয়াস। এরইমধ্যে তিনি একটি দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী কাজ চলছে। তিনি বলেন, আমরা একটি নীতিমালা তৈরির কাজ করছি। সরকারের এই কার্যক্রমে যারা বাধা দিচ্ছে, নিশ্চয়ই তাদের একদিন ভুল ভাঙবে এবং তারাই এই কাজে সরকারকে সহযোগিতা করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দিক-নির্দেশনা বাস্তবায়নে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র যে সহযোগিতা চাইবেন সরকারের পক্ষ থেকে তা করা হবে। ঢাকা শহরকে তিনি কিভাবে সাজাবেন এটা তার বিষয়। এখানে তার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
এর আগে গত শনিবারও পুরান ঢাকার বকশীবাজারের জয়নাগ রোডে নিষিদ্ধ রাসায়নিক গুদাম, পলিথিন ও প্লাস্টিকের কারখানার বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েছিল টাস্কফোর্সের সদস্যরা। ব্যবসায়ীদের বাধার মুখে টাস্কফোর্সের সদ্যরা পুরান ঢাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল। অবশ্য পরে দ্বিতীয় দফায় গিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের হস্তক্ষেপে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে রাসায়নিক গুদাম, পলিথিন, প্লাস্টিকসহ মোট ১৩টি কারখানার বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, দুপুর ১২টার দিকে রাজনারায়ণ রোডে ২/৩ হোল্ডিং নম্বরে অভিযান চালিয়ে অবৈধ প্লাস্টিকের চারটি টিন শেড কারখানা, একটি পাঁচতলা ভবনে রাসায়নিক ও প্লাস্টিকের কারখানার সন্ধান পায় টাস্কফোর্স টিম-২ দলে সদস্যরা। এ সময় স্থানীয় ব্যবসায়ী ও শ্রমিকেরা কারখানার ভেতরে ঢাকা জেলা পরিষদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুবর্ণা শিরীন ও সিটি কর্পোরেশন প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডর জাহিদ হাসানসহ টাস্কফোর্স-২ এর সদস্যদের অবরুদ্ধ করে রাখে। জাহিদ হাসান সাংবাদিকদের বলেন, অবরুদ্ধের বিষয়টি লালবাগ থানা পুলিশকে জানানো হলে সাথে সাথে তাদের সহায়তা পাওয়া যায়। পুলিশ এলে বেলা সোয়া দুইটার দিকে আমরা বের হয়ে আসি। পরে ওই সব কারখানার বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, টাস্কফোর্সের শুধু নিষিদ্ধ রাসায়নিক গুদামের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করার কথা। কিন্তু তারা রাসায়নিকের পাশাপাশি পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই প্লাস্টিক ও পলিথিনের কারখানা ও গুদাম উচ্ছেদে অভিযান চালাচ্ছে। ব্যবসায়ীদের কোনো কথাই শুনছে না। তাদের পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হয়নি, এমনকি পুনর্বাসনের ব্যবস্থাও করা হয়নি। তাই উচ্ছেদ করলে তারা কোথায় যাবে এ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
পুরান ঢাকা থেকে সব রাসায়নিক কারখানা ও গুদাম সরিয়ে ফেলতে সিটি কর্পোরেশনের নেতৃত্বে গতকাল রোববার তৃতীয় দিনের মতো অভিযান পরিচালনা করে জাতীয় টাস্কফোর্স। গতকাল পুরান ঢাকায় মোট পাঁচটি দল অভিযান পরিচালনা করে। এর মধ্যে ২ নম্বর দলটি বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চকবাজারের আকবর লেনে অভিযান চালায়। এ সময় ২৭ নম্বর হোল্ডিং, ২৯/১ হোল্ডিং, ২৯/২ হোল্ডিংয়ের মধ্যে প্লাস্টিক ও পলিথিনের কারখানা ছিল। এগুলোর বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির লাইন বন্ধ করা দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি চকবাজার এলাকার আরও কয়েকটি গুদামে অভিযান চালানো হয়। তবে সেগুলোতে দাহ্য বা কেমিক্যাল পাওয়া যায়নি। সাড়ে ১২টার দিকে দলটি অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করে।
গতকাল রোববার তৃতীয় দিনের মতো সিটি কর্পোরেশনের নেতৃত্বে গঠিত টাস্কফোর্সের পাঁচটি দল পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়েছে। টাস্কফোর্সের ৩ নম্বর টিম অভিযান চালিয়েছে বংশাল থানাধীন আগা সাদেক লেন এলাকায়। এ টিমের সদস্যরা বেলা ১১ টায় অভিযান শুরু করে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চারটি গোডাউনে কেমিক্যাল ও দাহ্য পদার্থের সন্ধান পান। যেসব ভবনে এসব পাওয়া গেছে সঙ্গে সঙ্গেই সেগুলোর গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির লাইনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
এসময় ঢাকা জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল এহসান বলেন, অভিযানের মুল উদ্দেশ্য হচ্ছে কোথাও কেমিক্যাল ও দাহ্য পদার্থের গোডাউন থাকতে দেওয়া হবে না। প্রথমবার সতর্ক করে মাল সরিয়ে ফেলতে বলা হচ্ছে এবং সব সেবা সংস্থার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে। মালামাল সরিয়ে ফেলার পর আমাদের কাছে আসলে আবার সংযোগ দেওয়া হবে।
এদিকে চকবাজার চুড়িহাট্টা এলাকার নন্দকুমার রোডেও টাস্কফোর্স অভিযান পরিচালনা করেছে। সেখানে সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ আহমেদের নেতৃত্বে কেমিক্যাল গোডাউন অপসারণ করা হয়েছে।
অভিযান চলানো হয় ইসলামপুর এলাকাতেও। সে অনুযায়ী গতকাল বিষয়টির ফলোআপ করতে যায় সিটি কর্পোরেশনের একটি দল। এর পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভ করেছে বলে জানা গেছে। এছাড়া টাস্কফোর্সের আরও দুটি টিম রাজধানীর লালাবাগ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেছে।
সিটি কর্পোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, চকবাজারের চুড়িহাট্টায় অগ্নিকান্ডের পর থেকে পুরান ঢাকার কেমিক্যাল, পলিথিনের কারখানা, প্লাস্টিকের কারখানা উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার অভিযান শুরু হয়। ওই দিন সাতটি রাসায়নিক কারখানায় গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা হয়। গত শনিবার ১৩টি কারখানায় গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বন্ধ করা হয়েছে। গতকাল রোববার আরও পাঁরটি দল অভিযান পরিচালনা করেছে।
টাস্কফোর্সের অভিযানের প্রতিবাদে দুপুর ১২টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত লালবাগ চৌরাস্তা অবরোধ করে রাখেন ব্যবসায়ীরা। এতে আশপাশের সব রাস্তার যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
সিটি কর্পোরেশনের ঘোষণায় বলা হয়, ২০ ফেব্রুয়ারি চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের পরিপ্রেক্ষিতে এলাকার জনগণের নিরাপত্তার জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে ওই এলাকার রাসায়নিকের মজুত থাকলে তা সরিয়ে ফেলতে হবে। এ নির্দেশ অমান্য করা হলে বাড়ির মালিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ