Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পাকিস্তানের পতাকা কোথাও ওড়েনি

হোসেন মাহমুদ | প্রকাশের সময় : ১১ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

আজ ১১ মার্চ। পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেয়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে বাঙালি ছিল উদ্দীপ্ত। পাকিস্তানিদের ২৪ বছরের নির্মম শোষণের শিকার বাঙালির সামনে মুক্তি ছাড়া আর কোনো শপথ খোলা ছিল না। গণমানুষের নেতা বঙ্গবন্ধু তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে জাতিকে এগিয়ে নিয়ে চলেছিলেন।
১৯৭১ সালে আন্দোলনে আজকের দিনটিও ছিলো ঘটনাবহুল। দেশের সর্বত্র পালিত হয় অসহযোগ আন্দোলন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে এ দিন বাংলাদেশের ভেতরে ডাক, তার ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়। বিমান ছাড়া সড়ক, রেল ও নৌ চলাচল অব্যাহত থাকে। নগরীতে মিছিল ও সমাবেশ করে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
রাজধানীর বিপণি কেন্দ্র ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে। স্বাধীকার আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে এদিনও প্রধান বিচারপতির বাসভবনসহ সকল অফিস এবং বাড়িতে-গাড়িতে কালো পতাকা উত্তোলিত থাকে। এদিন স্বাধীনতার আন্দোলনে এক নতুন ঘটনা ঘটে। নারায়ণগঞ্জের প্রেক্ষাগৃহগুলো ছায়াছবি প্রদর্শনের আগে পাকিস্তানের জাতীয় সঙ্গীতের পরিবর্তে ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ গানটি পরিবেশন করে। এদিন সেনানিবাস ছাড়া এ ভ‚খন্ডের কোথাও পাকিস্তানের পতাকা ওড়েনি।
এদিকে এদিন বরিশালের কারাগার থেকে পালিয়ে যায় ২৪ জন কয়েদি। এ সময় কয়েদি ও কারারক্ষীদের মধ্যে সংঘর্ষে মৃত্যুবরণ করে ২ জন কয়েদি। আহত হয় ২০ কয়েদি। একই দিন কুমিল্লা কারাগার ভেঙ্গে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করে কয়েদিরা। তবে শেষ পর্যন্ত সফল হয়নি। কারারক্ষীদের গুলীতে ৫ কয়েদি মারা যায়। সংঘর্ষে আহত হয় প্রায় শতাধিক পুলিশ ও কয়েদি।
এ দিন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ আরও ১৪টি নির্দেশের পাশাপাশি বলেন, এ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর জারিকৃত নির্দেশগুলোকে বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে জারি করা হয়েছে বলে গণ্য করতে হবে। এদিন সিএসপি ও ইপিসিএস সমিতির পদস্থ বাঙালি সরকারি কর্মচারীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে অসহযোগ আন্দোলনের জন্য আওয়ামী লীগের তহবিলে এক দিনের বেতন প্রদান করেন এবং আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানান।
স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ পৃথক দু’টি বিবৃতি দেয়। এতে বলা হয়, গত ১০ মার্চ ভোরে চট্টগ্রাম বন্দরের ১৭ নম্বর জেটিতে একটি অস্ত্রবাহী জাহাজে অস্ত্র আনা হয়েছে। এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক করে দেয়া হয়। পরিষদের চার নেতা এক বিবৃতিতে সামরিক সরকার প্রদত্ত যাবতীয় খেতাব, উপাধি বর্জনের আহ্বান জানান। এদিন মওলানা ভাসানী টাঙ্গাইলে এক জনসভায় সব রাজনৈতিক পক্ষকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘সাত কোটি বাঙালির নেতা শেখ মুজিবের নির্দেশ পালন করুন।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্বাধীনতা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ