Inqilab Logo

শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

হোলসিম গিলছে মেঘনা

নদীখেকোদের কবলে মেঘনা-৫

মোক্তার হোসেন মোল্লা, সোনারগাঁও | প্রকাশের সময় : ৫ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

সোনারগাঁও-এ মেঘনা নদীর জায়গায় গড়ে উঠেছে বিশালাকার হোলসিম সিমেন্ট কারখানা। নদীর জমিতে গড়ে ওঠা নামকরা এ কারখানা আদৌ নদীর জায়গা থেকে সরানো যাবে কি না তা নিয়ে অনেকেরই সন্দেহ রয়েছে। কারণ ইতোমধ্যে স্থানীয় প্রশাসন তিন দিনের মধ্যে নদীর দখলকৃত জমি ছাড়তে নোটিশ দেয়। কিন্তু ওই নোটিশকে পাত্তাই দেয়নি হোলসিম সিমেন্ট কোম্পানী কর্তৃপক্ষ। বরং নদীর জায়গা দখল করে তারা নতুন স্থাপনা নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
জানা গেছে, উপজেলার চররমজান সোনাউল্লাহ মৌজার মেঘনা ঘাট এলাকার মেঘনা সেতুর সাথে কয়েক একর ব্যক্তিগত জমি ক্রয় করে হোলসিম সিমেন্ট কোম্পানী কর্তৃপক্ষ। এরপর কোম্পানীর নাম ব্যবহার করে একে একে মেঘনা নদী, নদীর তীরবর্তী খাস ভূমি এবং ফোরশোর ল্যান্ডভূক্ত ভূমিতে গড়ে তোলা হয় হোলসিমের কারখানা। এভাবে মেঘনা নদীর প্রায় ২ একর ভূমি অবৈধভাবে দখলের অভিযোগ উঠেছে হোলসিম সিমেন্ট লিমিটেডের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে সোনারগাঁও সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর কার্যালয়ের সরেজমিন তদন্ত করলে তদন্ত প্রতিবেদনে হোলসিম সিমেন্ট ফ্যক্টরীর মেঘনা নদীর সরকারি খাস ও মেঘনা নদীর তীরবর্তী ফোরশোর ল্যান্ডভূক্ত ভূমিতে অবৈধভাবে প্রবেশ ও স্থাপনা নির্মাণের তথ্য উঠে এসেছে। ওই প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে সোনারগাঁও-এর সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর কার্যালয় থেকে মেঘনা নদী, নদী তীরবর্তী খাস ভূমি এবং ফোরশোর ল্যান্ডভূক্ত ভূমিতে অবৈধ দখলকৃত জমি তিন দিনের মধ্যে স্বউদ্যোগে অপসারণের জন্য হোলসিম সিমেন্ট লিমিটেডকে নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু ওই নোটিশের প্রায় ৬ মাস অতিবাহিত হলেও কার্যত কোন ব্যবস্থা নেয়নি হোলসিম সিমেন্ট লিমিটেড। দখলকৃত জমি তারা তো ছাড়েই নি বরং নতুন করে নদীর জায়গা দখল করে চলেছে।
এদিকে, একের পর এক মেঘনা নদীর জায়গা দখলের চাক্ষুস প্রমাণের পরেও হোলসিম সিমেন্ট লিমিটেডকে নদী দখল মুক্ত করতে কোন ব্যবস্থা নেয়নি বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। দীর্ঘদিন যাবত নদী দখল করে ব্যবসা পরিচালনা করলেও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নেয়নি। অনেকেরই অভিযোগ স্থানীয় প্রশাসন এবং বিআইডব্লিউটিএ-এর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সাথে হোলসিমের গভীর সম্পর্কের কারণে নোটিশ দিয়েই তাদের কার্যক্রম সমাপ্ত করেন। প্রয়োজনীয় কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না। এর নেপথ্যে রয়েছে মোটা অংকের টাকার লেনদেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার মেঘনা ঘাট ও মেঘনা সেতুর পাশে হোলসিম সিমেন্ট এর নদী দখলের বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন অবগত থাকলেও রহস্যজনক কারনে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, হোলসিম সিমেন্ট লিমিটেড দীর্ঘদিন যাবত মেঘনা নদী দখল করে সিমেন্ট ফ্যাক্টরী পরিচালনা করে আসছে। মেঘনা নদীর জায়গায় বড় বড় স্থাপনা নির্মাণ করে স্থায়ীভাবে দখল করে ব্যক্তিগত জমি, মেঘনা নদী, নদীর তীরবর্তী খাস ভূমি এবং ফোরশোর ল্যান্ডভূক্ত ভূমি। স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত নদীর জমি ও সরকারি খাস জমি দখলমুক্ত করার দাবি জানায়।
এ বিষয়ে সোনারগাঁও সহকারী কমিশনার (ভূমি) বি এম রুহুল আমিন রিমন বলেন, হোলসিম সিমেন্ট এর বিরুদ্ধে নদী দখলের খবর পেয়েছি। তাদেরকে চূড়ান্ত নোটিশ দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরি আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে অবৈধভাবে দখলকৃত নদী উচ্ছেদ অভিযানে যাবো।
এ ব্যাপারে সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার সরকার বলেন, আমি থাকা কালীন কাউকে নদী দখল করতে দিবো না। দখলকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিবো।



 

Show all comments
  • Nannu chowhan ৫ মার্চ, ২০১৯, ৯:১৪ এএম says : 0
    Tar mane eai kotipokkho mota ongker taka hatia niasen...
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নদী

২৬ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ